সারা দেশ

বরিশাল সংঘাতের আশঙ্কা প্রচারণার শুরুতেই উত্তপ্ত

বরিশাল সংঘাতের আশঙ্কা প্রচারণার শুরুতেই উত্তপ্ত

প্রচার-প্রচারণার শুরুতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বরিশাল-৫ আসন। এ আসনের নৌকার প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামীম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।রাতে নগরীর ৫নং ওয়ার্ড পলাশপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন গুরুত্বসহ উভয় পক্ষের ৭জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী রাব্বি জানান, আমরা সাদিক আব্দুল্লাহ অনুসারী। তার প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার খবর পেয়ে মিটিং করে বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন প্রতিপক্ষ হালিম গ্রুপের লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে স্বজনরা উদ্ধার করে অটোরিকশা করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পুনরায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটায়। এসময় তারা অটোরিকশা ভাঙচুর চালায় ও আমাদের একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়।

সাদিক ভাইয়ের নির্বাচন করি বলেই আমাদের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে। তিনজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। সাদিক অনুসারী মুন্নি আক্তার বলেন, সাদিক ভাই বিগত দিনে বরিশাল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিছে আমরা অনেক বছর ধরে তার কর্মী হিসেবে কাজ করি, আমাদের বার বার তারা ডাকতাছে যে ঈগল রাইখা নৌকায় আসো কিন্তু জাহিদ ফারুককে নৌকায় সমর্থন না দিয়ে সাদিক ভাইকে সমর্থন দেওয়ায় আমাদের উপর এমন হামলা করা হয়েছে। ভূইয়া সজিবের নেতৃত্বে হালিম, রবিউল, এনায়েত, বাবুসহ অনেকে এই হামলায় জড়িত ছিলো।

অন্যদিকে জাহিদ ফারুক শামীমের সমর্থক আনোয়ার হোসেন সালেক জানান, নৌকা মার্কার অফিস উদ্বোধন ও মিছিলে কিছু লোকদের দাওয়াত দিতে যাওয়ার পরে আমাদের ৫নং ওয়ার্ড নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হালিম ফকিরকে কিছু লোক গালাগালি করে এবং কিলঘুষি মারে। এরপরে সে থানায় অভিযোগ দিয়ে যখন বাসায় গেছে তখন তাকে কুপিয়ে হাতের একটি আংগুল ফেলে দেয়।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি এবং পরবর্তীতে মারামারির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে আহতে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় এখনও কোন পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেনি, ঘটনাটির বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে বরিশাল-৫ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহ ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ ফারুকের মধ্যে দ্বন্ধ রূপ নেয় প্রকাশ্যে। একসময় সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করলেও বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত বরিশাল আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

নির্বাচনে সাদিকের পক্ষের সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগ সহ বড় একটি অংশ কাজ করছেন, আর জাহিদ ফারুকের পক্ষে কাজ করছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বিগত দিনে কেউ কারো প্রকাশ্যে প্রতিদ্বন্ধি না হলেও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের অনুসারীরাই এখন একে অপরকে প্রতিদ্বন্ধি হিসেবে দেখছেন। আর এর ফলেই যেকোন সময় এ আসনে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।