বিনোদন

জয়া আহসান কান্নায় ভেঙে পড়লেন

জয়া আহসান কান্নায় ভেঙে পড়লেন

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুই পর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেতা আহমেদ রেজা রুবেল। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে অচেতন হয়ে পড়ে যান এই অভিনেতা। সেখান থেকে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা অভিনেতাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে রুবেলের মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান।

এই অভিনেতার অভিনীত সবশেষ সিনেমা ‘পেয়ারার সুবাস’-এ একসঙ্গে কাজ করেছিলেন দু’জনে। দুদিন পরেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে নুরুল আলম আতিকের নির্মিত নতুন এই ছবি।সিনেমার মুক্তিকে কেন্দ্র করেই আজ সন্ধ্যায় ‘পেয়ারার সুবাস’-এর বিশেষ প্রদর্শনী ছিল বসুন্ধরাতে। ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ছিলেন অভিনেতা আহমেদ রুবেল। এই প্রদর্শনীতেই যোগ দিতে উত্তরা থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে এসেছিলেন তিনি।

কিন্তু নিজের শেষ সিনেমা আর দেখে যাওয়ার সুযোগ হয়নি এই অভিনেতার। তার আগেই এলো মৃত্যুর খবর।সহকর্মীকে হারিয়ে প্রিমিয়ার শো’তে কান্নায় ভেঙে পড়েন জয়া। কোনোভাবেই রুবেলের মৃত্যু যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। কারণ আজ (বুধবার) একসঙ্গে বসেই এই সিনেমা উপভোগ করার কথা ছিল তাদের।জয়া বলেন, ‘এই মুহূর্তে কী বলবো! বলার কিছুই নেই। বিশ্বাস হচ্ছে না, মনে হচ্ছে ওনার কাছে ছুটে যাই।

স্ক্রিনে আবার তাকে দেখি। পরপর আমার দুটি কাজ ‘অলাতচক্র’ এবং ‘পেয়ারার সুবাস’-এ সহ-অভিনেতা তিনি। এই মুহূর্তে কিছু বলার মতো স্টেজে আমি নেই, কেউ নেই।রুবেলের মৃত্যু কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছেন জয়া। অভিনেত্রীর ভাষায়, ‘আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না রুবেল ভাই নেই। আমার মনে হয়, রুবেল ভাই থাকলে নিশ্চয়ই চাইতেন না আমাদের শো বাতিল হোক। মানুষ তার কাজের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে। রুবেল ভাইও আমাদের মধ্যে আছেন। শো চলবে।

এটা আমাদের শিল্পীদের জীবনের একটি ভয়াবহ অংশ।এসময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাবার মৃত্যুর দিনের কথা স্মরণ করে অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমার বাবার যেদিন মৃত্যু হলো সেদিন আমি কলকাতায় ছিলাম। আমার প্রথম বাংলা সিনেমার শুটিং। শুটিং করছিলাম, তখন বাবার মৃত্যুর খবর পাই। শেষ দিকের শুটিং, মাত্র দুটি দৃশ্য ধারণ বাকি ছিল। আমি হাউমাউ করে কাঁদছিলাম আর পরিচালককে জিজ্ঞেস করছিলাম আমি কী করব? আমি কি শুটিংটা শেষ করে যাব? আমাদের শিল্পীদের জীবনটাই এমন।

১৯৬৮ সালের ৩ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের রাজারামপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আহমেদ রুবেল। তার পিতার নাম আয়েশ উদ্দিন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ইসলামপুরে নানার বাড়ি। পিতা–মাতার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে হলেও ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছেন ঢাকায়।ঢাকার অন্যতম নাটকের দল ‘ঢাকা থিয়েটার’ থেকে অভিনয়ের হাতেখড়ি আহমেদ রুবেলের। তার অভিনীত প্রথম টিভি নাটক ‘স্বপ্নযাত্রা’। এটি নির্মাণ করেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম।

এরপর হুমায়ূন আহমেদের ঈদনাটক ‘পোকা’–তে অভিনয় করেন। এতে ‘ঘোড়া মজিদ’ চরিত্রটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য টিভি নাটক হলো— ‘অতিথি’, ‘নীল তোয়ালে’, ‘বিশেষ ঘোষণা’, ‘প্রতিদান’, ‘নবাব গুন্ডা’, ‘এফএনএফ’ প্রভৃতি।১৯৯৩ সালে ‘আখেরী হামলা’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় পা রাখেন আহমেদ রুবেল। এরপর ‘চন্দ্রকথা’, ‘ব্যাচেলর’, ‘গেরিলা’, ‘দ্য লাস্ট ঠাকুর’, ‘শ্যামল ছায়া’ প্রভৃতি সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।