সারা দেশ

ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন না ক্ষোভ থেকে

ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন না ক্ষোভ থেকে

এবার প্রার্থীদের প্রতি ক্ষোভ থেকে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতেই চাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এ কথা বলেন আলোচিত এই ইউটিউবার ও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের প্রার্থী। নির্বাচনী প্রচারণা ‍শুরুর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগীতা চেয়ে জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হিরো আলম।

হিরো আলম বাংলাদেশ কংগ্রেসের হয়ে ডাব প্রতীক নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এবারের নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মোট পাঁচ জন প্রতিদ্বন্দ্বি রয়েছেন।জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। হিরো আলম বলেন, ভোটার আমাকে বলছে সামনের বার তোমাকে ভোট দিলাম, কিন্তু পাস করতে পারলা না। এটা ভোটারদের মধ্যে একটা ভয় ঢুকে গেছে। আমাদের যে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী রয়েছে এবার ভোটারদের মধ্যে তাদের প্রতি ক্ষোভ জন্মেছে।

আমাদের আসনের এক প্রার্থীর ওপর রাগ থেকে আক্রমণ করেছে ভোটাররা। তারা ভোটকেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন না।‘ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে পারবে কিনা, আসলে ভোট দিতে পারবে কিনা, এজেন্টদের থাকতে দিবে কিনা। ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে চাইলে কতটা তাদের আসার মতো সুযোগ করে দিবেন। আমরা পুলিশের কাছে কতটা সহযোগীতা পাবো, এসব বিষয়ে জানার জন্য আজকে এখানে এসেছি।পুলিশের সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট কিনা এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন হিরো আলমের কাছে। উত্তরে তিনি বলেন, এটা তো ঠিক পুলিশ জনগণের বন্ধু।

জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে আজকে প্রথম দেখা। তাকে দেখে মনে হয়েছে সত্যিই তিনি দেশের ভালো চান। সহযোগীতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।কথার প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের এই প্রার্থী আরও বলেন, প্রার্থীরা যেমন ভোটের আগে অনেক আশ্বাষ দেন। কিন্তু ভোটের পরে তাদের আরখুঁজে পাওয়া যায় না। তেমনি নির্বাচনের সময় প্রার্থীদের পাশে থাকার অনেক আশ্বাস দেয় পুলিশ। কিন্তু ভোটের দিন যদি খুঁজে না পাই তখন অনেক কষ্ট লাগে।

তো আমরা যে ভোটের দিন খুঁজে পাই এ জন্য স্যারের (জেলা পুলিশ সুপার) কাছে এসেছি বলে জানান হিরো আলম।মনোনয়ন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তারপর আবার নির্বাচনে থাকলেন কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে হিরো আলম জানান, অনেকে বলেছেন টাকা খেয়ে হিরো আলম নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছে। কিন্তু হিরো আলম কারও কাছে টাকা খেয়ে নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন না।তার ভাষ্য, নির্বাচনে অনেকে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কেউ যেন ফাঁকা মাঠে গোল দিতে না পারেন এজন্যই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।

ঢাকায় ডিবির প্রধান ডিআইজি হারুন অর রশিদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বগুড়ায় জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আসার কারণ জানতে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে হিরো আলম বলেন, ঢাকার সাবজেক্ট ঢাকায়। বগুড়ার মধ্যে বগুড়ার স্যার আমাদের। সেকারণে তার দোয়া-আশীবার্দ দরকার আছে। এখানে কিছু হলে হারুন স্যার বাঁচাবেন না। এখানে বাঁচালে স্যার আছেন।বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের সরাসরি নির্দেশ দিয়েছে বগুড়ার ৫৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। তারা যে দলের হোক বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হোক না কেন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যেন ঠিক থাকে।

মাননীয় প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আজকে আমাদের এখানে এসেছেন। তিনি চান নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে যে ধরনের গনসংযোগ করা যায় সেসব কাজ তিনি নির্বিঘ্নে করতে চান। আর এ কাজে পুলিশের সহযোগীতা চান। আমরা যেটা বলতে চাই সকল প্রার্থী তাদের আচরণ বিধির মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণাকে সমর্থন করি। ভোটারদের সম্পৃক্ত করার মধ্যে দিয়ে চমৎকার একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।চলতি বছরের বগুড়ার ৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন হিরো আলম। তবে দুটি আসনেই পরাজয় হয় হিরো আলমের। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনেও অংশ নিয়েও পরাজিত হন তিনি। হারান জামানত।

এর আগেও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বগুড়া- ৪ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন হিরো আলম। যদিও পরে ‘অনিয়মের অভিযোগ তুলে’ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি বিক্রি এবং ডিশ সংযোগের ব্যবসা করেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিশ লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন। ইউটিউবে প্রায় ৫০০ মিউজিক ভিডিও ছাড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন হিরো আলম।