রাজনীতি

এবার ডোনাল্ড লুর চিঠি নিয়ে যা জানালো আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আবারও দলগুলোর প্রতি আহ্বান রেখেছে মার্কিন সরকার। দেশটির মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা বিএনপিকে চিঠি দিয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ এখনো কোনো চিঠি পায়নি বলে জানিয়েছে।

তবে ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে লেখা মার্কিন সরকারের চিঠি তেমন আমলে নিচ্ছে না ক্ষমতাসীনরা। দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, লুর চিঠির ভ্যালু নেই। সমঝোতার পদক্ষেপ এখন বিএনপির কাছ থেকে আসতে হবে।তফসিল ঘোষণার ঠিক আগমুহূর্তে ডোনাল্ড লুর চিঠিতে যাই থাকুক, অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে বৈঠক করে সমঝোতায় আসার ব্যাপারেও যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্ব দিয়েছে বলে মনে করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় পার্টি এ চিঠি হাতে পেয়েছে স্বীকার করলেও আওয়ামী লীগ এখনো কোনো চিঠি পায়নি বলে জানিয়েছে।আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আসা কোনো চিঠি বা আহ্বান প্রকৃত অর্থে কোনো সমাধান আসবে না। সমাধান যেখানে আটকে আছে, সেখান থেকেই আসতে হবে।

কোথায় আটকে আছে মনে করে আওয়ামী লীগ সেই প্রশ্নে নীতিনির্ধারকরা দাবি করেন, সংকট সমাধানের আহ্বান মূলত এ পর্যায়ে বিএনপি থেকেই আসতে হবে। এর আগে সরকার বিভিন্নভাবে আহ্বান জানিয়েছে, ফলপ্রসূ হয়নি। বিএনপিকে নির্বাচন কমিশন সংলাপে ডেকেছে, তারা আসেনি। বরং কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। শর্তহীন সংলাপের দাবি জানিয়েছে সরকার। সেটিও শর্ত দিয়ে আটকে দিয়েছে বিএনপি।

এসব নেতা বলেন, এ পর্যায়ে সংকট নিরসনের আহ্বান বিএনপি থেকে আসতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এ জায়গা থেকে আসবে না, তখন যুক্তরাষ্ট্র নয় আরও বড় কোনো জায়গা থেকে সমঝোতার আহ্বান এসেও কোনো লাভ হবে না।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফারুক খান বলেন, এ ধরনের কোনো চিঠি আওয়ামী লীগের হাতে আসেনি। তিনি বলেন, ‘চিঠি হাতে আসুক, বিষয়বস্তু জেনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ফারুক খান বলেন, ‘বিএনপির ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা সংকট ঘনীভ‚ত করছে। চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপির পক্ষ থেকে পদক্ষেপ আসতে হবে। টনীতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করেন ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘ডোনাল্ড লু বলেন আর পিটার হাস বলেন, তাদের সঙ্গে তো আমাদের ডায়ালগ হবে না। ডায়ালগ যাদের সঙ্গে হবে তারা বলুক সংকট সমাধানের সমঝোতার কথা।তিনি বলেন, ‘আমি যেটা বলতে চাচ্ছি, যাদের সঙ্গে ডায়ালগ হবে, যারা সরাসরি স্টেকহোল্ডার (বিএনপি), তারা তো বলছে না ডায়ালগের কথা।

আমরাই তো সবসময়ই শর্ত ছাড়া ডায়ালগের কথা বলে আসছি। কারণ, ডায়ালগ তো ডোনাল্ড লুর সঙ্গে হবে না। তিনি তো নির্বাচনও করবেন না। নির্বাচন তো করবে বিএনপি। আরাফাত বলেন, ‘তাই এ ধরনের চিঠির কোনো ভ্যালু নেই। এটার তখনই ভ্যালু থাকে যখন বিএনপি ইলেকশনের সরাসরি স্টেকহোল্ডার হিসেবে নিজেরা এ প্রস্তাব দেবে বা একটা চিঠি দেবে। তখন এ চিঠির একটা গুরুত্ব থাকবে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা আরও বলেন, সমঝোতা আটকে আছে বিএনপির নেতা তারেক রহমানের জন্য। তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করলে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে না পারলে ও বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে না পারলে কোনো লাভ হবে না। তারেকের এ তিনটি চাওয়ায় আটকে আছে সমঝোতা।

দলটির এসব নেতা বলেন, বিএনপি ধরেই নিয়েছে নির্বাচন হয়ে যাবে, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে তাহলে সমঝোতায় বসে আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিয়ে লাভ কী হবে? তারেকের দেশে আসা হবে না। বিএনপিও ক্ষমতায় আসবে না। ফলে সমঝোতা না গিয়ে আটকে রাখাই হলো তারেক রহমানের লক্ষ্য।