ভিন্ন স্বাদের খবর

যে শহরে মানুষের চেয়ে গাছের সংখ্যা বেশি

যে শহরে মানুষের চেয়ে গাছের সংখ্যা বেশি

যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ ইয়র্কশায়ারের বৃহত্তম শহর শেফিল্ড। নদী আর উপত্যকায় ঘেরা সবুজময় এক শান্তির শহর। অথচ এ শহরেই রয়েছে ৪২৫ টন ওজন ও ১২ হাজার হর্সপাওয়ারের রিভার ডন ইঞ্জিন। ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী একটি কার্যকরী স্টিম ইঞ্জিন থাকা সত্ত্বেও শেফিল্ড একটি শীতলতম শহর। যেখানে মানুষের চেয়ে গাছের সংখ্যা অনেক বেশি।

পাহাড়ঘেরা শেফিল্ডের আশপাশ ঘিরে রয়েছে সাতটি চূড়া ও সুদৃশ্য উপত্যকা। প্রাকৃতিক সেৌন্দর্য নিয়ে এখানে প্রবাহিত হচ্ছে ডন নদী ও এর চারটি উপনদী শেফ, রিভলিন, লক্সলে এবং পোর্টার ব্রুক। এ কারণেই ১২ শতকের প্রথম থেকে শত শত শিল্প কারখানা এখানে গড়ে ওঠে- যেগুলোতে শেফিল্ড কাটলারি ও ছুরি-ব্লেডের মতো ছোট ইস্পাতের উপকরণ উত্পাদন হয়ে আসছে।

এ কারণে শহরটির নাম হয়ে ওঠে ‘দ্য স্টিল সিটি’।শিল্পশহর হওয়া সত্ত্বেও কী করে শহরটি এখনো শীতল! শক্তিশালী ইন্ডাস্ট্রিয়াল পাওয়ার হাউসটিতে গ্রেট ব্রিটেনের সবুজতম শহরটির কেন্দ্রে রয়েছে ৬১ শতাংশ জুড়ে রয়েছে পার্ক, বনভূমি আর পরিকল্পিত দর্শনীয় বাগান। শহরজুড়ে সাড়ে পাঁচ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে রয়েছে ৪৫ লাখের বেশি গাছ। শহরটির এক পঞ্চমাংশ জুড়ে রয়েছে গাছেদের বসবাস।

শহরের প্রতি বাসিন্দার বিপরীতে রয়েছে কমপক্ষে ৮০টি গাছ। এ কারণে ২০২২ সালে শেফিল্ডকে বিশ্বের অন্যতম আন্তর্জাতিক ট্রি সিটি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, যুক্তরাজ্যের সবুজতম শহর হওয়ার পাশাপাশি শেফিল্ডকে অসলোর পরে ইউরোপের দ্বিতীয় সবুজ শহরের তকমা দিয়ে ইয়র্কশায়ারকে গৌরবান্বিত করেছে।

শহরটিতে রয়েছে ৮০০টি সবুজ স্থান, রয়েছে ১৫ মাইল এলাকাজুড়ে গাছবেষ্টিত একটি ওয়াকওয়ে রুট। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বেশকিছু জলাধার- যেগুলোতে হংসমিথুনের জলকেলি দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় দর্শনার্থীদের। অসংখ্যা শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠায় ১২ শতকের গোড়ার দিকে যে শহরটিকে মনে হয়েছিল সম্ভাব্যভাবে ইংল্যান্ডের উষ্ঞতম শহর, একবিংশ শতাব্দীতে এসে আশ্চর্যজনকভাবে এটি হয়ে উঠেছে শীতলতম সবুজ শহর।