বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক অনন্য নাম আহমেদ শরীফ । যিনি খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করে হয়ে উঠেছিলেন দর্শকদের প্রিয় একজন শিল্পী। দুর্দান্ত সংলাপ প্রক্ষেপণ, অদ্বিতীয় উপস্থিতি এবং অভিনয়ে বৈচিত্র্য তাঁকে আলাদা করেছে অন্যদের থেকে।
জন্ম ও শৈশবঃ
১২ই আগস্ট ১৯৪৩ সালে, কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার ১ নং কয়া ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন । তিনি শৈশব থেকেই মেধাবী ছিলেন এবং সংস্কৃতি ও সাহিত্যের প্রতি ছিল তার গভীর আগ্রহ। পড়াশোনার পাশাপাশি নাট্যচর্চার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে তাঁর অভিনয় জীবনের বীজ।
চলচ্চিত্রে অভিষেকঃ
আহমেদ শরীফ বাংলাদেশ চলচ্চিত্রে এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী নাম। তার অভিনীত প্রথম ছবির নাম ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’। সুভাষ দত্ত পরিচালিত এ ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন আহমেদ শরীফ। তবে খলনায়ক হিসেবে ১৯৭৬ সালে তিনি প্রথম অভিনয় করেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর পরিচালনায় ‘বন্দুক’ ছবিতে। এ ছবিটি সুপার-ডুপার হিট হয়। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি আহমেদ শরীফ টেলিভিশনের জন্য কিছু নাটক-টেলিফিল্ম নির্মাণ করেন।
২০০১ সালে প্রথম নির্মাণ করেন টেলিফিল্ম ‘ক্ষণিক বসন্ত’। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য তিনি নির্মাণ করেন নাটক ‘ফুল ফুটে ফুল ঝরে’। দীর্ঘ আট বছর পর নাদের খানের প্রযোজনা ও রচনায় হাস্যরসাত্মক গল্পের এ নাটকের নাম ‘মাইরের ওপর ওষুধ নাই’। পারিবারিক জীবনে তার একটি মেয়ে আছে। আহমেদ শরীফ বর্তমানে উত্তরার চার নম্বর সেক্টরে থাকেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেন।
বাংলা সিনেমার ইতিহাসে খল চরিত্রকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছেন যাঁরা, তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন আহমেদ শরীফ। নব্বইয়ের দশকে প্রায় প্রতিটি সফল ছবিতেই তাকে খলনায়ক হিসেবে দেখা যেত।
রাজনৈতিক জীবনঃ
রাজনৈতিক জীবনে আহমেদ শরীফ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) এর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে নির্বাচন করার লক্ষ্যে তিনি তার এলাকা কুষ্টিয়ায় কাজও শুরু করেন। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই বিএনপি দলের সাথে জড়িত। তিনি জাসাস সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনঃ
বাংলা চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত খলনায়ক আহমেদ শরীফ শুধু অভিনয়ে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও একজন গুণী ও মার্জিত মানুষ হিসেবে পরিচিত। অভিনয়ের রূপালি পর্দার বাইরে তিনি একজন সফল পরিবারপ্রেমী মানুষ। তার স্ত্রীর নাম মেহরুন আহমেদ। এই দম্পতির একটি মাত্র কন্যা সন্তান যার নাম আফিয়া মুবেশ্বীরা।