রাজনীতি

আন্দোলন কোন পথে যাবে সময়ই বলে দেবে বললেন মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমরা গত এক বছর ধরে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে ও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করছি। সরকারের কোনো ফাঁদে-উস্কানিতে আমরা এ পর্যন্ত পা দিইনি, ভবিষ্যতেও দেব না। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব, সময়ই আমাদের বলে দেবে- আমাদের আন্দোলন কোন পথে যাবে।

আজ শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক শিক্ষক মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে ও শিক্ষক-কর্মচারীর হয়রানি-নির্যাতনের প্রতিবাদে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের উদ্যোগে এই মহাসমাবেশ হয়। এতে সারা দেশ থেকে সহস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী নেতা অংশগ্রহণ করেন।

মঈন খান বলেন, আমরা আন্দোলন করছি গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা যখন রাজপথে অন্যায়ের প্রতিবাদ করি, আমাদের গুলি খেতে হয়। বিগত এক বছরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে আমাদের ২২টি জীবন চলে গেছে। যেহেতু আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাই, সে কারণে গত এক বছরে আমরা আন্দোলনকে গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ রেখেছি।তিনি বলেন, সরকার এক বছর যাবত আমাদের উস্কানি দিচ্ছে।

তারা বলছে, আমরা এক সেকেন্ডের জন্যও যদি শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করি, সরকার আমাদের দেখে নেবে। আমরা ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত শত শত প্রোগ্রাম করেছি। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি- কেউ দেখাতে পারবে না, আমরা এক সেকেন্ডের জন্যও বিশৃঙ্খলা করেছি। কারণ, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়া আমাদের সেই শিক্ষা দেননি। কোন শিক্ষা? লগি-বৈঠার রাজনীতির শিক্ষা আমাদের বিএনপিকে দেওয়া হয় নাই।

কাজেই সরকারের ফাঁদে-উস্কানিতে আমরা এখন পর্যন্ত পা দেইনি, আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব, সময়ই আমাদের বলে দেবে- আমাদের আন্দোলন কোন পথে যাবে।শিক্ষক-কর্মচারী নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে ড. মঈন খান বলেন, আপনারা প্রস্তুত থাকবেন। ইনশাল্লাহ চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আমরা এই সরকারকে সরিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার এনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করে মানুষের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। মানুষ যাকে চায় তারা সরকার গঠন করবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের সংবিধানে যে পাঁচটি মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিক্ষা। অথচ কী পরিতাপের বিষয়- বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫২ বছর পরেও সারা দেশ থেকে শিক্ষকদের এখানে এসে তাদের অধিকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করতে হচ্ছে। এটা শুধু আজকের সরকারের নয়, এটি রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। কেন আমাদের সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকার রক্ষিত হচ্ছে না? এই অধিকার অর্জনের জন্য শুধু এই সরকার নয়, আমরা যদি সংবিধানকেও পরিবর্তন করার প্রয়োজন মনে করি- আমরা সেটা করব। এর মধ্যে কোনো রকমের দ্বিমত থাকতে পারে না।

কেন আজকে শিক্ষকদের এসে চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানাতে হবে? আমরা দাবি জানাব, শিক্ষাকে জাতীয়করণ করার। তাহলে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ নিয়ে কোনো ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে না।ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে মঈন খান বলেন, তারা এই জাতিকে ধ্বংস করে দিতে চায়। সে কারণে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। শিক্ষক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং শিক্ষক সমিতির মহাসচিব জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুগিস উদ্দিন মাহমুদসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

আরও খবর

Sponsered content

%d bloggers like this: