আন্তর্জাতিক

আবারও ফিলিস্তিনিদের উপর অত্যাচার বাড়ছে পশ্চিম তীরে

হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যেই পশ্চিম তীর থেকে উৎখাত হতে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। দেওয়া হচ্ছে হুমকিও। হালিমা খালিল পশ্চিম তীরের খিরবেত সুসিয়া গ্রামে থাকেন। তিনি জানান, সম্প্রতি মধ্যরাতে তাদের বাড়িতে হামলা হয়। পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাসিন্দারা তার বাড়িতে যায় এবং তার স্বামীকে মারধর করে।

কয়েকদিনের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়। একই সঙ্গে বলে দেওয়া হয় বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সময় নিজেদের হাতে বাড়িটি যেন ভেঙে দেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে এখন তারা কোথায় যাবেন, জানেন না অসহায় হালিমা। হালিমা একা নন, তাদের এলাকায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই একই ঘটনা ঘটেছে বলে সাংবাদিককে জানিয়েছেন তিনি।

প্রায় প্রতিদিনই তাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাড়িতে লুটপাট চলছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। অসহায় হয়ে সেটা দেখা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই এসব লোকজনের। হালিমা জানান, তার বোনের স্বামীকেও একইভাবে মারধর করা হয়েছে। ভয়ে বমি করে ফেলেছে তাদের সন্তান। এর আগেও গ্রামটির বাসিন্দাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

ইসরায়েলিরা তাদের উঠে যেতে বলেছে। কিন্তু গত ৭ অক্টোবর থেকে পরিস্থিতি দুঃসহ হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী। সেদিনই ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১২০০ লোক নিহত ও ২৩৯ জনকে বন্দী করে নিয়ে যায় হামাস। এরপর থেকেই হামাসের বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘাতে নামে ইসরায়েল।

তারপর থেকেই পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করেছে। সেখানে ফিলিস্তিনিদের ওপর অত্যাচার বেড়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই হুমকির মুখোমুখি হতে হচ্ছে হালিমাদের।বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, গত দেড় মাসে ১৬৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন পশ্চিম তীরে। ইসরায়েলি বাহিনী এসে তাদের হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া, স্থানীয় ইসরায়েলি বাসিন্দাদের মারধরে আটজনের মৃত্যু হয়েছে।জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৫টি বেদুইন ও চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠীর অন্তত এক হাজার ১৪৯ জনকে ঘর ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। নিজেদের হাতে গবাদি পশু হত্যা করতে হয়েছে। ভেঙে দিতে হয়েছে বাড়ি। স্থানীয় ইসরায়েলি বাসিন্দারা এই কাজ করতে বাধ্য করেছে তাদের।

স্থানীয় ইসরায়েলি বাসিন্দারা বাহিনী নিয়ে অত্যাচার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। তারা সঙ্গে করে বুল্ডোজার নিয়ে আসছে। ভেঙে দেওয়া হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের বাড়ি। এ পরিস্থিতিতে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা কোথায় যাবেন- সেটা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে।