সারা দেশ

নদী নাই হেটে পার হলেও দিতে হয় টোল

নদী নাই হেটে পার হলেও দিতে হয় টোল

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের বিনোদবকুটিয়া গ্রামে বসত ঘরে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। ক্ষতিগ্রস্থ ওই বাড়ির মালিক বিনোদবকুটিয়ার মৃত. অক্ষয় কুমার মন্ডলের ছেলে আনন্দ কুমার মন্ডল।  এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আনন্দ কুমার মন্ডল সাভারের হামীম গ্রুপে এজিএম পদে চাকরি করেন। চাকরির সুবাদে তিনি সপরিবারে সাভার থাকেন। ঈদের ছুটি কাটাতে গ্রামের বাড়ি আসেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বসত ঘরের দরজা ও জানালা বন্ধ করে কেচিগেট তালা দিয়ে সপরিবারে শশুর বাড়ি চলে যায়। যাবার সময় ঘর ও গেটের চাবি বোনের কাছে রেখে দেয়। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে দশটার দিকে পথচারী জহিরুল ও সুজিত বাড়ি ফিরার সময় ঘরের ভিতর আগুন জলতে দেখে। তারা দুজন আগুন আগুন বলে চিৎকার করে পাশের বাড়ি আনন্দ কুমার মন্ডলের বোন ও বোন জামাই কে ডেকে তুলে। এসময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে গেটের তালা খুলে লোকজনের সহতায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।

জানালা দিয়ে ঘরের ভিতর কে বা কাহারা যেন আগুন দিয়েছে রাতে এ সংবাদ পেয়ে আনন্দ কুমার মন্ডল পর দিন সকালে বাড়ি চলে আসে। এ বিষয়ে শনিবার বিকালে আনন্দ কুমার মন্ডল বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নাগরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।আনন্দ কুমার মন্ডল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে প্রতিবেশী সাধন কুমার মন্ডল ও ভূষন কুমার মন্ডল এর সাথে বিরুদ চলে আসছে। একটি জমির খারিজ নিয়ে তাদের সাথে বিরুদ্ধ চলছে আমার। সাধন ও ভূষন জোর করে জমি দখল করতে চায়।পায়ে হেঁটে পার হলেও দিতে হচ্ছে টোলের টাকা। কালের বিবর্তে হারিয়ে গেছে খরস্রোত কপোতাক্ষ নদ। এক সময় খেয়া ঘাট ছিল। সেখানে নৌকায় পার হতে হতো।

দেয়া হতো ইজারা। অথচ এখন খেয়া ছাড়া মানুষ পায়ে হেঁটে পার হচ্ছে সেই নদী। আর সেই নদী পার হওয়ার সময় মানুষকে দিতে হয় টোলের টাকা। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে আমরা টোল আদায় বন্ধ করে দিয়েছি কিন্তু বাস্তবে টোল আদায় কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের চাঁদখালী বাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদে একসময় খেয়া ঘাট ছিল। তখন সেটা ইজারা প্রদান করা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে ইজারা দেওয়া বন্ধ থাকে। কিন্তু ইজারাদার পুর্বের ন্যায় কোন প্রকার ইজারা ছাড়াই অবৈধভাবে টোল আদায়ের করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে টোল আদায়ের দৃশ্য দেখা যায়। এ বিষয়ে টোল আদায়কারি কোন কাগজ পত্র দেখাতে পরেনি। স্হানীয় এলাকাবাসি টোল আদায় বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ করেছেন।জানা গেছে, কপোতাক্ষ নদ খননের জন্য নদে আড়াআড়ি বাঁধ দেয়া হয়। ঐ বাঁধ দিয়ে আশাশুনি ও পাইকগাছা উপজেলার দুটি হাট-বাজার সহ পর্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন চলাফেরা করে। বর্তমানে কপোতাক্ষ নদ খননের কারণে ওই নদের খেয়া ঘাটটি ইজারা বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবুও ঐ ঘাটে চলছে টোল আদায়।

এ বিষয়ে টোল আদায়কারি চাঁদখালী ইউনিয়নের কালিদাশপুর গ্রামের মিরাজ সরদারের ছেলে মইনুর সরদার বলেন, আমরা আগে টোল আদায় করতাম সে অনুযায়ী টোল আদায় করছি। আর টোল আদায়ের বিষয়টি আমরা চাঁদখালী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কামরুল হাসান কে জানিয়েছি। যদি প্রশাসন বন্ধ করে দেয় তাহলে আমরা আদায় করবো না। এ বিষয়ে চাঁদখালী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, ওই টোল আদায়ের বিষয় আমি কিছুই জানিনা।

এ বিষয়ে চাঁদখালী ইউপি’র প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সরদার জানান, বিষয়টি আমরা জানার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানাই। বর্তমানে ওই ঘাটে টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন জানান, বিষয়টি আমি জানা মাত্রই টোল আদায় বন্ধ করে দিয়েছি। এর পর যদি কেউ টোল আদায় করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।