27 November 2024 , 2:54:19 প্রিন্ট সংস্করণ
কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশন যাত্রী ভোগান্তির অন্ত নেই। বিশেষ করে আন্তঃনগর ট্রেনগুলির বগির সংখ্যা বেশি থাকায় প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্তত ১০০ গজ সামনে ও পেছনে যে সমস্ত বগিগুলো রয়েছে প্ল্যাটফর্ম না থাকায় নিচ থেকে ট্রেনের উচ্চতা থেকে যায় অনেক বেশি, যেখানে নামা-উঠা আরও কষ্টকর। তার ওপর সঙ্গে কিছু মালামাল থাকলে দূর্ভোগ বেড়ে যায় দ্বিগুণ। ফলে যাত্রীদের জন্য হয়ে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তার উপর রয়েছে পকেট মারের অস্বাভাবিক উৎপাত। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন নারী, শিশু আর বয়স্ক ব্যক্তিরা। শুধু যাত্রী ওঠা-নামার অসুবিধাই নয়, যাত্রীদের জন্য বিশ্রামাগার থাকলেও তা ব্যবহারের উপযোগী নয়, নেই পর্যাপ্ত শৌচাগারও, যা আছে তাও ব্যবহারের অনুপোযোগী।
যাত্রীদের এমন অভিযোগও আছে, প্ল্যাটফর্ম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই নীচু। এছাড়াও স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সহজে দেখা মেলে না। ইচ্ছামতো অফিস করেন কর্মকর্তারা। যেন দেখার কেউ নেই! রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত বছর পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরুর আগে এই রুটে আপ এবং ডাউনে দুটি লোকাল এবং দুটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করত। তাই এই রুটে যাত্রীদের চাপ তেমন একটা ছিল না। কিন্তু পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরুর পর থেকে গুরুত্ব বেড়েছে এই রুটের। খুলনা থেকে কুষ্টিয়া হয়ে ঢাকা এবং রাজশাহী থেকে কুষ্টিয়া হয়ে ঢাকায় ট্রেনে যেতে সময় এবং খরচ দুটোই কম লাগে। তাই এই রুটে যাত্রী বেড়েছে কয়েকগুণ। তবে যাত্রী এবং ট্রেনের সংখ্যা বাড়লেও কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনের সেবার মান বাড়েনি একটুও।
তাই জীবন-জীবিকার তাগিদে যাদের এই স্টেশনটি ব্যবহার করতে হয় তাদের পোহাতে হয় নানা ভোগান্তি। স্টেশনে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি ট্রেনের জন্যই অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ রয়েছে। কোনো ট্রেন থামার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের হুড়োহুড়ি লেগে যায়। তার ওপরে থামার সময় মাত্র চার মিনিট। সব মিলিয়ে এই স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতে এবং নামতে রীতিমতো যাত্রীদের যুদ্ধ করতে হয়। তরুণরা এই যুদ্ধে জিততে পারলেও হাল ছেড়ে দিতে হয় নারী, শিশু ও বয়স্কদের। বর্তমানে এই স্টেশন দিয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস, নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস, মধুমতী এক্সপ্রেস চলাচল করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টেশনে দায়িত্বরত জিআরপি পুলিশের এক সদস্য বলেন, ‘এই রুটে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি ট্রেন চালুর পর থেকে স্টেশনটির চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। যাত্রীও বাড়ছে প্রতিদিন। কিন্তু স্টেশনটি আছে সেই আগের মান্ধাতার মতোই। ট্রেন এসে থামলে সামনের তিনটি এবং পেছনের তিন-চারটি বগি প্ল্যাটফর্মের বাইরে থাকে। উঁচু ট্রেনে ওঠা-নামা করতে যাত্রীদের ঘাম ঝরাতে হয়। মাঝেমধ্যে অনেক যাত্রী পা ফসকে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। এই স্টেশনটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন এমনটি মনে করেন ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল।