12 June 2024 , 6:05:36 প্রিন্ট সংস্করণ
পরীক্ষা মানেই উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা! শুরু হতে যাচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা, স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষার্থীদের মনে অনেক ধরনের দুশ্চিন্তা তৈরি হতে পারে। যে কোনো পরীক্ষার আগে প্রথম কাজ হচ্ছে পরীক্ষা সম্পর্কে তার মনের ভেতর থেকে পরীক্ষার ভীতি দূর করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মানসিক চাপ নিয়ে কোনো মানুষ পরীক্ষায় ভালো করতে পারে না।
তাই যতটা সম্ভব মানসিকভাবে চাপমুক্ত থেকে পরীক্ষাগুলো দুশ্চিন্তামুক্তভাবে দিতে হবে। মানুষের চাপ ও দুশ্চিন্তা থেকে অনেক পরীক্ষার্থী সারারাত ঘুমোতে পারে না। এতে করে অনেকেরই সকালবেলা মাথা ঝিমঝিম করে, খারাপ লাগতে থাকে। ফলে, তারা সময়ের গতিকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যেমন সময়মতো পরীক্ষার হলে যাওয়া, প্রতিটি উত্তর সময়ের মাঝে শেষ করা।
– পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করতে হবে। কোনোভাবেই দেরি করা যাবে না।পরীক্ষার সময় উত্তরপত্রের OMR ফরমে পরীক্ষার রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে প্রথমে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে লেখাটাও পরীক্ষার অংশ, যা অনেকেই ভুল করে ফেলে।
– অনেকেই আছেন একটি প্রশ্নের উত্তর খুব সুন্দরভাবে বিস্তারিতভাবে উত্তর দেন, কিন্তু আরেকটি প্রশ্নের উত্তর দুই লাইনে শেষ করে দিচ্ছেন সময়ের অভাবে। ফলে, এতে নম্বর কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই পরীক্ষার হলে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য সময়টিকে ভাগ করে নিতে হবে। এজন্য বাসায় কয়েকটি পরীক্ষা দিয়ে প্র্যাকটিস করতে হবে।
– আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাংলা ও ইংরেজি বানানের দিকে নজর রাখতে হবে, কারণ বানানের দিকটিও পূর্ণ নম্বর অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।
আমরা অনেক সময় কিছু সাবজেক্ট ভালো করে পড়ি, কিছু গুরুত্ব দেই না। কিন্তু ভালো ফলের জন্য সব বিষয়েই সমান জোর দিতে হবে। কোনো বিষয়কে অবহেলা করা যাবে না।
– পরীক্ষা নিয়ে নিজের উপর মানসিক চাপ তৈরি করা বা দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। মনে রাখতে হবে এটাই জীবনের সবকিছু নয়। জীবনে অনেক রকম পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে আমাদের। তাই মনে বাড়তি চাপ নিলে জীবনের বাকি থাকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতেও আমাদের কষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের এই ছোট্ট জীবন, সংগ্রামের জন্য যেমন, একই সঙ্গে উপভোগেরও। তাই জীবনের এই দুই-এর জন্য সুস্থ থাকাটা খুব জরুরি শারীরিক ও মানসিকভাবে।
চলার পথে আমাদের দরকার আত্মবিশ্বাস, ইচ্ছাশক্তি এবং কঠোর পরিশ্রম। এই তিনের সমন্বয়ে এসব পরীক্ষা বা জীবনের পরীক্ষায় যে ফলাফল আসে, তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকাও মানবজীবনে শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আমরা শিখি না। আমরা কেবল সর্বোচ্চটা চাই, তাই তা না পেলেই হতাশ হয়ে পড়ি। কিন্তু আমাদের হওয়া উচিত, সর্বোচ্চটা চাইব কিন্তু যতটুকু পাব তাতেই নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা। তাহলেই জীবনের সম্মুখপথ অনেক সহজ ও সুন্দর হয়ে উঠবে।
– পরীক্ষার্থীরা, আত্মবিশ্বাসী হও, নিজের মনোবল ধরে রাখো, জীবনের পথ তার নিজস্ব গতিতে চলবে। পরীক্ষার রেজাল্ট জীবনের সবকিছু না বরং ভালো মানুষ হওয়া, সহানুভূতিশীল হওয়া, অন্যের জন্য কিছু করতে পারা, বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা, দেশের জন্য কিছু করতে পারাটাই জীবনের মূল লক্ষ্য হোক আমাদের সবার। সেখানেই জীবনের পরিপূর্ণতা। শুভেচ্ছা সবাইকে।