10 June 2024 , 7:34:18 প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘খেলাপি ঋণ মডেলই এখন দেশের জন্য একটি বিজনেস মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনি ব্যাংক থেকে ঋণ নেবেন, আর ফেরত দেবেন না। এই মডেলই এখন দেশে চলছে।সোমবার (১০ জুন) সম্পাদক পরিষদ ও সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘অর্থনীতির চালচিত্র ও প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৪–২৫’ শীর্ষক এ আলোচনায় অংশ নেন তিনি।তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জিং সময়ে বাজেটটা দেওয়া হয়েছে। অথচ এতে কোনও নতুনত্ব দেখছি না। আগের বাজেটের অংক শুধু এদিক-সেদিক করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, সংকোচনমূলক বাজেট, অথচ বাজেটের ঘাটতি তো সংকোচনমূলক মনে হয় না। আবার ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা বাড়ানো হয়েছে। সরকার যদি বেশি ঋণ নেয়, তাহলে বেসরকারি খাত কীভাবে ঋণ পাবে।
আর ব্যক্তিগত খাত ঋণ না পেলে কর্মসংস্থান হবে কীভাবে। এ অবস্থায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত।তিনি বলেন, এডিপির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এ মুহূর্তে যা এক থেকে দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি হওয়া উচিৎ নয়। নতুন করে ১২শ ৮৫টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এটা অর্ধেক করে দিলেই সরকারের ঋণ নির্ভরতা, ঘাটতি কমবে। বাজেটের নীতি কৌশল ও দর্শনে বলিষ্ঠ কোনও পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না, যা এ সময়ের জন্য দরকার ছিল।
সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বাজেটের অংক এদিক-সেদিক করে কোনও লাভ নেই। কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। সূর্যের আলোর মতো স্বচ্ছ হতে হবে। তখন বাজেট যে আকারই হোক, সমস্যা হবে না। সাবেক এ গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি যে পর্যায়ে গেছে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কেবল আইএমএফের ফর্মুলা মেনে সুদ হার বৃদ্ধি, ডলারের দর বৃদ্ধি ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দিয়ে হবে না। বাজার তদারকি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে সরবরাহ বাড়াতে হবে। তা না করে কেবল সংকোচন করে কাজ হবে না।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, সাবেক অর্থসচিব ও সাবেক কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। স্বাগত বক্তব্য দেন নোয়াবের সভাপতি এ. কে. আজাদ। সমাপনী বক্তব্য দেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।