26 May 2024 , 1:10:24 প্রিন্ট সংস্করণ
ঝিনাইদহ শহরের ৬নং ওয়ার্ডের টাওয়ার পাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের কন্যা স্থানীয় কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী সূচনা জান্নাত। সে অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাকে স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ২৬ এপ্রিল ডাক্তার মোঃ মোজাম্মেল হক (সহকারি অধ্যাপক ইউরোলজি) সূচনার অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করেন।
এ সময় এ্যানাস্থেসিয়ার দায়িত্ব পালন করেন ডা. মুন্সী মোঃ রেজা সেকেন্দার। অপারেশনের পর সূচনার জ্ঞান না ফেরায় ঘটনার পরদিন ২৭ এপ্রিল ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।প্রথমে ধানমন্ডির ইবনে-সিনাহ্ হাসপাতালে ১২ দিন এবং নিউরোসাইন্স হাসপাতালে ডাক্তার প্রফেসর দিন-মোহাম্মদ এর তত্ত্বাবধানে আইসিইউতে ১৭ দিন ভর্তি থাকার পর জ্ঞান না থাকা অবস্থায় সে ইন্তেকাল করেন।
ওই দিনই সূচনার মৃতদেহ ঝিনাইদহ শহরের বাড়িতে পৌঁছালে পরিবার আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি বন্ধু-বান্ধব কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তাদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। তার দীর্ঘদিনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাকে দুপুর ১টার দিকে নিয়ে যাওয়া হলে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
মেধাবী এই শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু হওয়ায় তার পরিবার পরিজন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই এটাকে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু বলে দাবি করেছেন। তারা সূচনার অকাল মৃত্যুর বিচার দাবি করেন। বাদ যোহর স্থানীয় উজির আলী ঈদগাহ ময়দানে জানাযা শেষে পৌর গোরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
সূচনা জান্নাতের মৃত্যুর ঘটনায় ডা. মুন্সী মোঃ রেজা সেকেন্দার বলেন, সকল পরীক্ষা সম্পন্ন করে রোগী অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে রোগীর জ্ঞান না ফেরায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। অপারেশন থিয়েটারে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আগের থেকে রোগী মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটা কমেছে।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাক্তার সুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, বিষয়টি জেনেছি, সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের সাথে কথাও হয়েছে, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ঝিনাইদহ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসুর সুষেন্দু কুমার ভৌমিক জানান, আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, এ ঘটনায় সূচনা জান্নাতের পিতা জাহাঙ্গীর আলম থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।জেলা প্রশাসক এস.এম রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি সমস্ত বিষয় অবগত হয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।