সারা দেশ

দুর্ঘটনায় দুহাত কাটা পা দিয়ে লিখেই জিপিএ-৫

দুর্ঘটনায় দুহাত কাটা পা দিয়ে লিখেই জিপিএ-৫

পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে রাব্বি। সে স্বাভাবিক জন্মগ্রহণ করলেও ২০১৬ সালে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিদ্যুৎস্পর্শে তার দুটি হাত কাটা যায়।রাব্বি সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের বজলুর রহমানের ছেলে। সে হাজী তোবারক আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।

বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র রাব্বি জানায়, সে ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ভাটিয়ারী ফুটওভার ব্রিজের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। তখন ব্রিজের ওপরে থাকা একটি বৈদ্যুতিক তারে আটকা পড়ে সে। এতে তার দুই হাত থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

কয়েক মাসের চিকিৎসায় সে সুস্থ হলেও কেটে ফেলতে হয় তার দুই হাত।অদম্য রাব্বি আরও জানায়, এ ঘটনার পর সবাই ভেবেছিল রাব্বির পড়াশোনা আর হবে না। তবে অদম্য রাব্বি হার মানতে রাজি নয়।জীবনকে এগিয়ে নিতে সে মুখ দিয়ে লেখার চর্চা শুরু করে। একপর্যায়ে সে একের পর এক পরীক্ষায় সাফল্য পেতে থাকে।

কিন্তু আরও এগিয়ে যেতে সে পা দিয়ে লেখাও আয়ত্ত করে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মুখ দিয়ে লিখে সাফল্য পেয়ে আরও দ্রুতগতিতে লিখতে পা দিয়ে লেখা শুরু করে। এবার সে হাজী তোবারক আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পা দিয়ে লিখেই এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে সফলতা পায়।রাব্বি জানায়, মৃত্যু থেকে বেঁচে আসার পর থেকে তার মা-বাবা, শিক্ষকসহ অনেক মানুষ তাকে অনুপ্রেরণা দেয়।

স্থানীয় সাংবাদিকরাও শুরু থেকে তাকে নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন লিখে সহযোগিতা করে। রাব্বির স্বপ্ন একদিন সে একজন বিজ্ঞানী হবে। এ জন্য সবার দোয়া চায়।ভাটিয়ারী তোবারক আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আচার্য্য বলেন, রাব্বির চেষ্টা ছিল। শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হলেও সে নিজেকে কখনো প্রতিবন্ধী মনে করেনি।

বরং অন্যরা যা পারে সেও তাই পারবে এমনটাই ছিল তার বিশ্বাস। আজ সে বিশ্বাসেই তার এই সফলতা। সে জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমরাও গর্ববোধ করছি।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা আলম সরকার বলেন, রাব্বির এই সফলতায় আমরা খুবই আনন্দিত। সে সমাজের অন্য সবার জন্য প্রেরণা।

সমাজের বিত্তবানদের ওর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন সত্যি করতে হবে। আমি নিজেও থাকতে চাই তার পাশে। আমি তার সফলতা কামনা করি।