জাতীয়

রোডমার্চ নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি

সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশের ১০ সাংগঠনিক বিভাগে রোডমার্চ করবে বিএনপির তিন অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠন। ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের এ কর্মসূচি আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর রংপুর থেকে শুরু হবে। শেষ হবে ঢাকায় সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে। প্রতিটি রোডমার্চে পথে পথে সমাবেশ হবে।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, রোডমার্চের বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গত শুক্র ও শনিবার স্কাইপিতে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিন সংগঠনের নেতারা গত শনিবার মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

এ কর্মসূচির বিষয়ে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘রোডমার্চের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি, আমরা দুই-এক দিনের মধ্যে আলোচনা করে তারিখ চূড়ান্ত করব। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে তা ঘোষণা করা হবে। তবে চলতি মাসেই রোডমার্চ শুরু হবে।দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম দফায় ছয় সাংগঠনিক বিভাগে রোডমার্চ হবে।

এতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। স্থায়ী কমিটি বা দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা এ কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ পাবেন কিনা, সে সিদ্ধান্ত গতকাল পর্যন্ত হয়নি।ছাত্রদলের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘এখন ঢাকাকেন্দ্রিক কর্মসূচি হওয়া প্রয়োজন। তা না করে বিভাগভিত্তিক রোডমার্চ করা যৌক্তিক নয়। বরং এতে করে তৃণমূলে নতুন করে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হবে, বহু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

দলের একাধিক সূত্র জানায়, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রোডমার্চ চলবে। এ জন্য রুটও নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর রংপুর থেকে সৈয়দপুর দশমাইল হয়ে দিনাজপুর; ১৭ সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে নওগাঁ হয়ে রাজশাহী; ২১ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট; ২৬ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ থেকে যশোর হয়ে খুলনা এবং ৩০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা, ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চ হবে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় বরিশাল, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে রোডমার্চ হবে। সবশেষ রোডমার্চ হবে ঢাকায়।আজ সোমবার রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে এই নিয়ে আলোচনা শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ছাত্রদলের সাবেক এক শীর্ষনেতা বলেন, গত জুন-জুলাইয়ে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল দেশের সব সাংগঠনিক বিভাগে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ করে। সেবার স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের তেমন গুরুত্ব না দেওয়ায় দলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। এবারও ঠিক একই কায়দায় রোডমার্চ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সাবেক ছাত্রদল নেতারা নিজেদের অবহেলিত মনে করেছেন। এ কারণে ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাবেক ছাত্রদল নেতারা।

বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘পরিবেশ-পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার নানাভাবে এই কর্মসূচিকে বাধা দিতে পারে। এই অবস্থায় যদি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকে, তা দ্রুত দূর করা না গেলে কর্মসূচি সফল করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আওয়ামী লীগকে রাজপথে মোকাবিলা করা না গেলে এই কর্মসূচি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করার চেয়ে মনোবলকে আরও দুর্বল করে দেবে।