সারা দেশ

ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলবাসী

জীবন সংগ্রামের লড়াইয়ে উপকূলে আগাত হানা ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলবাসী। পানি নেমে যাওয়ার পর অনেক এলাকায় জীবনযাপন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। ঝড়ের আঘাতে ভেঙে যাওয়া ঘর মেরামত করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের পর কয়েকদিন পার হলেও এখনও অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। পাচ্ছে না মোবাইল নেটওয়ার্ক, যোগাযোগ ব্যাহত।সরেজমিনে গেলে দেখা মেলে ঘূর্ণিঝড় (রেমালের) আঘাতে সবকিছু নিঃশেষ হয়ে যাওয়া মানুষগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর চিত্র।

প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই চলছে ভেঙ্গে যাওয়া ঘরটি ফের মেরামতের কাজ। আর বাড়ির আঙিনাজুড়ে পড়ে রয়েছে ভাঙ্গা ঘরের অবশিষ্ট অংশগুলো। এসব দেখলে স্পষ্টই বোঝা যাবে কি পরিমাণ ধকল গেছে এসব এলাকায়।পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের চরলাঠিমারা এলাকায় প্রবেশ করতেই দেখা গেলো ঘরের টিনের চাল মেরামত করছেন কয়েকজন। আলাপকালে তারা জানালেন, ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েছেই। পরিবার নিয়ে তো থাকতে হবে। তাই ঘরটি মেরামত করা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, যত দ্রুত সম্ভব থাকার ঘরটি মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা। রাস্তায় পড়ে আছে ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া গাছগুলো। তবে এখনো অধিকাংশ বাড়ির কাজই মেরামত করা হয়নি।অনেক এলাকায় গাছের ডালে এখনো ঘরের টিনের চাল আটকে আছে। রাস্তার পাশেও টিনের চাল পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বড় বড় গাছগুলোর ডালপালা ভেঙ্গে পড়ে আছে রাস্তায়।

কেউ কেউ ভাঙ্গা ঘরটি মেরামতের আর্থিক খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকেই কোনোমতে ছাউনি তুলে রাত কাটানোর ব্যবস্থা করছেন। আবার অনেকের ঘর এখন মাটির সঙ্গেই মিশে আছে।ঝড়ের বর্ণনায় জাহাঙ্গির বলেন, রবিবার (২৬ মে) ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আগাত হানে এতে শেষ সম্বল ঘরটি অন্য জায়গায় উড়ে যায়। ঘরে থাকা কোনো জিনিসই আর ভালো নেই। তবে আর একটু সময় আগাত হানলে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ভিতরে পানি ঢুকলে হয়ত ঘরটি আর থাকতোইনা,পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে যেত।

এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, এখনো অনেক গ্রামের মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। ঘরে থাকা বিভিন্ন সম্পদ ও খাবারের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় অনেকেই বিপদের মধ্যে সময় পার করছেন।পাথরঘাটার চর এলাকার মো. আব্বাসসহ এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানালেন, এভাবে একদিনে সবকিছু হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো তাদের মতো স্বল্পআয়ের মানুষদের জন্য খুবই কঠিন কাজ। সরকারি বা বেসরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে তারা আরও দ্রুত ফিরতে পারবেন।

গত রবিবার (২৬ মে) দিনগত রাত ও সোমবার (২৭ মে) উপকূল অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষত এখনো শুকায় নি। বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হওয়া এসব মানুষগুলো হয়ত মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি প্রকৃতি থেকেই পেয়ে থাকেন।সংশ্লিষ্টরা জানান, এ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ফসলের জমি ডুবে যাওয়া থেকে শুরু করে সব ধরনের ক্ষতিই হয়েছে। টাকার অঙ্কে যা শত কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।