7 April 2024 , 3:31:19 প্রিন্ট সংস্করণ
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় ঢুকে বার্মিজ চাকুসহ গ্রেফতার মাদক মামলা আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাতের এ হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।পরে আবারও থানায় হামলার জন্য মাঝিড়াপাড়া এলাকায় মহাসড়কের পাশে অবস্থান নিলে নুরুসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
নুরুসহ দুজনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাত রাউন্ড গুলিসহ দুটি বিদেশি পিস্তল ও তিন বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।রোববার সকালে শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও তাদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আহত পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শাজাহানপুর থানার এসআই আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে একদল ফোর্স শনিবার রাত ৯টার দিকে আড়িয়াবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি বার্মিজ চাকু ও দেশীয় অস্ত্রসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি আড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুনকে গ্রেফতার করে। এ খবরে তার লোকজন ক্ষুব্ধ হন।
রাত ১০টার দিকে ২০-২২টি মোটরসাইকেলে শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাঝিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরুর নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ৪০-৫০ জন সদস্য গ্রেফতার মিঠুনকে ছিনিয়ে নিতে থানায় প্রবেশ করেন।তারা থানার মধ্যে অবস্থান করে তাণ্ডব শুরু করেন। ওসি শহিদুল ইসলাম থানায় এলে নুরু ও তার বাহিনীর সদস্যরা থানার সিঁড়িতে বসে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।
সরে যেতে বললে তারা উত্তেজিত হয়ে ওসিকে ধাক্কা দিয়ে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে কয়েকজন কর্মকর্তাসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নুরু তার বাহিনীর সদস্যরা থানা থেকে পালিয়ে যান। পরে আবারও মিঠুনকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলার জন্য নুরু ও তার লোকজন মাঝিড়াপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির কাছে অবস্থান নেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা সেখানে অভিযান চালিয়ে নুরু, তার বাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ পরিচিত স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক ওহাবুজ্জামান নাঈম, সাবেক শিবির নেতা বোরহানসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে।এদিকে পুলিশ সদস্যরা শনিবার রাতেই নুরুজ্জামান নুরুর মাঝিড়াপাড়া এলাকার বাড়িতে তল্লাশি চালায়।
সেখান থেকে সাত রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।এ ছাড়া একই এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুর সহচর হাসান নাজমুলের বাড়িতে তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন বোতল ফেনসিডিল ও বেশ কিছু মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাঝিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরুর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রবাজি, জমিদখল, সরকারি কাজে বাধা, মাদকদ্রব্য আইনে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। কিছু দিন আগে সরকারি টেন্ডারের দরপত্র চুরির অভিযোগে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। এরা পুরো এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।