ভিন্ন স্বাদের খবর

এবার ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই

এবার ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই

আমাদের জীবনে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি ব্যাডমিন্টনের মতো অতি পরিচিত কিছু খেলা আছে। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী খেলা জমে উঠেছে বগুড়ার  মেলায়। বগুড়া থিয়েটারের আয়োজনে শহরের পৌর পার্ক চত্বরে অনুষ্ঠিত মেলায় দূর-দূরান্ত থেকে শিশু-কিশোর মানুষ আসছে মূলত মেলায় বিভিন্ন লোকজ খেলা দেখবার জন্য। মঙ্গলবার বগুড়া ছাড়াও জয়পুরহাট, নওগাঁ থেকে পাতা খেলা দেখবার জন্য মেলা মাঠে ভিড় করে অসংখ্য মানুষ।

পাতা খেলায় খেলোয়াড়েরা মূলত মন্ত্র বলে পাতাকে বন্দী করে রাখবার চেষ্টা কর, পাতাও মন্ত্র উচ্চারণ করে সেসকল মন্ত্রকে অকার্যকর করে দেয়। এভাবেই চলতে থাকে টানাটানি। পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকে পাতা দর্শক ক্ষণে ক্ষণে তালি দিয়ে মুখরিত করে রেখেছিল বগুড়া থিয়েটারের মেলা প্রাঙ্গণ। আজ কিছুটা বৃষ্টিতে প্রকৃতিতে এসেছে শীতলতা ফলে মানুষ অনেকটা স্বস্তিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।এ ছাড়া মেলামঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় মোরগ লড়াই। এটিও বগুড়া থিয়েটারের বৈশাখী মেলার একটি অপরিহার্য লোকজ খেলা।

রাজা, বাদশা, বাহাদুর নামের মোরগগুলি একে-অপরের সাথে লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকে। কেউ কাউকে ছাড় দেয়না আবার কেউ কারো কাছে হার মানতে চায় না।নিজেদের শৌর্য প্রকাশ করে তারা লড়াইয়ের। শিশুরা মোরগ লড়াই দেখতে থাকে বিস্ফোরিত নয়নে। এ যেনো তাদের চোখের সামনে মোবাইলে দেখা ডাব্লিউ ডাব্লিউ ই এর লড়াই।একসময় গ্রামবাংলার এই লোকজ খেলাগুলি ভীষণভাবে প্রচলিত ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে মেলা যেমন হারিয়ে গেছে, তেমনি হারিয়ে গেছে এই লোকজ খেলাগুলো।

বগুড়া থিয়েটারের বৈশাখী মেলা খেলাধুলা কমিটির আহ্বায়ক বগুড়া থিয়েটারের নাট্যজন জাকিউল ইসলাম সবুজ জানান, তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত বগুড়া থিয়েটারের মেলার খেলাধুলার দায়িত্ব পালন করছেন।তিনি জানান একসময় মেলা অনেক বড় আকারে হতো, বর্তমানে নানা কারণে সেটি কিছুটা সীমিত আকারে হয়। কিন্তু বগুড়া থিয়েটার তার ঐতিহ্যকে এখনো ধারণ করে চলেছে ফলে এসকল লোকজ খেলা আয়োজন করা থেকে কখনও বিরত হয়নি এবং মানুষও কৌতূহলের সাথে এইসব খেলা দেখার জন্য প্রতিদিন মেলামঞ্চে এসে ভিড় করে।

যতদিন মানুষ চাইবে ততদিন মেলা চলবে এবং এই সকল লোকজ খেলাও চলতে থাকবে। অনেক মানুষের জীবিকাও জড়িত রয়েছে মেলার সাথে। খেলাধুলার পর মেলামঞ্চে উচ্চারণ একাডেমি ও সপ্তসুরের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।তৃতীয় দিনের সর্বশেষ পরিবেশনা ছিল কলেজ থিয়েটারের উপস্থাপনা। ফিউশন বাউল এর মাধ্যমে মানুষকে আরো একবার মুগ্ধ করে। ফিউশান বাউলে জুলফিকার হোসেন সোহাগ, অলক পাল, নজরুল ইসলামসহ কলেজ থিয়েটারের নবীন সদস্যরা লালন শাহ, হাসন রাজার গান করেন।