14 January 2024 , 5:51:26 প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে প্রথম বারের মতো গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নয়াপাড়া কাশিমপুর এলাকায়। একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক ও মালিকদের আয়োজনে বাঙ্গালী সংস্কৃতির ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ওই কারখানায় কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রমিকদের নিয়ে বর্ণিল সাঝে এক পিঠা উৎসব পালন করা হয়েছে।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকালে গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কারখানার কর্তৃপক্ষ। জানাগেছে, গাজীপুর মহানগরীর নয়াপাড়া কাশিমপুর এলাকার মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিকরা শনিবার (১৩জানুয়ারি) দুপুরে তাদের কারখানার ছাদের দেশের মাটিতে প্রথম বারের মতো বর্ণিল সাঝে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী বাঙালি সাংস্কৃতি ব্যতিক্রম ধর্মী এক পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে।
এ সময়ে ওই কারখানায় কর্মরত শত-শত পোশাক শ্রমিকরা। তাদের নিজ-নিজ জেলার আকর্ষণীয় ও ঐতিহ্যবাহী পিঠা গুলো প্রদর্শন করেছেন।মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড পোশাক কারখানা লিমিটেড: কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে,এবার এই পিঠা উৎসবে প্রায় শতাধিক বাহারি রমকের পিঠা প্রদর্শন করেছে কারখানায় কর্মরত দেশের বিভিন্ন জেলার পোশাক শ্রমিকরা।
এ ছাড়া এখানে ক্রেতা বিক্রেতাদের সুবিধার্থে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছিল ২২ টি পিঠার স্টল। ক্রেতা ও বিক্রেতারা ছিলেন সবাই কারখানায় কর্মরত শ্রমিক,কর্মচারী ওস্টাফ।এউৎসব শেষে সবচেয়ে বেশি বিক্রেতা ও ভালো মানের পিঠা প্রদর্শনকরীদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
পোশাক শ্রমিকদের এ পিঠা উৎসবে যেসব পিঠা প্রদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে হলো: ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, দুধ চিতই পিঠা, ঝাল পিঠা, মালপোয়া, মেড়া পিঠা, মালাই পিঠা, কুলশি পিঠা, কাটা পিঠা, ক্ষীরকুলি পিঠা, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা পিঠা, রসফুল পিঠা, সুন্দরী পাকান পিঠা, সরভাজা পিঠা, পুলি পিঠা পিঠা,পাতা পিঠা,পাটিসাপটা পিঠা,পাকান পিঠা, নারকেলের সেদ্ধ পুলি পিঠা, ছিট পিঠা, পানতোয়া পিঠা, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, ঝালপোয়া পিঠা, ঝুরি পিঠা, ছাঁচ পিঠা, ছিটকা পিঠা, বিবিখানা পিঠা, চুটকি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, ফুল পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা, সেমাই পিঠা, নকশি পিঠা প্রভূতি।
মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিক আ.রহমান জানান,তারা মহাখুশি মালিকদের এ ধরনের পিঠা উৎসবের আয়োজন করায়। তিনি বলেন,দেশের সব পোশাক কারখানার মালিকরা যদি দেশের বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য গুলো নিয়ে এ রকম ধরনের বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে কম পক্ষে বছরে এক বার উৎসব আয়োজন করেন। তাহলে এক দিকে যেমন দেশের হারানো ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলা যাবে।
একই সঙ্গে এ সুবাদে পোশাক শ্রমিকের মধ্যে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে দুরত্ব কমে আসবে। এতে করে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে আরও বেশি গতি ফিরে আসবে।মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড পোশাক কারখানার এজিএম (এডমিন) মো:আবু সেহাব জানান,আমরা এই কারখানার শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি কিভাবে তাদেরকে বাঙালি ঐতিহ্যে ও সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিচিত করিয়ে দেওয়া যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা করি। তিনি বলেন, পিঠা উৎসবের আয়োজন সাধারণত সরকারের সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
কিংবা বিভিন্ন বেসরকারি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে আয়োজন করে করে থাকে। তবে এই প্রথম আমরাই দেশের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে পিঠা উৎসব আয়োজন করেছি। আমাদের কারখানায় দেশের বিভিন্ন জেলার লোকজন কাজ করেন। তাই তাদেরকে তাদের নিজ-নিজ জেলার ঐতিহ্যের পিঠা তৈরি করে প্রদর্শনের পরামর্শ দিয়েছি। এই কর্মকর্তা আরও বলেন,এটা আমরা করেছি দেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও অকৃত্রিম ভালবাসা থেকে। তিনি বলেন,এই উৎসবের মধ্যমে মূলত আমরা চেয়েছি,গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরতে।একই সঙ্গে একটা দিন মালিক-শ্রমিক মিলে উৎসের দিন উদযাপন করতে।