ভিন্ন স্বাদের খবর

আজ দুই গাছের গায়ে হলুদ কাল বিয়ে

আজ দুই গাছের গায়ে হলুদ কাল বিয়ে

রং-বেরঙের বাতিতে ঝকঝক করছে মন্দির অঙ্গন। বিভিন্ন রঙিন কাপড় দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সুসজ্জিত দুটি গেট। অতিথিদের দেওয়া হয়েছে নিমন্ত্রণপত্র। অতিথি আপ্যায়নে থাকছে নিরামিষ খাবার। আর এই ব্যাপক আয়োজন একটি বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে। তবে এই বিয়ে কোনো মানুষের নয়, বট আর পাকুড় গাছের বিয়ে দিতেই এত জাকজমকপূর্ণ আয়োজন।

বিয়ে সম্পন্ন করতে ব্যাপক সাজসজ্জা ও আলপোনা এঁকে প্রস্তুত করা হয়েছে ছাঁদনাতলা। বিয়ে পড়ানোর জন্য ঠিক করা হয়েছে ৪ জন পুরোহিত। দিনাজপুর শহরের বাসুনিয়াপট্টি শ্রীশ্রী দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে বট ও পাঁকুড়গাছের মধ্যে এ বিয়ের আয়োজন করেছে এলাকাবাসী ও ভক্তবৃন্দ।আয়োজকরা জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের অমঙ্গল থেকে রক্ষা করার বিশ্বাস থেকে বটপাকুড়ের বিয়ে।

অর্থাৎ অশ্বত্থাদিবৃক্ষ বটেশ্বরি-পাকুড়েশ্বর প্রতিষ্ঠা করা।অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী আগামীকাল ১৭ জানুয়ারি বুধবার ভোর ৬টায় অধিবাস, সকাল ১০ টায় নারায়ণ পূজা, দুপুর দেড় টায় মধ্যাহ্ন প্রসাদ বিতরণ। এর দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিয়ে ও যজ্ঞানুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত পরিবেশিত হবে কবি গান। কবিগান পরিবেশন করবেন চিরিরবন্দর উপজেলার বাবুল সরকার ও খানসা মর চন্দনা রানী সরকার।

তবে আয়োজকরা জানান, আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গায়ে হলুদের আয়োজনের মধ্যদিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।অতিথিদের দেওয়া নিমন্ত্রণপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বর বেশে: পাকুড়গাছ, পিতা: দিলীপ ঘোষ, মাতা: দীপ্তি ঘোষ, ঠিকানা: চকবাজার, সদর, দিনাজপুর। আর কনে সেজে: কুমারী বটগাছ, পিতা: মুন্না সাহা, মাতা: পুর্নিমা সাহা, ঠিকানা: চকবাজার, সদর, দিনাজপুর।

আয়োজক দিলীপ ঘোষ বলেন, প্রকৃতির মঙ্গলের জন্য বট ও পাকুড়গাছের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী যেভাবে মানুষের বিয়ে হয়, সেভাবে বট-পাকুড়ের বিয়ে হবে। ইতিমধ্যে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়েছে। অত্র এলাকায় এমন ব্যতিক্রমী বিয়ে হয়নি বলেও তিনি জানান।মুন্না সাহার স্ত্রী পুর্নিমা সাহা বলেন, ‘বটগাছ মেয়ে। আমি মেয়ের মা। ছেলে পাকুড় গাছের মা দীপ্তি ঘোষ আমরা প্রতিবেশী।

বিয়ে ঘিরে আমরা আনন্দ-উল্লাস করছি।গাছের বিয়ের ব্যাপারে দিনাজপুরের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও দিনাজপুর নাট্য সমিতির সভাপতি চিত্ত ঘোষ বলেন, প্রকৃতি ও ব্যক্তির মঙ্গল কামনায় বট-পাকুড়ের বিয়ে দেওয়া হয়। বাসুনিয়াপট্টি দুর্গা মন্দিরে চকবাজার এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রকৃতির মঙ্গল কামনায় এমন বিয়ের আয়োজন করেছেন।

বিয়ে ঘিরে আনন্দ-উৎসব হচ্ছে। এদিকে জাকজমকপূর্ণ ব্যতিক্রম এই বিয়ে দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন আশেপাশের প্রায় শতাধিক পরিবার।