14 February 2024 , 6:02:26 প্রিন্ট সংস্করণ
বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে ভ্যালেন্টাইনস ডেকে খুব ঘটা করে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। এই দিনে পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো ভালোবাসার মানুষে পরিপূর্ণ থাকে। ভালোবাসা দিবসের এই দিনে প্রিয়জনকে সবাই ফুল ও বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দিয়ে থাকে। তবে এই ভালোবাসার সঙ্গে ভ্যালেন্টাইনের সম্পর্ক কী? এর ইতিহাস হয়তো অনেকেরই জানা নেই।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখতে পাবেন এর পেছনের কাহিনি মোটেও সহজ কিছু নয়। রক্তাক্ত এক ইতিহাস জড়িয়ে আছে ভালোবাসা দিবসের সঙ্গে। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন খ্রিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক বসবাস করতেন ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে।সেই সময়ে রোমতে খ্রিস্ট ধর্মের প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু তখনকার রাজার আদেশ অমান্য করে খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারে নেমে পড়েন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন।
রোমের সিংহাসনে থাকা সম্রাট ক্লডিয়াস মেনে নিতে পারেননি এই ঘটনা। সম্রাট ক্লডিয়াস বিশ্বাস ছিল, প্রেম কিংবা বিয়ের কারণে পুরুষের বুদ্ধি আর শক্তি কমে যায়। তার সমস্ত সৈন্যর ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল এ বিষয়ে। তারা কেউ প্রেম বা বিয়ের সম্পর্কে জড়াতে পারতেন না। একই সময়ে রোমে খ্রিস্টধর্মের প্রচারও নিষিদ্ধ করেন সম্রাট ক্লডিয়াস।
নিয়ম ভাঙার জন্যই আগমন ঘটেছিল সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের। সম্রাটের আদেশের বিরোধিতা তিনি প্রকাশ্যেই শুরু করলে। যে কারণে তাকে বন্দি হতে হলো রাজার সৈন্যদের হাতে। কিন্তু তাতে কী! বন্দি থাকাকালীনও মানুষের প্রতি ভালোবাসা তাকে বেশ জনপ্রিয় করে তুললো।ভ্যালেন্টাইন পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। কারাগারে থাকাকালীন এক নারীকে চিকিৎসা করে তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন।
এরপর রাজার রোষে পড়েন আরও বেশি। ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জীবন উৎসর্গ করা ভালোবাসার কারণেই তার মৃত্যুর দিনটি ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। নাম দেওয়া হয় ভ্যালেন্টাইন ডে। এই উদযাপনের শুরু ইউরোপ থেকেই।রোমে একটি আঞ্চলিক উৎসব ছিল লুপারকেলিয়া নামে। এই উৎসব পালন করা হতো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪-১৫ তারিখের দিকে।
লুপারকেলিয়া উৎসবটিকে বিবেচনা করা হতো বসন্তের আগমনী দিন হিসেবে। সেই উৎসবে একটু বক্স থেকে আগ্রহী ছেলেমেয়েরা নাম লেখা কাগজ তুলতেন।এরপর একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতেন। এমনকী অনেকের সম্পর্ক গড়াতো বিয়ে পর্যন্ত। এরপর ধীরে ধীরে সেই উৎসব এবং সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগ একসঙ্গে মিলে রূপ নিয়েছে ভালোবাসা দিবসে।