19 August 2024 , 4:28:46 প্রিন্ট সংস্করণ
নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সাতক্ষীরা দেবহাটার আসিফ হাসানের কলেজ শেষ করে ১৮ জুলাই গ্রামের বাড়িতে মায়ের কাছে আসার কথা ছিল। এর মধ্যেই ঢাকাতে কোটা সংস্কার আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন আসিফ। মাকে দেওয়া কথা অনুযায়ী তিনি ১৮ জুলাই বাড়ি ফেরেন ঠিকই, তবে লাশ হয়ে। পরদিন শুক্রবার ভোরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।
‘আমার আব্বাকে কোথায় গেলে পাব। মারা যাওয়ার আগে আমাকে একটিবার মা বলে ডাকতে পারল না। কত কষ্ট পেয়ে আমার বুকের ধন এভাবে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নিল। একটিবার আমাকে মা বলে ডাক আসিফ বাবা। আমার আব্বা ছোট থেকে শান্তশিষ্ট। আব্বাকে নিষেধ করলাম। বললাম, ও আব্বা, আব্বা তুমি যেন এসব কাজে যেও না। আমার আব্বা বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি আসতে চেয়েছিল।
কিন্তু কারা যেন তাকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে যায় মিছিলে। তাকে বাড়ি আসতে দেয়নি। তবে আব্বা ঠিকই বাড়ি ফিরল ঝাঁঝরা বুক নিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায়। এখন আব্বা ওই গাছের ছায়ায় শুয়ে আছে। কথাগুলো বলছিলেন কোটা আন্দোলনের সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে নিহত আসিফের শোকে বিহ্বল মা শিরিন বেগম। আসিফ রাজধানীর উত্তরায় কোটা আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে গুলিতে ১৮ জুলাই নিহত হন।
তিনি নর্দান ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র। আসিফের মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসী তার বাড়িতে ভিড় করেন। শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো এলাকায়। তিন মেয়ের পর আসিফ ও রাকিব নামে যমজ দুই ছেলে শিরিন বেগমের। যমজ ভাই রাকিবকে ফেলে চলে গেলেন আসিফ। রাকিব সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে অনার্স পড়ছেন। ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন, আর বিলাপ করে কাঁদছিলেন।