সারা দেশ

মাত্র ৫০০ টাকায় প্রশ্ন বিক্রি করে বরখাস্ত হলেন শিক্ষক

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষার গণিত প্রশ্ন ফাঁস করে বিক্রি করায় শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

ইমাম হোসেন টুটুল টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের ১১ নং দক্ষিণ বর্ণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। অভিভাবক রিনা বেগম ও কুমকুম বেগম অভিযোগ করে বলেন, গত ২৩ নভেম্বর দুপুরে চারুকারু পরীক্ষা শেষ হয়। এরপর শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুল তার মোবাইল নম্বর কাগজে লিখে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে অভিভাবকদের ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেন।

আমরা কয়েকজন অভিভাবক ওই নম্বরে ফোন করে যোগাযোগ করি। তখন ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে গণিত প্রশ্ন পাওয়া যাবে বলে ওই শিক্ষক আমাদের প্রস্তাব দেন। কয়েকজন টাকা দিলে পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় (২৫ নভেম্বর) গণিত প্রশ্ন দেন ওই শিক্ষক। এ সংক্রান্ত কয়েকটি কল রেকর্ড টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমরান শেখ ও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আসে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমরান শেখ বলেন, আমরা ২৫ নভেম্বর রাতেই টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল-মামুন ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাই। রাতেই টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পরামর্শে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষার গণিত প্রশ্ন পরিবর্তন করা হয় বলে আমরা জানতে পারি।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, গত ২৬ নভেম্বর নতুন প্রশ্নে ৩ নং ক্লাস্টারের ২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণিত পরীক্ষা গ্রহন করা হয়। ওই ৩নং ক্লাস্টার ভুক্ত ২৬টি বিদ্যালয়ে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছিল। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, পরীক্ষার পর ইউএনও ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে তদন্ত শুরু হয়।

প্রাথমিক তদন্তে প্রশ্ন বিক্রির সত্যতা মিলেছে। তাই সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ধারা ২০১৮ এর ৩ (বি) ধারায় অভিযুক্ত করে শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুলকে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। এ বিষয়ে জানতে সাময়িক বরখাস্তকৃত শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুলর মুঠোফোনে বার বার কল করা হয়। কিন্তু তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

%d bloggers like this: