খেলাধুলা

নিউজিল্যান্ডের তাণ্ডবে ধরাশায়ী পাকিস্তান

শুরুতেই উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে দারুণ এক ফিফটিতে দলকে পথে রাখলেন কেইন উইলিয়ামসন। সঙ্গে ড্যারিল মিচেলের বিধ্বংসী ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়ল নিউজিল্যান্ড। পরে টিম সাউদির দুর্দান্ত বোলিংয়ে লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারল না পাকিস্তান। অকল্যান্ডে শুক্রবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৪৬ রানে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। ২২৬ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে তারা গুটিয়ে দিয়েছে ১৮০ রানে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে কেইন উইলিয়ামসনের দল।

কিউইদের দুইশ ছাড়ানো পুঁজি গড়ার পথে ৯ চারে ৫৭ রান করেন উইলিয়ামসন। চারটি করে ছক্কা-চারে ২৭ বলে ৬১ রানের খুনে ইনিংস খেলে মিচেল জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। দলের জয়ে অনেক বড় অবদান রাখেন সাউদিও। স্রেফ ২৫ রান দিয়ে অভিজ্ঞ এই পেসার নেন ৪ উইকেট। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম বোলার হিসেবে ১৫০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি। তার উইকেট এখন ১৫১টি।

ইডেন পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় বলেই ডেভন কনওয়েকে হারায় নিউ জিল্যান্ড। তাতে অবশ্য একটুও ভড়কে যাননি ফিন অ্যালেন। তৃতীয় ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির ওপর ঝড় বইয়ে দেন তিনি, টানা মারেন দুই ছক্কা ও তিনটি চার।অভিষিক্ত আব্বাস আফ্রিদির বলে থামে অ্যালেনের তাণ্ডব। তিনটি করে ছক্কা-চারে ১৫ বলে ৩৪ রান করা ওপেনারের বিদায়ে ভাঙে উইলিয়ামসনের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটি। পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৫৬ রান করে স্বাগতিকরা।

প্রথম ৬ বলে ৭ রান করা মিচেল অভিষিক্ত উসামা মিরকে টানা দুই ছক্কা মেরে ডানা মেলেন। পরের ওভারে আমের জামালকে তিনি মারেন একটি করে ছক্কা-চার, উইলিয়ামসন মারেন দুই চার। দুই দফায় জীবন পাওয়া কিউই অধিনায়ক ফিফটি স্পর্শ করেন ৪০ বলে। ২০২২ সালের নভেম্বরের পর দেশের হয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমেই পঞ্চাশের স্বাদ পেলেন তিনি।ফিফটি ছোঁয়া ওভারেই আব্বাসের বলে থামে উইলিয়ামসনের ইনিংস। শেষ হয় মিচেলের সঙ্গে তার ৪০ বলে ৭৮ রানের যুগল।

ঝড়ের আভাস দিয়ে ফিরে যান গ্লেন ফিলিপস। খুনে ব্যাটিংয়ে ২২ বলে ফিফটিতে পা রাখেন মিচেল।মিচেলকে যখন থামান আফ্রিদি, ততক্ষণে দুইশোর কাছে পৌঁছে গেছে নিউজিল্যান্ডের রান। মার্ক চ্যাপম্যানের ১১ বলে ২৬ ও বাকিদের টুকটাক অবদানে সোয়া দুইশোও পেরিয়ে যায় কিউইরা। শেষ ৫ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ৫৮ রান তোলে দলটি।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারে চার ও ছক্কা মেরে শুরু করেন সাইম আইয়ুব। পরপর দুই বলে তার ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচ ফেলে নিউ জিল্যান্ড। বেঁচে গিয়ে ম্যাট হেনরিকে দুই ছক্কা ও এক চার মারেন সাইম।নন-স্ট্রাইক প্রান্তে বোলার অ্যাডাম মিল্নের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ফেরা এই তরুণ করেন ৮ বলে ২৭ রান। ভালো কিছুর আভাস দিয়ে বিদায় নেন দুটি করেন ছক্কা-চারে ২৫ রান করা রিজওয়ান। পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৬৪ রান তোলে তারা।

ফাখার জামান, ইফতিখার আহমেদ, আজম খানরা পারেননি টিকতে। একপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে ৩৩ বলে ফিফটি করেন বাবর আজম। তাকে থামিয়ে দলকে স্বস্তি এনে দেন বেন সিয়ার্স। এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেনি সফরকারীরা। ৭ রানে শেষ চার উইকেট হারায় তারা।

আগামী রোববার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ২২৬/৮ (অ্যালেন ৩৪, কনওয়ে ০, উইলিয়ামসন ৫৭, মিচেল ৬১, ফিলিপস ১৯, চ্যাপম্যান ২৬, মিল্ন ১০, সোধি ০, হেনরি ০*, সাউদি ৬*; আফ্রিদি ৪-০-৪৬-৩, রউফ ৪-০-৩৪-২, জামাল ৪-০-৫৫-০, আব্বাস ৪-০-৩৪-৩, উসামা ৪-০-৫১-০)

পাকিস্তান: ১৮ ওভারে ১৮০ (সাইম ২৭, রিজওয়ান ২৫, বাবর ৫৭, ফাখার ১৫, ইফতিখার ২৪, আজম ১০, আফ্রিদি ০, জামাল ১৪*, উসামা ১, আব্বাস ১, রউফ ০; সাউদি ৪-০-২৫-৪, হেনরি ৩-০-২৯-০, মিল্ন ৪-০-৫০-২, সোধি ৩-০-৩৩-১, সিয়ার্স ৪-০-৪২-২)

%d bloggers like this: