ফজরের নামাজের সময় অনেকে মসজিদে গিয়ে দেখেন, জামাত শুরু হয়ে গেছে অথবা ইকামত চলছে। এক্ষেত্রে তারা দ্বিধা-দ্বন্ধে পড়ে যান সুন্নত পড়বেন কিনা? এই অবস্থায় তাদের দেখতে হবে সুন্নত পড়ে ফরজ নামাজের সময় ইমাম সাহেবকে কমপক্ষে দ্বিতীয় রাকাতে পাওয়ার সম্ভাবনা কতটা। যদি সম্ভব হয়, তাহলে সুন্নত পড়েই জামাতে শরিক হতে হবে।
এ প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এবং আবু দারদা (রা.)-এর মতো বিশিষ্ট সাহাবিদের থেকে বর্ণিত আছে, তারা ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে নিতেন। আবু দারদা (রা.) মসজিদে প্রবেশ করে মুসল্লিদের ফজরের জামাতে কাতারবদ্ধ পেলে মসজিদের এক কোণে সুন্নত পড়তেন।
অতপর জামাতে শরিক হতেন। (শরহু মায়ানিল আসার)তবে ইমাম সাহেবকে দ্বিতীয় রাকাতে পাওয়া না গেলে সুন্নত পড়া ছাড়াই জামাতে অংশ নেবে। এক্ষেত্রে পরে তা পড়ে নিতে হবে। কারণ, ফজরের দুই রাকাত সুন্নত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাদিস শরিফে যার প্রভূত ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে। এছাড়া এর প্রতি যতটা তাগিদ দেয়া হয়েছে, অন্য সুন্নতের ক্ষেত্রে ততটা দেয়া হয়নি।
এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা ফজরের সুন্নত ছেড়ে দিও না। এমনকি শত্রুবাহিনী তোমাদের তাড়া দিলেও। ’ (আবু দাউদ, হাদিস নং : ১২৫৮) আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ফজরের সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে, সেটির চেয়ে উত্তম। (মুসলিম, হাদিস নং : ৭২৫)
আরেক হাদিসে আছে, নবী (সা.) ফজরের দুই রাকাত সুন্নতে এত গুরুত্ব দিতেন যে, অন্য কোনও নফল বা সুন্নত নামাজে তত দিতেন না। (বুখারি, হাদিস নং : ১১৬৩; মুসলিম, হাদিস নং : ৭২৪)
তাই, ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলে যদি মুসল্লিদের সঙ্গে দ্বিতীয় রাকাত পাওয়া যায়, তাহলে সুন্নত পড়ে নিতে হবে। কিন্তু সেটা সম্ভব না হলে জামাতে শরিক হয়ে যাবে। আর সূর্যোদয়ের পর সুন্নত পড়ে নেবে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত পড়তে পারে না, সে যেন তা সূর্যোদয়ের পর পড়ে নেয়। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ৪২৩)
কোনও কোনও ফকিহ অবশ্য ইমামকে তাশাহহুদে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সুন্নত পড়ে নেয়ার কথা বলেছেন। তবে ওপরে উল্লেখিত কথাগুলোই অধিকাংশ ফকিহ’র অভিমত।
Like this:
Like Loading...