শিক্ষা

স্কুলের প্রথম দিনই জীবনপ্রদীপ নিভে গেল আদিবার

স্কুলের প্রথম দিনই জীবনপ্রদীপ নিভে গেল আদিবার

শুক্রবার বানানো হয়েছে স্কুলের জামা। রবিবার শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছে চার বছর বয়সী আদিবাকে। সোমবার সকালে ছিল তার প্রথম ক্লাস। মায়ের আঙুল ধরে আদিবা বেরিয়ে ছিল স্কুলের উদ্দেশে। মুহূর্তে মুছে যায় আদিবার আনন্দ। স্কুলে পৌঁছানোর আগেই তার জীবনপ্রদীপ নিভে গেল।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া এলাকায় ফাতেমাতুজ্জোহরা (রা) মহিলা মাদ্রাসার সামনে ইজিবাইকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নিহত ওই শিশু গোসাইরহাটের রানীসার এলাকার বোরহান উদ্দিন ও মাহমুদা আক্তার দম্পতির মেয়ে।

রবিবার আদিবাকে স্কুলের শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছিল। সকালে মায়ের সঙ্গে নাগেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল। স্থানীয় সূত্র ও শিশুটির স্বজনরা জানান, গোসাইরহাটের নাগেরপাড়া ইউনিয়নের রানীসার গ্রামের বোরহান উদ্দিন ভূমি মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন। তার চার সন্তান নিয়ে স্ত্রী মাহমুদা আক্তার নাগেরপাড়া বাজারে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

ওই দম্পতির ছোট মেয়ে আদিবাকে রবিবার নাগেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। গতকাল মা মাহমুদার হাত ধরে শিশু আদিবা তার জীবনের প্রথম স্কুলে যাচ্ছিল। নাগেরপাড়া বাজারের বাসা থেকে নাগেরপাড়া গোসাইরহাট সড়ক ধরে নাগেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন মা-মেয়ে।

সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের ৩০০ মিটার দূরে একটি মাদরাসার সামনে পৌঁছলে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক আদিবাকে চাপা দেয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার পর ইজিবাইক চালক পালিয়ে যান। স্থানীয়রা ইজিবাইকটি জব্দ করে পুলিশের কাছে দেন।

নাগেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর কবির গণমাধ্যমকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আমাদের বিদ্যালয়ের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকালই মেয়েটিকে তার মা ভর্তি করেছিলেন। আজ সে প্রথম স্কুলে আসছিল। এভাবে তার মৃত্যু আমরা মানতে পারছি না। গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুষ্পেন দেবনাথ বলেন, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চাপায় এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

ওই ইজিবাইকের চালক পালিয়েছেন। শিশুটির পরিবার মামলা করতে চাইলে আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব। শিশুটির এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না পরিবার, আত্মীয়স্বজন, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।