Uncategorized

এতিম নাতি-নাতনিকে নিয়ে কষ্টের জীবন বিধবা আমেনার

ছেলের ছবি আঁকড়ে বেঁচে আছেন মা আমেনা আক্তার। মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের সাইতপুর গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে আলাল। সংসারের একমাত্র কর্মকম ব্যক্তি ছিল আলাল মিয়া। বাঁচার তাগিদে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে গিয়েছিলেন চট্টগ্রামে।

স্ত্রী চুমকী আক্তার কাজ করতেন একটি পোশাক কারখানায়। আর আলাল করতেন দিনমজুরের কাজ। ২০১০ সালে একটি মাজার থেকে ফেরার পথে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান আলাল মিয়া।

আলালের মৃত্যুর পর আড়াই বছরের মধ্যে মারা যান তার স্ত্রী চুমকী আক্তারও। এতিম হয়ে যায় তিন সন্তান। সংসারে থাকার মতো আছে একমাত্র বিধাব মা আমেনা আক্তার। ভিটেবাড়ি ছাড়া আর কিছুই রেখে যেতে পারেনি আলাল মিয়া। খেয়ে না খেয়ে মা আমেনার তিন নাতি-নাতনিকে নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটছে।

আলালের তিন সন্তানের মধ্যে চমন মিয়ার বয়স ১৮ বছর, চমা আক্তার ১৬ ও রাতু মনির বয়স ১২ বছর। এদের মধ্যে চমা আক্তারের বিয়ে হয়েছে। রাতু মনি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করলেও টাকার অভাবে মাধ্যমিকে ভর্তি হতে পারছে না। একমাত্র নাতি চমনের সামান্য আয়ে চলছে আমেনার সংসার।

অসহায় এ পরিবারটির খোঁজ নিতে শনিবার আমেনা খাতুনের গ্রামের বাড়িতে যান এ প্রতিবেদক। কেমন আছেন, কীভাবে নাতি-নাতনিদের নিয়ে চলছেন— জানতে চাইলে আমেনা আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়েন। ট্রাংক থেকে ছেলের ছবি বের করে বলেন, ছেলের ছবি দেখে দেখে বেঁচে আছি।

তিনি বলেন, আমার দুই ছেলে ছিল। দুজনই মারা গেছে। এদের মধ্যে আলালের আয় দিয়েই সংসার চলত। ওর মৃত্যুর আড়াই বছরের মাথায় বউমাও মারা গেছে।

এই বিধবা বলেন, বাড়িতে থাকার মতো একটা ভিটেবাড়িই আছে। বৃষ্টি আইলে ঘর দিয়ে পানি পড়ে। নাতি চমন বড় ওইছে, ওর সামান্য আয় দিয়েই কোনোমতে চলে সংসার। বড় নাতনিকে নানার বাড়ির লোকজন বিয়ে দিয়ে দিয়েছে।

ছোট নাতনিটা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। টাকার অভাবে আর লেখাপড়া করাইতে পারছি না। আল্লাহর কাছে দোয়া চাই আমার মতো আর যেন এ অবস্থা কারও না হয়।