10 September 2023 , 12:20:05 প্রিন্ট সংস্করণ
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় জান্নাতুল ফেরদৌস (১৮) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী সন্তান প্রসব করার পরে হাসপাতালের শয্যায় বসে পরীক্ষা দিয়েছেন।বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। এরআগে বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন জান্নাতুল।
জান্নাতুল ফেরদৌস শরীয়তপুর জেলা শহরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের ছাত্রী এবং পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাশাভোগ এলাকার সাঈদ খান অনিকের স্ত্রী।শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জান্নাতুল সন্তানসম্ভবা অবস্থায় চলতি এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
তার পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল শহরের সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পর তার প্রসব বেদনা ওঠে। ওইদিন রাতে স্বজনরা তাকে শহরের মেট্রো ক্লিনিকে ভর্তি করলে বুধবার সকালে জান্নাতুল একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন।
তবে বৃহস্পতিবার ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি পরীক্ষা থাকায় এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে পরীক্ষায় বসবেন তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন।তার স্বজনরা বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি হাসপাতালের শয্যায় পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
পরে বৃহস্পতিবার পরীক্ষা কেন্দ্রের নিয়মবিধি মেনে নিউ মেট্রো ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকের একটি কক্ষের চেয়ারে বসে পরীক্ষা দেন জান্নাতুল। পরীক্ষার সময়ে জান্নাতুলের সদ্যোজাত মেয়েটি তার নানুর কোলে ছিল।এ বিষয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস স্বর্ণা বলেন, ‘বাচ্চাকে পেটে নিয়ে কষ্ট করে পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। সন্তানের কথা ভেবেই পরীক্ষা দিলাম।
বিশেষভাবে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় জেলা প্রশাসককে অনেক ধন্যবাদ।জান্নাতুলের স্বামী সাঈদ খান অনিক বলেন, ‘শ্বশুরবাড়ি ও আমাদের পরিবারের সহযোগিতায় আমার স্ত্রী পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। সন্তান গর্ভে নিয়েই সে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিল। আমরা চাই ও লেখাপড়া চালিয়ে যাক।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, জান্নাতুল নামের ওই এইচএসসি পরীক্ষার্থী সন্তান প্রসব করার পরেই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা জানিয়ে আবেদন করেন। পরে জেলা প্রশাসক বিশেষ বিবেচনায় তার পড়াশোনা অক্ষুণ্ন রাখতে ক্লিনিকে বসেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেন। আমরা প্রত্যাশা করি জান্নাতুল তার জীবনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।