24 December 2024 , 7:24:40 প্রিন্ট সংস্করণ
কুষ্টিয়া রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহান আলী সহ বাংলা বিভাগের প্রফেসর, সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের ডিন ড. মোঃ শহীদুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও ইতিহাস বিষয়ক সহকারি অধ্যাপক ড. মোছাঃ ইসমত আরা খাতুন, ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর মোঃ নূর উদ্দীন ও বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান এস, এম হাসিবুর রশিদ তামিমের জোগসাজসে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিষয়ে অপরাজনীতির কারণে ধ্বংসের মুখে প্রতিষ্ঠানটি। ভাইস চেয়ারম্যানের নানা অপকর্ম নিয়ে একাধিক পত্রিকা, ফেসবুক, অনলাইন পোর্টাল ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সংবাদ প্রচারিত হওয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান নিজের অপকর্ম ঢাকতে নানা টালবাহানা করছেন। ইতিমধ্যে ফেসবুক ও দু- একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদের নামে মিথ্যাচার করেছেন তিনি।
বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ায় রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) সদস্য মুহ. শামসুর রহমান বাবু সদস্য সচিব, শেখ মোস্তাফিজুর রহমান, ট্রেজারার, সদস্য প্রফেসর ড. আবু সাঈদ মোহম্মদ আলী, সদস্য প্রফেসর ড. হালিমা খাতুন, সদস্য প্রফেসর ডা. আনিসুর রহমান, সদস্য মো. মনিরুজ্জামান ও সদস্য মো. জুলফিকার আলি জানান, ভাইস চেয়ারম্যান ফেসবুক ও পত্রিকায় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য মোঃ মনিরুজ্জামানকে জনৈক সদস্য এবং বিপদগামী সদস্য উল্লেখ করে হীনমন্যতার পরিচয় দিয়েছেন। ভাইস-চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবং নির্ধারিত সময়ের পরেও ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখায় প্রতিকার চেয়ে দুইদিন ভর্তি শাখা বন্ধ রাখা হয়। ২৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে কতিপয় স্থানীয় উঠতি নেতা ও অপরিচিত মাস্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকানো হয়েছে অসৎ উদ্দেশ্য এমন অভিযোগ করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এ বিষয়ে মনিরুজ্জামানের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। গত কয়েক বছরে একাধিক ট্রাস্ট মিটিংয়ে পূর্ণাঙ্গ রেজিস্ট্রার নিয়োগের বিষয় আলোচনা হলেই তিনি বিভিন্ন টালবাহানা করছেন। ভাইস-চেয়ারম্যান নিজ স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে তার অযোগ্য স্ত্রীকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার করে পদটিকে কুক্ষিগত করেছেন। ইসলামীয়া কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ নওয়াব আলী মনিরুজ্জামানের ভায়রা বলে উল্লেখ করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রহমানকে জাতীয়তাবাদী পরিষদের পরিচয় দেয়া হয়েছে। মূলত তিনি সুযোগ সন্ধানী, যখন যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসে তখন সে দলের গুণকীর্তন করেন। কারণ তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু পরিষদ সদস্য এবং সরকারের রাজনৈতিক দলের পরিবর্তন হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক পরিষদের সদস্য হয়ে যোগদান করেন। রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে মনিরুজ্জামান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের দায়িত্বে উল্লেখ করা হয়েছে হয়েছে- যা মিথ্যা ও বানোয়াট। বিওটির সম্মানিত সদস্য মনিরুজ্জামানের ব্যক্তিগত পরিচয় ভাইস-চেয়ারম্যান উত্থাপনের মাধ্যমে ব্যক্তি আক্রোশের পরিচয় দিয়েছেন। মনিরুজ্জামানসহ উল্লেখিত সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় দখলের কোন চিন্তা করছেননা বরং ভাইস-চেয়ারম্যানের একচ্ছত্র অনিয়মতান্ত্রিক ক্ষমতার অবসান ঘটিয়ে বৈষম্য মুক্ত নিয়মতান্ত্রিক প্রশাসনিক ব্যবস্থার বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা করছেন।
রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তাবনায় প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ভাইস-চেয়ারম্যান নিজের নাম যুক্ত করে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ এবং অনুমোদনের সময় ড. জহুরুলের মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত থাকার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে তার ইচ্ছানুয়ায়ি এটা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ট্রাস্ট মিটিংয়ে নিজেকে আজীবন ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের নাম প্রস্তাবে মনিরুজ্জামানসহ অনেক সদস্য বাধা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। সদস্যদের মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। মতান্তর হয়েছে বলে তিনি ট্রাস্ট দলিল রেজিস্ট্রেশন না করে স্বৈরাচারের পরিচয় দিয়েছেন। ভাইস-চেয়ারম্যান প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে লিপিবদ্ধ থাকায় আজীবন ভাইস-চেয়ারম্যান থেকে একক সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে চান। তার কর্তৃত্বের বাইরে কিছু করা হলে বাধা সৃষ্টি করেন । ট্রাস্ট দলিলে তিন বছর অন্তর বিওটি কমিটি পরিবর্তনের কথা থাকলেও তার অনিচ্ছার কারণে দীর্ঘ নয় বছরে পরিবর্তন হয়নি। একারণে পূর্বের ট্রাস্ট বহাল থাকায় ট্রাস্ট সদস্য সচিব মুহাঃ শামসুর রহমান বাবু কিংবা ট্রাস্ট ট্রেজারার শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের পদও বহাল রয়েছে। কিন্তু তারা দু’জনে বিওটি কমিটি পরিবর্তনের ব্যাপারে সম্মত। বক্তব্য তিনি বলেন ‘জয়েন্ট স্টক কোম্পানীতে রেজিস্ট্রেশনের পূর্বে কমিটি পুনর্গঠনের সুযোগ নেই’- এটা তিনি মনগড়া কথা বলেছেন; যা ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট। বরং তাকে আজীবন ভাইস-চেয়ারম্যান পদ দেওয়া না হলে দলিল রেজিস্ট্রেশন করবেন না- তার কথার মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়।
ট্রাস্ট দলিলের বিধিতে এটার সত্যতা নেই কারণ ট্রাস্ট দলিলের বিধি ৩.৮ ও ৩. ৯ ধারা অনুযায়ী
ট্রাস্টের একজন ভাইস-চেয়ারম্যান থাকবেন যিনি নির্বাচনের তারিখ থেকে ট্রাস্টিদের দ্বারা ৩ (তিন) বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন, যদি না তিনি ট্রাস্টি হওয়া বন্ধ করেন।
ট্রাস্টি বোর্ড তাদের মধ্য থেকে একজন সচিব (“সচিব”) এবং একজন কোষাধ্যক্ষ (কোষাধ্যক্ষ”) নির্বাচন করবে যিনি নির্বাচনের তারিখ থেকে ৩ (তিন) বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত হবেন, যদি না তিনি ট্রাস্টি হওয়া বন্ধ করেন।
করোনকালীন সময়ে শুধু রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় নয়, পৃথিবীর সমস্ত কার্যক্রম অনলাইনে সম্পাদিত হয়েছে। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যানের কাউকে দায়িত্ব বুঝে না দিয়ে আমেরিকায় নিজ কর্মে নিয়োজিত থেকে অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার করছেন যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং এই বিধি ট্রাস্ট দলিলে উল্লেখ নেই। ভাইস-চেয়ারম্যান পদটি কুক্ষিগত করতে এই পন্থা অবলম্বন করছেন ।
বিওটি সদস্য মো. মনিরুজ্জামান ও মো. জুলফিকার আলী ট্রাস্ট মিটিংয়ে আলোচনা ও অনুমোদনের মাধ্যমেই সকল কাজ সম্পন্ন করেছেন। শিক্ষার্থী ভর্তি থেকে টাকা সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ ও ভিত্তিহীন। বিওটির মিটিংয়ের মাধ্যমে মিটিং এলাউন্স যেভাবে ভাইস চেয়ারম্যান গ্রহণ করেন তার কথার মাধ্যমে নিজের অস্বচ্ছতার প্রতিফলন ঘটেছে। কারণ তার অনুমতি ব্যতিরেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কিছুই সম্ভব হয় না। আর্থিক বিষয়ে ড. জহুরুল যে মন্তব্য করেছেন, সেটা তারই সিদ্ধান্ত মোতাবেক সম্পন্ন হয়েছে। ক্রয় কমিটিতে পাঁচজন সদস্য হলেন প্রফেসর ড. আবু সাঈদ মোহাম্মাদ আলী তার শ্যালক ফজলে রব্বানী, মো. জুলফিকার আলী, এস এম হাসিবুর রশিদ তামিম, রেজিস্ট্রার ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যানের স্ত্রী ড. মোছা. ইসমত আরা খাতুন। ক্রয় কমিটি মিটিং আহবান করলেও বিওটি সদস্য ফজলে রব্বানী আসেন না এবং কেনা-কাটায় ইচ্ছেকৃত ভাবে উপস্থিত থাকেনও না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রয় কমিটি থাকলেও প্রায়ই যথাযথ মিটিংয়ের মাধ্যমে তা ক্রয় করা হয় না; তামিম ইচ্ছে মতো কিনে পরে সেটা পাশ করিয়ে নেন। কোন ক্রয়ে অভিযোগ থাকলে ভাইস-চেয়ারম্যান সেটায় হস্তক্ষেপ করে সমাধান করেন। তিনি ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে যা উল্লেখ করেছেন তা মিথ্যা ও বানোয়াট। কারণ তার সিদ্ধান্তের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। .
