বিনোদন

ত্রিশ বসন্তে শাবনূর চুয়াল্লিশে নূপুর

ঢাকাই সিনেমার একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর এখন পর্দায় অনুপস্থিত। আজ থেকে তিন দশক আগে প্রয়াত নির্মাতা এহতেশামের ‘চাদঁনী রাতে’ সিনেমার মধ্য দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক ঘটে তার। প্রথম সিনেমাতে খুব একটা সাফল্য না পেলেও পরবর্তীতে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের সঙ্গে জুটি বেঁধে সফল হন। একসঙ্গে জুটি বেঁধে ১৪টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তারা, যার প্রত্যেকটিই ব্যবসাসফল।

ত্রিশ বছর আগে আজকের এই দিনেই (১৫ অক্টোবর) ঢালিউডে অভিষেক ঘটে শাবনূরের। তার পুরো নাম কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর হলেও চলচ্চিত্র পরিচালক এহতেশাম তার নাম বদলে দেন শাবনূর। সেই নামেরও আজ ত্রিশ বসন্ত, অন্যদিকে নূপুরের চুয়াল্লিশ।দিনটিকে ভুলেননি নায়িকা। পুরনো দিনের কথা স্মরণ করে আজ সোশ্যালে স্মৃতিচারণ করেন শাবনূর। তিনি লেখেন, ‘সবার ভালোবাসায় চলচ্চিত্র জীবনের পথচলায় তিন দশক পার করে দিলাম, আলহামদুলিল্লাহ।

স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রয়াত এহতেশাম দাদুর ‘চাঁদনী রাতে’ ছবির মাধ্যমে ১৯৯৩ সালের ১৫ই অক্টোবর আমার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়েছিলো। প্রথম সিনেমায় আমার সহশিল্পী ছিলেন নায়ক সাব্বির। আমার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অনেক গুণী পরিচালকের ছবিতে কাজ করার সুযোগ হয়েছে।দর্শকের ভালোবাসার পাশাপাশি দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শাবনূর পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। এই নায়িকার ভাষ্য, ‘মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত “দুই নয়নের আলো” (২০০৬) ছবিটি আমাকে এনে দিয়েছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সম্মান।

তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে ১০ বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি। এ ছাড়া ৬ বার বাচসাস পুরস্কার লাভ করি।নিজের ব্যবসাসফল সিনেমার কথা স্মরণ করে শাবনূর বলেন, ‘প্রবল দর্শক চাহিদার জন্যে প্রযোজক-পরিচালকরা আমাকে নিয়ে ছবি নির্মাণে অত্যন্ত আগ্রহী হওয়ায় আমার পক্ষে ১৫৮টি ছবির বিশাল মাইল ফলক ছোঁয়া সম্ভব হয়েছে।

যেসব চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি তার মধ্যে ব্যবসা সফল ও দর্শক-সমালোচক জরিপে অন্যতম সেরা ছবিগুলো হলো- স্বপ্নের ঠিকানা, স্বপ্নের পৃথিবী, স্বপ্নের নায়ক, তোমাকে চাই, তুমি আমার, আনন্দ অশ্রু, প্রেম পিয়াসী, সুজন সখী, জীবন সংসার, মহামিলন, বিক্ষোভ, চাওয়া থেকে পাওয়া, বিচার হবে, দুই নয়নের আলো, নিরন্তর, মোল্লা বাড়ির বউ, বিয়ের ফুল, নারীর মন, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি, সুন্দরী বধূ, ফুল নেব না অশ্রু নেব, প্রেমের তাজমহল, পৃথিবী তোমার আমার, কাজের মেয়ে, বস্তির মেয়ে, মধুর মিলন, বুক ভরা ভালোবাসা, স্বপ্নের বাসর, ও প্রিয়া তুমি কোথায়, স্বপ্নের ভালোবাসা, তোমার জন্য পাগল, চার সতীনের ঘর, আমার স্বপ্ন তুমি, আমার প্রাণের স্বামী, ১ টাকার বউ, তুমি শুধু তুমি, কঠিন প্রেম, ঢাকাইয়া পোলা বরিশালের মাইয়া ও স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, প্রভৃতি। আসলে আমার অভিনীত প্রতিটা ছবিই আমার কাছে প্রিয়।’

প্রয়াত সালমান শাহর সাথে তার জুটি সব থেকে বেশি দর্শকপ্রিয় ছিল জানিয়ে নায়িকা বলেন, ‘সালমানের অকাল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মাত্র চার বছরে আমি ও সালমান সর্বাধিক ১৪টি দর্শক নন্দিত ও ব্যাবসা সফল ছবিতে জুটি বেধে কাজ করেছিলাম। আমার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে আরও যেসব সহশিল্পীদের অবদান অনেক বেশি রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন; প্রয়াত মান্না ভাই, ওমর সানী, বাপ্পারাজ, আমিন খান, অমিত হাসান, রিয়াজ আহমেদ, ফেরদৌস আহমেদ, শাকিল খান ও শাকিব খান প্রমূখ।

সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সবশেষে শাবনূর বলেন, ‘আল্লাহর রহমত ও সবার দোয়ায় চলচ্চিত্রে এখনো যথেষ্ট সম্মান নিয়েই বেঁচে আছি। আমার অভিনয় জীবনের দীর্ঘ ত্রিশ বছরের পথচলায় চলচ্চিত্রের সকল প্রযোজক, পরিচালক, সহশিল্পী, চিত্রনাট্যকার, নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী, ক্যামেরাম্যান ও ছবির সাথে জড়িত কলাকুশলীসহ সবার কাছে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ ও ঋণী। বিশেষ করে আমার ছবির দর্শক ও অগণিত ভক্তদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও সমর্থনে আমি আজকের শাবনূর। সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হবার পর থেকে সর্বক্ষণ উপলব্ধি করছি আমাকে নিয়ে তাদের ভালোবাসা আজও বদলায়নি, বরং বেড়েই চলেছে।

আমার প্রতি আপনাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা ভবিষ্যতেও আশাকরি অব্যাহত থাকবে। আমি সাংবাদিক ভাই-বোনদের প্রতিও বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার প্রতি আপনারা প্রায় সবাই যেভাবে সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে আমাকে এতদূর এগিয়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছেন তার জন্যে সবাইকে ধন্যবাদ। আজকের এই বিশেষ দিনে রইলো সবার প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা, সবার প্রতি অনেক শুভকামনা।

আরও খবর

Sponsered content