আন্তর্জাতিক

মরক্কোয় ভূমিকম্পের আগে আকাশে রহস্যময় আলোর ঝলকানি

গেল শুক্রবার স্থানীয় সময় রাতে মরক্কোয় আঘাত হানে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্প। এই ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দুই হাজার ৯০০-তে দাঁড়িয়েছে। বহু মানুষ আহতও হয়েছেন।

মারাকেশের আশপাশের লোকেরা ভূমিকম্পের আগে রেকর্ড করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন, যাতে আকাশে আলোর ঝলকানি দেখা যায়।এই ধরনের আলোকে নাকি ‘ভূমিকম্পের আলো’ বলা হয় এবং ভূমিকম্প যেখানে আঘাত হানে, সেই স্থানের ওপরেই সাধারণ এটি দেখা যায়।

নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটির পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক ক্যারেন ড্যানিয়েলস বলেন, মানুষ চিরকালই এগুলো (আলো) সম্পর্কে বিস্মিত ছিল। এটি ওইসব রহস্যগুলোর একটি যা আমাদের চারপাশে ঘটে থাকে এবং কখনোই পুরোপুরি ধরা যায় না।ভূমিকম্পের আলো নিয়ে গবেষণা করা কঠিন, কারণ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব।

কখন বা কোথায় তা ঘটবে সেটি জানা যায় না। ফলে গবেষকরাও জানেন না কোথায় যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে হবে। এগুলোর সঙ্গে আদৌ ভূমিকম্পের কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কিছু বিশেষজ্ঞ।

তবে কয়েক শতাব্দী পেছনে গেলে এই আলোর বিবরণ নিয়ে কিছু তথ্য জানা যায় বলে জানিয়েছেন বোস্টন কলেজের সিসমোলজিস্ট অধ্যাপক জন এবেল, যিনি উত্তর-পূর্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভূমিকম্পের ইতিহাসের ওপর বই লিখেছেন।১৮, ১৯ এবং ২০ শতাব্দীতে ইউরোপ ও আমেরিকায় ঘটে যাওয়া ৬৫টি ভূমিকম্পে ধরনের বায়বীয় আলোর ঝলকানির রেকর্ড ২০১৪ সালে এক গবেষণায় দেখা যায়।

ভূমিকম্পের আগে আকাশের অনেক উপরে থেকে নিয়ে দিগন্তের নিচ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের আলোর কথা জানায় লোকেরা। এগুলো কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আবার কিছু কিছু আলো বিদ্যুতের ঝলকানির মতো জ্বলে-নেভে। এগুলো বিভিন্ন রঙেরো দেখা যায়।অধ্যাপক এবেল বলেন, কোনটি আসলে সত্য, এবং কোনটি লোকেদের কল্পনা, আমরা আসলে তা বলতে পারি না।

প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে এ ধরনের আলোর ঘটনা আরও প্রকাশ্যে আসছে। ড্যাশক্যাম, স্মার্টফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার আবির্ভাবের কারণে ভূমিকম্পের আলোর বিভিন্ন ভিডিও আরও প্রকাশ্যে আসছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মেক্সিকোর গুয়েরেরো শহরে ২০২১ সালের ভূমিকম্পের সময় এই ধরনের আলোর ভিডিওগুলো আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।