আন্তর্জাতিক

সত্তরেও তরুণ পুতিন ছড়ি ঘোরাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতিতে

৭০ বছর বয়সেও তারুণ্য ধরে রেখেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুধু তাই নয়, এই বয়সেও রীতিমতো ছড়ি ঘোরাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতিতে। এই পুতিনই এখন পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। এক নজরে দেখুন তার জীবনের আদ্যোপান্ত।

পুতিনের জীবনের প্রথম ভাগ

১৯৫২ সালের ৭ অক্টোবর পুতিনের জন্ম। আইন বিষয়ে পড়াশোনা করা এই নেতা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে যোগ দেন। এটাই মূলত তার কর্মজীবনের শুরু।১৯৯০ সালে লেলিনগ্রাদের মেয়র হিসেবে রাজনীতিতে পা রাখেন তিনি। তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার কারণে দুই দশক ধরে রাশিয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতা পুতিনের হাতে।

১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রথম ক্ষমতায় আসেন সাবেক এই গোয়েন্দা প্রধান। এরপর থেকে চার দফা প্রেসিডেন্ট আর একবার ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে ২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। আর ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও ক্ষমতার লাগাম ছিল তার হাতেই। আবারও ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টানা ক্ষমতায় রয়েছেন তিনি।

যদিও রুশ সংবিধান অনুযায়ী, আর প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ ছিল না পুতিনের। ওই সময় নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সংবিধানই পরিবর্তন করেন তিনি।

পুতিনের সাংসারিক জীবন

সংসার জীবনে খুব একটা সফল ছিলেন না পুতিন। ২০১৩ সালে পুতিনের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। অবসান হয় তাদের ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবনের। স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, পুতিন শুধুই কাজের মধ্যে ডুবে থাকতেন। কাজই ছিল তার নেশা।

পরিবারে তার ছোট মেয়ে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রশাসনে উচ্চপদে চাকরি করেন। আর বড় মেয়ে একজন শিক্ষাবিদ।এই রাজনীতিবিদের বাবা একটি কারখানায় কাজ করতেন এবং তার দাদা ছিলেন একজন বাবুর্চি। সেই পরিবার থেকেই আজ বিশ্ব শাসন করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

শরীরে নেই বয়সের ছাপ

৭০ বছর বয়সী সাবেক এই গোয়েন্দা শারীরিকভাবে এখনো দারুণ ফিট। শারীরিক কসরত বা খেলাধুলার জন্য বিভিন্ন সময় হয়েছেন খবরের শিরোনাম।

এখনো নিয়মিত জিম করেন মার্শাল আর্টে ব্ল্যাকবেল্টধারী এই নেতা। পশুপ্রেমি হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে পুতিনের। শখ হলেই চলে যান অবকাশ যাপনে। নেমে পড়েন মাছ শিকারে।

সবকিছু যেন প্রকাশ্যে করতেই বেশি ভালোবাসেন তিনি। তাই তো ক্যামেরার সামনে কখনো গ্লাইডারে চড়ে আকাশ ছুঁতে চেয়েছেন, আবার কখনো সবমেরিনে ডুব দিয়েছেন সাগরের গভীরে। এসব কর্মকাণ্ড পুতিনকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে বলে মনে করা হয়।

ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া পুতিন

তার বিরুদ্ধে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিরোধীদের দমন-পীড়নের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না রুশ নাগরিকরাও। যদিও বরারই তা নাকোচ করে আসছে পুতিন সরকার।

সম্প্রতি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে গুঞ্জন ছড়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পুতিন। তবে এসবকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো। বরং সমালোচকদের জবাব দিতে প্রায় প্রতি দিনই গণমাধ্যমের সামনে হাজির হচ্ছেন তিনি। এমনকি সেনাদের মনোবল চাঙ্গা করতে ছুটে যাচ্ছেন ইউক্রেনে যুদ্ধের ময়দানেও।

%d bloggers like this: