19 February 2024 , 3:10:34 প্রিন্ট সংস্করণ
কক্সবাজারে টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের ওপার থেকে আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে আতঙ্কিত বাংলাদেশি জেলেরা নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছেন। রাতভর শান্ত থাকলেরও সোমবার সকাল থেকে ফের গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে বলে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম জানান।
মিয়ানমারের মংডু শহরের আশপাশের এলাকায় দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের জেরে চলা গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার মানুষ। শব্দের তীব্রতা আগের চেয়ে কম হলেও আতঙ্কে নাফ নদীতে জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ থাকার পাশাপাশি স্থানীয়দের বহনকারী নৌযান চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে বলে জানান, ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম।
দেশটিতে সংঘাত অব্যাহত থাকায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছেন জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা। ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় থেকে থেমে থেমে বন্দুক ও মর্টার শেল ছাড়াও ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। তবে রোববার থেকে শব্দের তীব্রতা কমে যায়। গত একদিন ঘণ্টা দু’য়েক পর পর ১/২টি করে গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়।
তবে রাতে গোলাগুলির কোনো শব্দ ছিল না বলে দাবি ওই ইউপি সদস্যের।মিয়ানমার থেকে আসা বিকট শব্দে কাঁপল টেকনাফ সীমান্ত সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে থেমে থেমে আবারও গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন জানিয়ে আব্দুস সালাম বলেন, “সকাল থেকে আধা ঘণ্টা পর পর ১/২টি গুলির শব্দ ভেসে আসছে।
আব্দুস সালাম আরও জানান, তারা নানা মাধ্যমে খবর পাচ্ছেন, মিয়ানমার অভ্যন্তরে মংডু শহরের আশপাশের মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাপাড়া, মাঙ্গালা, নলবন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকায় দেশটির সরকারি বাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র লড়াই চলেছে। ওই এলাকাগুলো রোহিঙ্গা অধ্যুষিত।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম জানান, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পর্যন্ত সেন্টমার্টিন সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি ও ভারী গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটলেও শনিবার থেকে আর কোনো শব্দ শোনা যায়নি। এতে দ্বীপবাসীর মনে আতঙ্ক কাটলেও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ইনানী-সেন্টমার্টিন নৌরুটে দুই পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে।
টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী জানান, সংঘাতের বিষয়টি মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ। তবে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে এখানে (বাংলাদেশে) যেন কোনো সমস্যা না হয়, এ জন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড টহল বাড়িয়েছে। এ নিয়ে সীমান্তের বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।মিয়ানমার নাগরিকদের অনুপ্রবেশসহ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান ইউএনও আদনান চৌধুরী।
এদিকে, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং সীমান্ত এলাকায় শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত থাকায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, তমব্রু ও বাঁইশফাড়ি এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।