22 February 2024 , 2:16:30 প্রিন্ট সংস্করণ
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে গত রোববারও রাতভর গোলাগুলি হয়েছে। ফলে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। গতকাল সকালেও ঘণ্টাখানেক পরপরই শোনা গেছে ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কারণে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়দের চলাচল বন্ধ রেখেছে বিজিবি।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, গতকালও সীমান্তের ওপারে বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। নতুন করে যাতে কেউ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য তারা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছেন।স্থানীয়রা জানান, রোববার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত উপজেলার হ্নীলা, হোয়াইক্যং ও শাহপরীর দ্বীপের সীমান্তে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে।
জেটিঘাটের টোল আদায়কারী ছিদ্দিক আহমদ বলেন, সীমান্তে গোলাগুলি চলতে থাকায় নিরাপত্তার কারণে এই জেটিতে দু’দিন ধরে লোকজনের যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। কিছুদিন আগে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ করা হয়। ওপারের গোলাগুলিতে এপারে পর্যটন ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
মিয়ানমারের একটি সূত্র জানায়, রাখাইনের মংডু শহরের বাঘগোনা, হাদিবিল, নলবনিয়া নয়াপাড়া গ্রামে হেলিকপ্টার থেকে আরাকান আর্মির ওপর গোলাবর্ষণ করছে দেশটির জান্তা বাহিনী। এতে অন্তত ৪ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শিকদারপাড়া ও মন্নিপাড়ায় আশ্রয় নিয়েছে। তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।
টেকনাফের জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা হাসমত উল্লাহ বলেন, মংডু শহরের এতিল্লাপাড়ায় বসবাসরত তার চাচাতো ভাই আব্দুল্লাহর সঙ্গে কথা হয়েছে। সে জানিয়েছে, জান্তা সরকার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলছে।এর আগে গত শনিবার গুলিবিদ্ধ হয়ে এক নারীসহ ৫ রোহিঙ্গা একটি ডিঙ্গি নৌকায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে আসে।
তবে ঢুকতে না দিয়ে বিজিবি তাদের মিয়ানমারের দিকে ফেরত পাঠায়।এদিকে গত ১ ফেব্রুয়ারি নাফ নদে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক জেলের লাশ ১৮ দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার রাতে উখিয়ার পালংখালীর রহমতের বিল সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি স্থানীয় আনজুমানপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন।
মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে অস্ত্রসহ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী ১১ রোহিঙ্গাকে রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। একই সঙ্গে অপর ১১ রোহিঙ্গাকে গতকাল রিমান্ডে নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাছির উদ্দিন মজুমদার। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২২ রোহিঙ্গাকে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জ্ঞান তঞ্চঙ্গা।