সারা দেশ

আমার স্বামী মন্ত্রীর কাছের লোক দেখে নেওয়ার হুমকি চিকিৎসকের

আমার স্বামী মন্ত্রীর কাছের লোক দেখে নেওয়ার হুমকি চিকিৎসকের

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়ন্তী রানী ধর।এমন এক ভিডিওচিত্র ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগীর স্বজনের সঙ্গে খারাপ আচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে, রোগীর ব্যবস্থাপত্র ছিঁড়ে ফেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে এ কথা বলেন ডা. জয়ন্তী রানী ধর।

রোগীর স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়ন্তী রানী ধরের কাছে যান দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল তালুকদার। দূর থেকে রোগী না দেখে কাছ থেকে রোগীকে দেখার পরামর্শ দিতেই ক্ষিপ্ত হন ডা. জয়ন্তী রানী। পরে চেম্বার থেকে বের হয়ে আসতে বাধ্য হন ওই রোগীর স্বজনরা।

তাৎক্ষণিক স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক এ বিষয়ে জানতে ডাক্তারের চেম্বারে প্রবেশ করতেই রীতিমতো চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে তিনি। পরে ‘আপনারা আমার … ছিঁড়তে পারবেন না, আমার স্বামী মন্ত্রীর কাছের লোক’ বলেও সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে শুরু করেন। তার স্বামীর ছোট ভাই ডিআইজি, সাংবাদিকদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।

ডা. জয়ন্তী রানী ধর একসময় দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসেবে থাকলেও বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত আছেন। প্রতি শুক্রবার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গাইনি চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়মিত অপারেশন করেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, ভালো কোনো গাইনি চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা তার কাছে আসেন। অভিযোগ রয়েছে, নানা সময় চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে আসছেন তিনি। সিজারিয়ান অপারেশন করতে গিয়ে রোগী ও নবজাতক হত্যার অভিযোগও রয়েছে তার নামে।

২০২২ সালের ১২ আগস্টা সিজারিয়ান অপারেশনের পর পরই এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে ওই ডাক্তারের নামে। পরবর্তীতে মোট অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তা মিমাংসা করেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও ওই রকম অভিযোগ অহরহ উঠে আসলেও তিনি শক্তিধর হওয়ায় সাধারণ রোগীদের কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না তার বিরুদ্ধে।

সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করার বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান, অতিরিক্ত রোগীর চাপে উত্তেজিত হয়ে এ রকম আচরণ করেছেন। এ জন্য তিনি দুঃখিত।

%d bloggers like this: