25 February 2024 , 1:45:26 প্রিন্ট সংস্করণ
নাটোরের বড়াইগ্রামের লক্ষীপুর গ্রামে কবরস্থানের সদস্য চাঁদা দিতে না পারায় সামাজিক কবরস্থানে গৃহবধূ জেসমিন বেগমের (৩২) লাশ দাফন করতে দেওয়া হয়নি। কবর খননের পরও কবরস্থানে দাফন করতে না দেওয়ায় বাড়ির ভিটার এক পাশে মেয়ের মরদেহ দাফন করেন লোকমান হোসেন। ওই গৃহবধূ গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
মৃত জেসমিন বেগম উপজেলার গোয়ালফা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী সমজান আলীর স্ত্রী। লক্ষীপুর গ্রামের বাবার বাড়িতেই আত্মহত্যা করেন জেসমিন বেগম। কবরস্থান কমিটির চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা দিতে না পারায় সামাজিক কবরস্থানে দাফন করতে না দেওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী ও মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিক কলহের কারণে জেসমিন গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন। শুক্রবার তার লাশ দাফনের জন্য স্থানীয় কবরস্থানে কমিটির অনুমতি নিয়ে কবর খনন করা হয়। জুমার নামাজের পর জানাজা নামাজের স্থান ও সময় নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু খনন কাজ শেষ হলে কবরস্থান কমিটির লোকজন ইতিপূর্বে সদস্য না হওয়ায় জেসমিনের বাবার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই টাকা দিতে না পারায় সামাজিক কবরস্থানে খনন করা কবরে দাফন করতে বাধা দেন তারা। এসময় দেনদরবার করেও শেষ পযন্ত কবর দেয়া যায়নি ওই কবরস্থানে। ফলে বাধ্য হয়ে বাড়ির পাশের ভিটায় নতুন করে কবর খুড়ে জেসমিনের মৃতদেহ দাফন করা হয়।
নিহত জেসমিনের চাচা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমার ভাই কবরস্থানের সদস্য হননি। কিন্তু আমি এই কবরস্থানের একজন সদস্য। আমি কমিটির চাহিদামত চাঁদা দেওয়ার জন্য কয়েকদিন সময় চেয়ে সভাপতিসহ অন্যদের কাছে লাশ দাফনের অনুমতি দিতে অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা শোনেননি।কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, ‘কবরস্থানে লাশ দাফন করতে না দেওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। নিহতের বাবা আমাদের কবরস্থানের সদস্য নন।
তারপরে নিহতের বাবা আগের যেই কবরস্থানের সদস্য ছিলেন সেখানেও বিষ খেয়ে মারা যাওয়ার কারণে দাফন করতে দেয়নি। আমাদের কবরস্থানে খবর খননের আগে কাউকে জানায়নি তারা। পরে আমাদের কবরস্থানের সব সদস্য বাদী হলে আমি একটা সমাধান দেই যে, নির্ধারিত সদস্য চাঁদা দিয়ে কবরস্থানের সদস্য হতে।
নিহতের বাবা কবরস্থানের সদস্য না হয়ে পরবর্তীতে তাদের বাড়ির পাশে তার মেয়ের লাশ দাফন করেছেন।বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আযম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে পুলিশকে জানাননি কেউ। বিষয়টি জানতে এলাকায় পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।