4 January 2025 , 6:26:10 প্রিন্ট সংস্করণ
মদিনার সনদে দেশ পরিচালনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহর সংবিধান সবাইকে সম অধিকার দিয়েছে। আধুনিক রাষ্ট্রের প্রথম সংবিধান হচ্ছে মদিনার সনদ। মদিনার সনদের এক থেকে পাচ নম্বর ধারা পর্যন্ত প্রত্যেকটি ধারায় মানুষের অধিকার সংরক্ষণের সনদ। সেখানে প্রত্যেকটি ধারায় বলা হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে কোন নাগরিকের অধিকার বিভক্ত করা যাবেনা। ইসলাম ধর্ম কারোর ওপর জুলুম করে চালানো যাবেনা পরিষ্কার ভাবে মাদিনার সনদে বর্ণিত আছে। তাতে বলা আছে, সকল ধর্মের নাগরিক নির্বিঘেœ ব্যবসা করতে দিতে হবে। বাইরে থেকে যদি আক্রমণ করা হয় মুসলমানদের দায়িত্ব হবে তাদের পক্ষ নিয়ে লড়াই করা। আমরা সেই বাংলাদেশ চাই।
শনিবার কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ মাঠে জেলা কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক মো. মোবারক হোসেন ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
কর্মী সম্মেলন শুরুর আগেই সম্মেলন স্থল কানায় কানায় ভরে যায়। কুয়াশায় ঢাকা শীতের সকালে কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে ভোর থেকেই খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে আসতে থাকে নেতাকর্মীরা। কর্মীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে কুষ্টিয়ার অলিগলি। কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ মাঠ জামায়াত কর্মীদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় সম্মেলন শুরুর আগেই। নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় কুষ্টিয়া শহর। দীর্ঘ ১৮ বছর পর কর্মী সম্মেলন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা যায় উৎসবের আমেজ। সম্মেলনস্থল ছাড়াও পাশ^বর্তী চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে প্রজেক্টর স্থাপন করে বক্তাদের বক্তব্য প্রদর্শণের ব্যবস্থা করা হয়।
কুষ্টিয়া জেলা আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি সুজা উদ্দিন জোয়ারদার ও পৌর আমীর মো. এনামুল হকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চেলের টিম সদস্য অধ্যক্ষ খন্দকার এ কে এম আলী মুহসিন, ড. আলমগীর বিশ^াস, মাওলানা আবদুল মতিন, ঝিনাইদহ জেলা আমীর আলী আজম মোহাম্মদ আবু বক্কর, পাবনা জেলা আমীর আবু তালেব মন্ডল, মেহেরপুর জেলা আমীর, তাজউদ্দিন খান, মাগুরা জেলা আমীর এবিএম বাকের, চুয়াডাঙ্গা জেলা আমীর এডভোকেট রুহুল আমীন, রাজবাড়ী জেলা আমীর এডভোকেট নুরুল ইসলাম, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইমরান হোসাইন ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী রবীন্দ্র নাথ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,কুষ্টিয়া জেলা নায়েবে আমীর আব্দুল গফুর, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মো. সোহরাব উদ্দিন, মো. খায়রুল ইসলাম রবিন, অধ্যাপক মাজহারুল হক মোমিন, কর্ম পরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসাইন, ছাত্র শিবিরের ইসলামী বিশ^ািবদ্যালয়ের সভাপতি মো. আবু মুসা, জেলা শহর সভাপতি হাফেজ সেলিম রেজা, মিরপুর উপজেলা আমীর মাওলানা খন্দকার রেজাউল করিম, দৌলতপুর উপজেলা আমীর মাওলানা বেলাল উদ্দিন, কুমারখালী উপজেলা আমীর আফতাব উদ্দিন, ভেড়ামারা উপজেলা আমীর মো. জালাল উদ্দিন, সদর উপজেলা আমীর মাওলানা শরিফুল ইসলাম, খোকসা উপজেলা আমীর মো. নজরুল ইসলাম, ইবি থানা আমীর মো. রফিকুল ইসলাম, পেশাজীবী থানা সভাপতি মাহবুবুর রহমার হামীম, শ্রমিক কল্যান সভাপতি এস এম মুহসিন প্রমূখ।
এর আগে মুফতি আমীর হামজার অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কর্মী সম্মেলন শূরু হয়। সম্মেলনে কিছুক্ষণ পর পর ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন জেলা সাংস্কৃতিক শিল্পীরা। সকাল ১১টার দিকে আমীরে জামায়াত মঞ্চে উঠেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন,বাংলাদেশের মাটি অত্যন্ত উর্বর সবুজ, মাটির গর্ভে অফুরন্ত সম্পদ। পানিতে আল্লাহ তায়াল অফুরন্ত সম্পদ রেখেছেন, এদেশের বাতাস অতি অনুকুল। না গরম না ঠান্ডা। ছোট এই দেশে বিপুল জনসংখ্যা দান করেছেন। জনগন সত্যিকার অর্থে জনশক্তি। যখন জনসংখ্যাকে প্রশিক্ষণ না দেওয়া হয় তখন জনসংখ্যা আপদে পরিণত হয়। আমরা জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করবো। এদেশ সকল ধর্মবর্ণের মানুষের।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে আমরা এমন একটা জাতি গড়বো; তখন ইনশা আল্লাহ এই দেশের মানুষ আর বিশে^ চাকরীর জন্য যাবে না। যেভাবে ১৭৫৭ সালের আগে বিশে^র মানুষ এদেশে আসতো চাকরীর জন্য। এই দেশ আবার তার পুরনো গৌরব ফিরে পাবে। আমরা স্ইে গৌরবটা ফিরিয়ে আনতে চাই।
তিনি বলেন ১৯৪৭ এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়েছিল। যারা অঙ্গিকার করেছিলেন জাতিকে অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার; তারা কেউ সে অধিকার ফিরিয়ে দেয়নি। কথা রাখেনি। তারা জাতির সঙ্গে বেইমানি করেছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতাকে নিজেদের বাপ-দাদার তালুক মনে করতেন। চেতনার কথা বলে তারা লুন্ঠন করেছেন। গণহত্যা চালিয়েছেন। তাদের সন্তানেরা আকাম কুকাম করে ধর্ষণের সেঞ্চুরি করেছেন। সাড়ে ১৫ বছরে তাদের লুন্ঠনের হিসেব বেরিয়েছে ২৬ লক্ষ কোটি টাকা।
তিনি উল্লেখ করেন, রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্র থেকে একটি প্রকল্প থেকে ৫৭ হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে। মেগা উন্নতির কথা বলে মেগা ডাকাতি করা হয়েছে। একটা পদ্মাব্রীজ তৈরি করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ করা হয়েছে তা দিয়ে ৪টা পদ্মাব্রীজ করা যেত। তারা আবার বড় কথা বলে। তারা লুট কওে বেগম পাড়ায় বাড়ি করেছে। এরা প্রত্যেকটা প্রকল্পে চুরি কেেছ। ব্যাংকগুলোকে ফোকলা করেছে। ডাকাত এস আলমকে লেলিয়ে দিয়ে ইসলামী ব্যাংক ডাকাতি করেছে কেষ রেহানা। শেখ হাসিন্রা বোনের মেয়ে লন্ডনের এমপি বানিয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি হয়েছিলেন মন্ত্রীও। এখন তিনি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। সেখানে দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এটা বাংলাদেশ এবং জাতির জন্য লজ্জার। আমাদেও লজ্জা হলে কি হবে। তাদের লজ্জা নাই। বাংলাদেশ ছিল তাদের ইনকাম সোর্সেও জায়গা। আর কলিজা ছিল অন্য দেশে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিদের সন্তান দেশে নেই। সবার ঠিকানা বেগম পাড়ায়। তারা দেশকে যদি ভালবাসতো তাহলে তারা দেশেই থাকতো।
শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে উল্লেখ করে আমীরে জামায়াত বলেন, শেষ করবে না কেন? তাদের সন্তানতো এদেশে লেখাপড়া করে না। তিলে তিলে শিক্ষাব্যবস্থাকে নষ্ট করে জাতির মেরুদন্ডকে ধ্বংস করে দিয়েছে। চাকরীপ্রার্থীরা কোটাজালে বন্দী; যা পৃথিবীর কোথাও নেই। বাকীটাও আওয়ামীলীগের দখলে। তাদের আনুগত্য না করলে কপালে তাও জুটবে না। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই আমাদের সন্তানেরা রাস্তায় নেমেছিল। তারা বলেছিল কোটা সংস্কার করো। বিলুপ্তি নয়। কিন্তু শেখ হাসিনা তাদের সাথে প্রতারণা করেছে আদালতের মাধ্যমে। তারা বুঝলো তাদের সাথে ধোকাবাজি করেছে। তারা ধারণা করেছিল। হেফাজতে ইসলামের অসংখ্য নেতাকর্মীকে খুন করেছিল। তেমনটা করতে পারেনি ছাত্রকে হজম করতে। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা বলছিল এই আন্দোলন দমন করতে কয়েক লক্ষ মানুষ মারতে হবে। দেখা গেল ক্ষমতার শেষ দিনও সেই চেষ্টা করেছিল। বলা হয়েছিল কয়েক কোটিও যদি হত্যা করতে হয় তাও তোমরা আন্দোলন দমন করো।
বাজারমূল্য মানুষের নাগালে আনার আহŸান জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেট বিভিন্ন জায়গাতে বসে আছে। কেউ কেঊ বলছে, পুরনো সিন্ডিকেটের জমিদারি নতুন জমিদারের হাতে চলে গেছে। আমাদেও হাতে আর এটা নাই। আমরা বাজারে নতুন কিংবা পুরাতন সিন্ডিকেট দেখতে চাই না। মানুষের ওপর এই জুলুম বনধ করতেই হবে। সরকার যদি উদ্যোগ নেয় , আমরা আমাদের সর্ব শস্তি দিয়ে সরকারকে সাহায্য করবো।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ দ্রব্যমূল্য সিন্ডিকেট করেছিল। আমরা সরকারকে বলেছি, এই সিন্ডিকেটের হাত ভেঙ্গে দিতে হবে। ১৮ কোটি মানুষের ওপর আর অর্থনৈতিক শোষন চালানো যাবে না। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আপনারা নামুন ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের সাথে নামবে ইনশা আল্লাহ। চাদাবাজির কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমীর বলেন, ৫ আগস্টের পর চাদাবাজি অব্যাহত রয়েছে। উপস্থিত জনতার কাছে তিনি জানতে চান যে, এখনো চাদাবাজি চললে এতগুলো জীবন দিয়ে কি লাভ হলো ? আপনারাকি আবার দেশে চাদাবাজি চলতে দিতে পারেন ? মাঠ থেকে জবাব আসে না না না। এই চাঁদাবাজ ও দখলদার মুক্ত বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই। জামায়াতের কর্মীরা চাঁদাবাজ এবং দখলদার নয়। আমরা সেই দল আমাদের শীর্ষ নেতাদের কাউকে দেওয়া হয়েছে ফাঁসি আর কাউকে জেলের ভেতরে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দিয়েছে। সর্বশেষ শিকার কোরআনের পাখি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
তিনি এমনটি করার জন্য আমাদের সন্তানেরা রক্ত দেয়নি। তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন ৩৪ হাজার মানুষ তারা জীবনের তরে পঙ্গু হয়ে গেছে। ৩শ’র বেশি মানুষ মেরুদন্ডে গুলির আঘাতে প্যারালাইজ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। জীবনে আর বসতে পারবে না। দাড়াতে পারবে না। নিজের হাতে নিজের কাজ করতে পারবে না। এমনকি নিজের হাতে আল্লাহর দেওয়া রিজক তুলে খেতে পারবে না।
আমরা আর এই দেশে মেজরিটি মাইনোরিটি শুনতে চাই না। আমাদের সংবিধান সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে। আল্লাহর সংবিধান সবাইকে সম অধিকার দিয়েছে। আধুনিক রাষ্ট্রের প্রথম সংবিধান হচ্ছে মদিনার সনদ। মদিনার সনদের এক থেকে পাচ নম্বও ধারা পর্যন্ত প্রত্যেকটি ধারায় মানুষের অধিকার সংরক্ষণের সনদ। সেখানে প্রত্যেকটি ধারায় বলা হয়েছে ধর্মেও ভিত্তিতে কোন নাগরিকের অধিকার বিভক্ত করা যাবে না। ইসলাম ধর্ম কারোর ওপর জুলুম করে চালানো যাবে না। পরিষ্কার ভাবে মাদিনার সনদে বর্ণিত আছে।
বলা আছে তাদের নির্বিঘেœ ব্যবসা করতে দিতে হবে। বাইরে থেকে যদি আক্রমণ করা হয় মুসলমানদের দায়িত্ব হবে তাদের পক্ষ নিয়ে লড়াই করা। আমরা সেই বাংলাদেশ চাই। সংখ্যালঘু ভাইদের বলি যারা সংখ্যা লঘু, মেজরিটি মাইনরিটির কথা বলে তারাই ৫৩ বছর আপনাদের কষ্ট দিয়েছে। আপনারা চিন্তা কওে দেখুন। আমাদের কেউ এই অপকর্ম করেনি। অথচ দোষ দেয় আমাদের ঘারে। কোথাও কিছু হলেই যত দোষ নন্দ ঘোষ। কিন্তু একটাও প্রমান করতে পারেনি। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে নারীদের অধিকার এবং সম্মান নিশ্চিত করবে। কউকে জোর করে বোরকা পড়াবে না। অন্য ধর্মের মা বোনরা তাদের মতো করে পোশাক পড়বে। বাধ্য করা হবে না। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে। এমন পরিবেশ হবে তাতে সবাই গর্ববোধ করবে।
আমরা সেই দেশের জন্য লড়াই করছি। বিশে^র বুকে একটি ঈর্ষনীয় দেশ হিসেবে মাথা উচু করে দাড়াবে। আর আমরা আমাদের ছাত্র সমাজকে কথা দিচ্ছি, তোমাদের হাতে এমন শিক্ষার মান তোমাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে যে, বেহুদা সার্টিফিকেট নিয়ে এদ্বারে ওদ্বারে ঘুরা লাগবে না। তোমাদের শিক্ষার পাঠ চুকিয়ে আসার সাথে সাথে ন্যায্য পাওনা বা কাজ তোমাদের হাতে উঠে যাবে। প্রত্যেক যুবক-যুবতির হাতকে আমরা দেশ গড়ার কারিগরের হাত হিসেবে গড়তে চাই। এমন একটা জাতি যখন তৈরি হবে তখন ইনশা আল্লাহ এই দেশের মানুষ আর বিশে^ চাকরীর জন্য যাবে না। যেভাবে ১৭৫৭ সালের আগে বিশে^ও মানুষ এদেশে আসতো চাকরীর জন্য। এই দেশ আবার তার পুরনো গৌরব ফিরে পাবে। আমরা স্ইে গৌরবটা ফিরিয়ে আনতে চাই।
তিনি আবার জনতার উদ্দেশ্যে বলেন এমন একটা দেশ কি চান ? উত্তরে আসে হ্যাঁ। আমরা এমন একটা দেশ চাই যে দেশে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি দখলদার দুর্নীতি থাকবে না। মানুষে মানুষে বৈষম্য ঘুস থাকবে না। বিশেষ করে ধর্মে ধর্মে বৈষম্য থাকবে না। জামায়াতের আমীর প্রস্তাবের জবাবে মাঠের সবাই নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে স¦াগত জানান।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আওয়ামী লীগের পলায়নের পর একজন বিচারপতিকে সিলেটের জঙ্গলে পাওয়া গেছে। তিনি ফাঁসি আদেশ দিয়ে টকশো’তে আস্ফালন করতেন। বলতেন ওমুককে ফাঁসি দিয়েছি। তারা তখন বিচারের নামে তামাশা করেছে। তারা অপরাধ করেছে। জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না। তিনি শেখ হাসিনার পরিণতির কথা উল্লেখ করে বলেন, ভাত রান্না করে খেতে পারেননি। না খেয়েই পালিয়েছেন। এখনো মানুষের জান-মালের ইজ্জতের নিরাপত্তার বিধান হয়নি। শেখ হাসিনা মামুবাড়ি পালিয়েছে তিনি আর ফিরবে না। দেশের মানুষ আর ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে দেবে না। দেশের মানুষ এবার জামায়াতকে ইসলামীকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। দেশে ইসলামের জোয়ার শুরু হয়েছে। সবদল দেখা শেষ জামায়াতে ইসলামীর বাংলাদেশ। এই ¯েøাগান উঠেছে সারাদেশে।
মো. মোবারক হোসেন বলেন, জামায়াত প্রতি জেলায় কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে জনগণকে আশ^স্ত করতে চায় অতীতের ৫৩ বছরে মানুষ যে বঞ্চিত হয়েছে, শোষিত হয়েছে,নির্যাতিত হয়েছে; ইসলামের ছায়াতলে এলে একটি কল্যানময় রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন জাতিকে দেখাচ্ছে। কোরআনের রাজ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। তিনি কুষ্টিয়াবাসীর কাছ থেকে কোরআনের রাজ কায়েমে কাজ করার অঙ্গিকার নেন।
অধ্যক্ষ মো.শাহাবুদ্দিন বলেন, আমরা ১৬ বছর রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি। আমাদের স্থান ছিল জেলখানা আর জঙ্গলে। আমাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জনগণ- ভোট চোর সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে।
তিনি ইতিহাস টেনে বলেন, ১৯৫৬ সালে কোরআনের সংবিধান চালু হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের যুক্তফ্রন্টেরর গর্ভণমেন্ট স্পিকার শাহেদ আলীকে হত্যা করেছিল। এই পরিবেশ বিঘিœত হওয়ার কারণে ১৯৫৮ সালে মার্শাল ল জারি করেছিল আইয়ুব খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা জামায়াতে ইসলামী করে নাই।
অধ্যক্ষ খন্দকার আলী মুহসিন বলেন, ফ্যাসিস্ট চোর সরকার কখনো মানুষের কল্যান সফলতা দিতে পারে না। তারা সবত্র চুরি করে দেশকে ধ্বংস করেছে। আগামিতে জনগন জামায়াতকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।
মাওলানা আব্দুল মতিন বলেন, কোরআনের আাইন চালু হলে সব মানুষ সুখ শান্তি কল্যান পাবে। জামায়াতে ইসলামী ভারতের গোলামি করতে চায়নি।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাসেম বলেন, কুষ্টিয়ার জনগণ বৈষম্যহীন দেশ গঠনের সঙ্গে আছে। কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে হলে কুষ্টিয়ার ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহŸান জানান তিনি। একইসাথে শীত উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করায় কুষ্টিয়াবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় আমীরে জামায়াত জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।