21 October 2023 , 4:38:29 প্রিন্ট সংস্করণ
পৃথিবী প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যে চলতে পারছে দিনশেষে সেই হাসে বিজয়ীর হাসি। কিছু পরিবর্তন আনন্দের পাশাপাশি জীবনে ভারসাম্য আনে। এমন একটি জীবন সবাই চায় যেখানে ইতিবাচকতা, উৎপাদনশীলতা এবং সুস্থতা বজায় থাকে। কিছু সহজ ও সাধারণ অভ্যাস আপনাকে এমন জীবন দিতে পারে। এমন কিছু অভ্যাস রয়েছে যা ধারণ করতে পারলেই খুব দ্রুতই বদলে যাবেন….
১. পরিবার, বন্ধু ও প্রিয় মানুষকে কখনো জানাতে ভুলবেন না, আপনি তাদের কতটা ভালোবাসেন, তাদের উপস্থিতি আপনার জীবনে কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মা-বাবা ও পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি মনোযোগী হন। তাদের সঙ্গে গল্প করুন। তাদের ঘুরতে নিয়ে যান। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে বলে যান। কারণ, আমরা কেউ জানি না, তারা আমাদের সঙ্গে আর কত দিন আছেন! এই ছোট অভ্যাসই আপনাকে ইতিবাচকভাবে বদলে দেবে, মানসিকভাবে সুস্থ, সুন্দর আর নির্ভার রাখতে সাহায্য করবে।
২. প্রতিদিন পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও একা সময় কাটান। আপনার চারপাশটা খেয়াল করুন। আপনার আজকের দিনের একটি ভালো ঘটনা, অনুভূতির জন্য স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। কেউ আপনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলে, তাকে মন থেকে ধন্যবাদ জানান।
৩. জ্যামে আটকে আছেন? গাড়ি থেকে নেমে পড়ুন। হাঁটুন। লিফটে না চড়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠুন। কাজের ফাঁকে ফ্রি-হ্যান্ড এক্সাসাইজ করুন ৫ থেকে ১০ মিনিট। এই ছোট অভ্যাস আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখবে। হাত, পা, কোমরের পেশি থাকবে সচল।
৪. কাজ শেষ হওয়ার পর গুছিয়ে রাখুন টেবিলটা। চায়ের কাপ, কলম, ডায়েরি রাখুন জায়গামতো। পরদিন যখন কাজে বসবেন, নিজের মধ্যে পাবেন নতুন উদ্যম। কাজের টেবিলে রাখুন একটা ছোট্ট গাছ। গাছের সবুজ রং আমাদের মানসিক চাপ কমায়।
৫. প্রতিদিন সকালে কিছু সময়ের জন্য হলেও রোদে দাঁড়ান। ১০ মিনিট গায়ে রোদ মাখুন, মন খারাপ থাকলেও ভালো হয়ে যাবে। সতেজ লাগবে।
৬. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারকা, অপ্রয়োজনীয় পেজ ইত্যাদি আনফলো করুন। ফেসবুক ফ্রেন্ডদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। মনে রাখবেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক সময়ই মানুষের সত্যিকার প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায় না।
৭. নিজেকে কখনো অন্যের সঙ্গে তুলনা করবেন না। প্রতিটা মানুষ অনন্য। কারও সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। আপনি নিজেকে যদি নিজেই সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করেন, তাহলে অন্যরা আপনাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবে, বলুন? নিজে যা ভালো পারেন, চেষ্টা করুন সে জিনিস আরও ভালো করার। খারাপ অভ্যাস থাকলে বাদ দিন। নিজের ভালো-খারাপ গুণ সম্পর্কে ধারণা পেতে কাছের মানুষের সাহায্য নিন।
৮. বাজার বা কেনাকাটা করতে গেলে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে বিল না দিয়ে নগদ টাকায় কিনুন। যখন আমরা টাকা হাতে নিয়ে খরচ করি, তখন অযথা কেনার প্রবণতা কমে যায়।
৯. যখন কাজের ফাঁকে ল্যাপটপ স্ক্রিন থেকে বিরতি নেবেন, তখন হেঁটে আসুন। নাহয় চা বানিয়ে খান বা কথা বলুন সহকর্মীদের সঙ্গে। ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে আবার মুঠোফোনের স্ক্রিনেই আটকে থাকবেন না। অভ্যাসটি আমাদের ক্লান্তি দূর করার বদলে আরও ক্লান্ত করে।
১০. প্রতিদিন চেষ্টা করুন নতুন কিছু শেখার। বই পড়ুন, পত্রিকা পড়ুন। জানুন, কী ঘটছে চারপাশে। ইউটিউবে শুনে নিতে পারেন পৃথিবীর বড় বড় মানুষের বক্তৃতা বা পডকাস্ট। তবে সব সময় যে বই পড়ে, ভিডিও দেখে কোনো কিছু শেখতে হবে, তা নয়। যাদের ভালো লাগে, তাদের ভালো দিকগুলো খেয়াল করুন। মস্তিষ্ককে সচল রাখুন। এতে আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতা বিকশিত হয়।
১১. ‘না’ বলতে শিখুন। কোনো কাজ যদি আপনাকে আনন্দ না দেয়, সরে আসুন। তবে দায়িত্ব বা কর্তব্যের সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছা মেলাবেন না। কোনো কাজ হাতে নিলে সেটি ভালোভাবে শেষ করুন।
১২. পরিবার, বন্ধু, চাকরি বা ব্যবসা-সবকিছুই আমাদের জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। খেয়াল রাখবেন, চাকরি বা ব্যবসার পেছনে ব্যয় করা অতিরিক্ত সময় যেন আপনার ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য নষ্ট না করে। কারণ, দিন শেষে পরিবারই আমাদের সবচেয়ে আপন। সবচেয়ে ভরসার জায়গা। সবচেয়ে বড় শক্তি।