7 May 2024 , 8:54:06 প্রিন্ট সংস্করণ
গভীর রাতে প্রায় ২৩ লাখ টাকাসহ র্যাবের হাতে আটক পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আটকের ১২ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্প থেকে শাহীনসহ তার ১১ সহযোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ভোটারদের মধ্যে টাকা বিতরণ করার অভিযোগে ২২ লাখ ৮২ হাজার ৭শ টাকাসহ শাহীন ও তার ১১ সহযোগীকে আটক করা হয়।
আটকের পর মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান বলেন, সোমবার দিবাগত সাড়ে রাত ১২টার দিকে সুজানগর উপজেলার চর ভবানিপুর মুজিব বাঁধের ওপর থেকে তাদের আটক করে র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের টহল টিমের সদস্যরা।
কোম্পানি কমান্ডার আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজনের অংশ হিসেবে টহলরত অবস্থায় শাহিনুজ্জামান শাহীনসহ ১১ জনকে আটক করা হয়। এ সময় শাহীনের কাছ থেকে দুটি ব্যাগভর্তি ২২ লাখ ৮২ হাজার ৭শ টাকা জব্দ করা হয়েছে। টাকা বহনে ব্যবহৃত শাহীনের একটি গাড়িও জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, টাকাগুলো নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে শাহিনুজ্জামান শাহীন জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। আটকদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে, তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এদিকে শাহিনুজ্জামান শাহীনসহ ১১ জনের আটকের খবর প্রচার হওয়ার পর শাহীনের সমর্থকরা তার মুক্তির দাবিতে সুজানগর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। শাহীনকে মুক্তি দেওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত নেতাকর্মীরা সুজানগর থানার সামনে ও সুজানগর বাজারের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে মুক্তির খবর সেখানে পৌঁছালে তারা আনন্দে মেতে উঠেন।
শাহীনকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান জানান, আটকের পর আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। যেই টাকা জব্দ করা হয়েছিল সেটি নির্বাচনি ব্যয়ের সীমার মধ্যেই ছিল। জব্দকৃত টাকা ট্রেজারিতে জমা দেওয়া হয়েছে এবং শাহীনসহ সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেহেতু বিষয়টি হ্যান্ডেল করছেন। কাজেই পুরো বিষয়টি তারাই ভালো বলতে পারবেন। মুক্তি পাওয়ার পর শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, আমার নির্বাচনি সব ব্যয় পরিশোধের জন্য টাকাগুলো আনা হচ্ছিল। এটা কোনো অসৎ উপায়ের জন্য ব্যবহার হচ্ছিল না। সম্পূর্ণ বৈধ টাকা। আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিজয় ঠেকাতে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা শুরু থেকেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে।
এ ঘটনায় শাহীনের প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে রিং করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ৮ মে পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আনারস প্রতীকের শাহীনুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব (মোটরসাইকেল)।