সারা দেশ

মৃত্যুর মিছিল তাহিরপুর সীমান্তে বেড়েই চলেছে

সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্তে আইন আছে কিন্তু তা সঠিক ভাবে প্রয়োগ না করার কারণে একদিকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার অন্যদিকে সোর্স পরিচয়ধারী একাধিক মামলার আসামী ও তাদের গডফাদারের ফাঁদে পড়ে চোরাচালান করতে গিয়ে বেড়েই চলেছে মৃত্যুর মিছিল।রোববার (১২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার বালিয়াঘাট সীমান্তে অবস্থিত আর্ন্তজাতিক সীমানা পিলার ১১৯৭ সংলগ্ন চোরাই কয়লার গুহা থেকে নুরুল হক (২০) নামের এক কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী।

সে উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লাকমা পশ্চিমপাড় গ্রামের খালেক মিয়ার ছেলে।এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়- প্রতিদিনের মতো আজ রোববার (১২ নভেম্বর) ভোরে গডফাদার তোতলার নির্দেশে সোর্স পরিচয়ধারী একাধিক মামলার আসামী ইয়াবা কালাম মিয়া, হোসেন আলী, জিয়াউর রহমান জিয়া, মনির মিয়া, রতন মহলদার, কামরুল মিয়া, বাবুল মিয়া ও নেকবর আলী সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নাম ভাংগিয়ে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) কয়লা থেকে ৩শত টাকা করে চাঁদা নিয়ে শতশত লোককে অবৈধ ভাবে ভারতে পাঠায়।

অন্যদিকে একই ভাবে টেকেরঘাট ও চাঁনপুর সীমান্ত দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী আবু বক্কর, আলমগীর, জম্মত আলী, রফিকুল, শহিদ মিয়া, জামাল মিয়া, রুস্তম মিয়া, ফাইজু মিয়া, নুরজামালগং, বীরেন্দ্রনগর ও চারাগাঁও সীমান্তে রফ মিয়া, আইনাল মিয়া, সাইফুল মিয়া, আনোয়ার হোসেন বাবলু, শরাফত আলী, শামসুল মিয়া, খোকন মিয়া, লেংড়া জামাল, হযরত আলীগং, লাউড়গড় সীমান্তে সোর্স পরিচয়ধারী বায়েজিদ মিয়া, জসিম মিয়াগং রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারত থেকে কয়লা, পাথর, চিনি, সুপারী, কাঠ, বিড়ি, গরু, ছাগল ও মাদকদ্রব্যসহ কসমেটিকস পাচাঁর শুরু করে।

এমতাবস্থায় সকাল ৯টায় বালিয়াঘাট সীমান্তে অবস্থিত চোরাই গুহা থেকে কয়লা পাচাঁরের সময় কিশোর নুরুল হক মাটি চাপা পড়ে। পরে তার সাথে থাকা চোরাকারবারীরা দৌড়ে গুহার ভিতর থেকে বাহিরে আসে এবং এলাকাবাসীর সহযোগীতায় প্রায় ১ঘন্টা মাটি খুড়ে চেষ্টার পর সকাল ১০টায় কিশোর নুরুল হকের মৃতদেহ চোরাই কয়লার গুহা থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।এর আগে শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ৮টায় কয়লা পাচাঁরের সময় ওই সীমান্তে চোরাই গুহায় কিশোর সুমন মিয়া (১৭) কে মাটি খুড়ে উদ্ধার করে সকাল ৯টায় বাংলাদেশের অভ্যান্তরে নিয়ে আসে স্থানীয়রা। একই ভাবে গত ৫ই আগস্ট দুপুরে এই সীমান্তে কয়লা পাচাঁর করতে গিয়ে গুহায় পাথর

এছাড়াও গত ৩ আগস্ট ভোরে লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে পাথর পাচাঁরের সময় নৌকা ডুবে আব্দুল হাসিম (৩৫) ও গত ২৯ সেপ্টেম্ভর ভোরে কয়লা পাচাঁরের সময় বিএসএফের তাড়া খেয়ে নদীতে ডুবে শ্রমিক কাছম আলী (৬০) এর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। তারপরও সোর্স ও তাদের গডফাদারের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়নি।

এব্যাপারে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানী কারক আবুল বাশার খান বলেন- সীমান্ত চোরাকারকারীদের গডফাদার বাদাঘাট তার অন্দর মহলে বসে থেকে সোর্সদের দিয়ে কয়লা ও মাদক চোরাচালানসহ চাঁদাবাজি বাণিজ্য করছে। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত এই মৃত্যু কোন দিনও বন্ধ হবেনা। উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ক্রীড়া সম্পাদক ও বর্তমান মেম্মার কফিল উদ্দিন বলেন-গত ২বছর যাবত সীমান্ত দিয়ে ওপেন চোরাচালান হচ্ছে। এসবের প্রতিবাদ করার কারণে চোরাকারবারীরা আমাকে প্রাণনাসের হুমকি দিয়েছে। আমি থানা সাধারণ ডায়রি করেছি এব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগীতা প্রয়োজন।

তাহিরপুর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন বলেন- কয়লা পাচাঁর করতে গিয়ে ১জনের মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছি। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাহববুর রহমানের সরকারী মোবাইল নাম্বারে কল করার পর তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আরও খবর

Sponsered content