ভাইস-চেয়ারম্যন তার পরিবার সংশ্লিষ্ট তার সহধর্মীনী, ছোট ভাই, জামাতা, ভাইরা, বাড়ির পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ছেলের গৃহশিক্ষক দুইজন, ড্রাইভার, ফুফাতো শ্যালক। সবমিলিয়ে নয়জন আত্মীয়কে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। অথচ এ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে বলেছেন- তার কোন নিকট আত্মীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই’। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলেই জানেন ড. মোছাঃ ইসমত আরা খাতুন তার স্ত্রী। ছোট ভাই ড. মো. শোয়েব মাহমুদ ও জামাতা জনাব পারভেজ আহমেদকে প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রহমান (রেজিস্ট্রার, চলতি দায়িত্ব) কর্তৃক অনুমোদনহীন আইন বিভাগে নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও নিয়োগ বোর্ড করা হয়নি। কুসুম রাণী (পলাশের মা) তার বাসায় পরিচ্ছন্নতা কর্মী ছিলেন, তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে (সুইপার, বর্তমান চাকুরি থেকে অব্যহতিপ্রাপ্ত) সুইপার হিসেবে নিয়োগ দেন। পরবর্তীতে এস, এম হাসিবুর রশিদ তামিমের ইচ্ছায় কুসুম রাণীকে বাদ দিয়ে তার মেয়ের সাহায্যকারীনী মোছাঃ আছিয়া বেগমকে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তার ছেলের গৃহশিক্ষক সুজয় কুমার ভাজন ও নুরুল ইসলামের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও তাদের ইইই বিভাগে প্রভাষক পদে এবং ফুফাতো শ্যালক শাহরিয়ার ইসলামকে বিপিএড পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই নির্বাচনী বোর্ড ব্যতীতই গত ০৩/১১/২০২৪ তারিখে ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর পদে যোগদান করানো হয়। ভাইস-চেয়ারম্যান বিওটির অন্যান্য সদস্যদের নিকটাত্মীয়দের বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি করার বিষয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তমূলক বক্তব্য উত্থাপন করেছেন। কারণ তার অনুমোদন ব্যতীত কারোর চাকুরিতে যোগদান করা সম্ভব নয়।
ড. হালিমা খাতুনের আপন ভাই ও গৃহশিক্ষক হিসেবে মোঃ রমজান আলী সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক ও মিথ্যা বক্তব্য দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সঙ্কটের সময় আব্দুল খালেক বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা করায় বিওটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক চাকুরী ও অর্থ ফেরতের শর্তে তাকে চাকুরি দেওয়া হয়।
মোঃ রমজান আলী প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ পরীক্ষায় ভাইস-চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ভাইস-চেয়ারম্যান ও তার অনুগত প্রশাসনের মানসিক ও একাডেমিক অত্যাচার সইতে না পেরে রমজান প্রায় দেড় বছর আগেই চাকুরি ছেড়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সঙ্কটের সময় বিওটির সদস্য শেখ মোস্তাফিজর রহমানের আপন ভাই মোঃ শরিফুল ইসলাম আর্থিক সহায়তা করায় তাকে চাকুরি দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি অব্যাহতি নিয়েছেন। বিওটির সদস্য প্রফেসর ড. মাহবুব বিন শাহজাহান শুভর আপন ছোট ভাই রাসেল ইকবাল বিন শাহজাহান (সুজন) বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক সঙ্কটের সময় অর্থ সহায়তা করায় তাকে চাকুরি দেওয়া হয়েছিল। ভাইস-চেয়ারম্যানের বিশেষ অনুরোধে বিওটির সদস্য মোঃ মনিরুজ্জামানের ভাতিজা রকিবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের পূর্বে নামমাত্র সম্মানিতে ২/৩ মাস চাকুরি করেন। মনিরুজ্জামানের ভাগ্নে সাকিব কারো সুপারিশ ব্যতীত সম্পূর্ণ নিজের যোগ্যতায় রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি করেছেন। মোছাঃ জেসমীন আরা খাতুন মনিরুজ্জামানের কোন আত্মীয় নন। বরং জেসমীন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সঙ্কটের সময় বড় অঙ্কের টাকা সহায়তা করেছিলেন। সে অনুযায়ি বিওটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেসমীন আরা খাতুনের চাকুরি দেওয়া হয়। মেহেদী হাসান মনিরুজ্জামানের কোন আত্মীয়তা হয় না, এটা অপবাদমূলক বিভ্রান্তকর তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে । বিওটির সদস্য জুলফিকারের আত্মীয় প্রান্ত নিয়োগ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়। কারণ ভাইস-চেয়ারম্যান তাকে অনুরোধ করেন চা-কফি তৈরি করতে পারেন এ রকম স্মার্ট ছেলে খুঁজে দিতে হবে। সেই মোতাবেক জুলফিকার প্রান্তের বায়োডাটা জমা দেন। বিওটির ভাইস-চেয়ারম্যান নিজের অপরাধ ঢাকতে নিজের পরিবারের সদস্যদের চাকুরি প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ গোপন করে অন্যান্য বিওটি সম্পর্কে সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করেছেন।
বিওটির সদস্য জুলফিকার সম্পর্কে ভাইস-চেয়ারম্যান মিথ্যা, বানোয়াট ও উসকানীমূলক কথা বলেছেন। রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় কোন বাজার নয় যে দৈনন্দিন পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। তার মৌখিক নির্দেশে পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের বেতন গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করেছেন। জুলফিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠ পরিচালনার স্বার্থে মাঝে মাঝে ক্যাম্পাসে গিয়ে থাকেন কিন্তু কারো অনৈতিক সুবিধা দিতে পরীক্ষা হলে ডিউটি করেন না। তিনি নিজের মতো নির্দিষ্ট অফিস নির্ধারণ ও অফিস পরিচালনায় কোন স্টাফ ব্যবহার করেন না। বরং ভাইস-চেয়ারম্যান আমেরিকা যাবার পূর্বে তার অফিস কক্ষ কাউকে ব্যবহারের সুযোগ না দেবার উদ্দেশ্য সুপরিকল্পিতভাবে ভেঙ্গে ফেলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সম্পর্কে তার বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ফলিত পদার্থ বিজ্ঞানে ডিগ্রি প্রাপ্ত মোঃ সাইফুল হকের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রকাশনা না থাকলেও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সহকারি অধ্যাপক পদে সরাসরি যোগদান করান ভাইস চেয়ারম্যান। প্রফেসর মোহাম্মদ আলী বেসরকারি কুমারখালী কলেজে (বর্তমানে সরকারি কলেজ) ৩৬ বছর চাকুরী করেছেন, পরবর্তী ৮ বছর অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর হিসেবে চাকুরীকাল উল্লেখ করেছেন। বর্তমান রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত। সহযোগী অধ্যাপক হওয়া ব্যতীত ও প্রকাশনা ছাড়া কিভাবে অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়? অন্যদিকে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ব্যতীতই তাকে ট্রেজারার প্যানেলে নাম উপস্থান করা হয়েছে। এবং একাডেমিক শিক্ষকতা ব্যতীত মোঃ জাহিদুল আমীনকে কৃষি অনুষদের প্রফেসর ও ডিন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও অর্থ কমিটির সভা নেই’ এ বক্তব্যের মাধ্যমে ভাইস চেয়ারম্যান নিজের ও প্রশাসনের ব্যর্থতা স্বীকার করেছেন। কারণ বিধি মোতাবেক ভাইস-চ্যান্সেলরের আহবানে সিন্ডিকেট-একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ভিসি মহোদয়ের যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অর্থ কমিটিতে ড. শেখ মোস্তাফিজুর রহমান সভাপতি হিসেবে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের শুরুতেই অর্থ কমিটির সভা করেছেন। পরবর্তীতে অর্থ কমিটির আরেকটি সভা আহবান করতে চাইলে ভাইস-চ্যান্সেলরের অসহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। সুতরাং অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২৪ সালের এইচএসসি উত্তীর্ণদের সবংর্ধনা অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য মনিরুজ্জামানসহ কয়েকজন সদস্যদের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে ভাইস-চেয়ারম্যান দায়িত্বপ্রাপ্ত বিওটির সদস্যদের পাশ কাটিয়ে এককভাবে অনুগত প্রশাসন ও শিক্ষকদের নিয়ে অনুষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেন। সেসময় বিওটির সদস্য মনিরুজ্জামানসহ অন্যান্যরা এ বিষয়ের আহবায়ক ড. শহীদুর রহমানের সাথে কথা বলতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। ভাইস-চেয়ারম্যান ও তার অনুগত প্রশাসনের অশোভন আচার-আচরণ, অসংযত কথা-বার্তা প্রতিনিয়ত অপমান করায় বিওটি সদস্য, কর্মচারী ও শিক্ষক অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটি সদস্যদের নিয়ে প্রশাসনিক, আর্থিক ও একাডেমিক বিষয়ে তিনটি কমিটি থাকলেও বাস্তবায়ন নেই। ভাইস-চেয়ারম্যান কমিটির সাথে আলোচনা বাদেই স্বাধীনভাবে কাজ করে থাকেন। একাডেমিক কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. আবু সাঈদ মোহাম্মদ আলী সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রহমানের কাছে তথ্য চাইলে না দেখিয়ে সময় ক্ষেপণ করেন এবং পরে জানান এটা দেখার অধিকার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলীর নেই। প্রফেসর ড. শহীদুর রহমান ভাইস চেয়ারম্যানের মদদপুষ্ট হওয়ায় এমন ঔদ্ধত্য ও শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ করেন। অথচ ভাইস- চেয়ারম্যান তার অনুগত ড. শহীদুর রহমান সম্পর্কে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে মিথ্যা বক্তব্য উপস্থাপন করে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছেন।
বিওটির প্রথম ট্রাস্ট দলিলে ড. মোছাঃ ইসমত আরা খাতুন একজন বিওটির সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক ও রেজিস্ট্রার ভারপ্রাপ্ত। কিন্তু ইউজিসির বিধি অনুযায়ি বিওটির কোন সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনভুক্ত পদে থাকতে পারবেন না। বিষয়টি সাংঘর্ষিক হওয়ায় তিনি বিওটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং তার স্থলাভিষিক্ত মনোনীত হয় তার কন্যা। নিয়মানুযায়ি কোন বিওটি সদস্য পদত্যাগ করলে কিংবা কোন সদস্য নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত হলে পুনরায় দলিল নিবন্ধিত হতে হবে। কিন্তু পুনরায় দ্বিতীয় বার ট্রাস্ট দলিল নিবন্ধিত হয়নি। এবং পূর্বের ট্রাস্ট দলিল এখনো বহাল আছে। সুতরাং বিধি অনুযায়ি তিনি ভাইস চেয়ারম্যানের স্ত্রী বেআইনিভাবে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদে আছেন।
উল্লেখ্য গত ২২/০৮/২০১৯ তারিখে ট্রাস্ট মিটিংয়ের সপ্তম সভায় অতিরিক্ত প্রস্তাব নং ৮ এর সিদ্ধান্ত নং ৮ এর আলোচ্য সূচিতে বর্ণিত আছে- ড. মোছাঃ ইসমত আরা খাতুন মৌখিকভাবে জানান তিনি রেজিস্ট্রার ভারপ্রাপ্ত পদে কাজ করবেন না।
এতো অপকর্মের পরও ভাইস চেয়ারম্যান আমেরিকা বসে কলকাঠি নাড়ছেন তার দোসরদের মাধ্যমে। অবিলম্বে ভাইস চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবী করেছেন রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অধিকাংশ সদস্য।