রাজনীতি

অবরোধে ঢাকায় ১২ স্পটে জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকা চতুর্থ দফার অবরোধের প্রথম দিনে ১২টি স্পটে মিছিল ও পিকেটিং করেছে সংগঠনটির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ও উত্তর শাখা।রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে দলটির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রচার সহকারী মুহাম্মাদ সাইফ ও উত্তরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত আলাদা বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ কারাবন্দি সকল জাতীয় নেতার মুক্তির দাবিতে আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে অবরোধ পালন করছে দলটি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে রাজধানীর সেগুনবাগিচা মিছিল করেছে দলের নেতাকর্মীরা।

এ ছাড়াও নাজিম উদ্দিন রোডের চানখারপুল, বাংলামোটর, ডেমরা মহাসড়ক, যাত্রাবাড়ী, মুগদা কমলাপুর বিশ্বরোড এলাকায় মিছিল ও পিকেটিং করে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ।অপরদিকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য মুহাম্মদ জামাল উদ্দীনের নেতৃত্বে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় মিছিল করেছে উত্তরের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়াও উত্তরা, পল্লবী, হাতিরঝিল, বাড্ডা, মোহাম্মদপুর এলাকায় মিছিল ও পিকেটিং করে বলে জানা যায়।

মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ষড়যন্ত্রের তপশিল ঘোষণা জনগণ বানচাল করে দেবে। বিরোধী দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের জেলখানায় রেখে প্রহসনের নির্বাচনের জন্য তপশিল ঘোষণার সুযোগ দেওয়া হবে না। এ সরকারের এখনো বোধোদয় হয়নি। তাই তারা ষড়যন্ত্রের তপশিল ঘোষণা করতে চাচ্ছে। জনগণ তাদের এ ষড়যন্ত্র বানচাল করে সমুচিত জবাব দেবে।

তিনি বলেন, ভোট চোরদের বিরুদ্ধে আমাদের অবরোধ চলছে, চলবে। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তিনি অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান।এদিকে মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন বলেছেন, সেবাদাস ও বশংবদ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে মাফিয়া সরকার দেশে আবারও একতরফা নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার দিবাস্বপ্ন দেখছে। কিন্তু বীর জনতা সে ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসেছে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত জনতার এই অবরোধ অব্যাহত থাকবে।

তিনি সরকারকে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে তামাশা ও ভাঁওতাবাজির নির্বাচনের ষড়যন্ত্র বন্ধ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় একতরফা তপশিল ঘোষণার ষড়যন্ত্র জনগণ জীবন দিয়ে হলেও রুখে দেওয়ার ঘোষণা দেন।জামাল উদ্দীন বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে। অবাধ গণতন্ত্রের রক্ষাকবজ নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতিকে আদালতের দোহাই দিয়ে বাতিল করা হয়েছে।

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনকে ‘দলদাস’ কমিশনে পরিণত করা হয়েছে। বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে দেশের এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। ফলে দেশ একটি স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। জনগণকে তাদের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই জুলুমবাজ ও অগণতান্ত্রিক সরকারের পতনের কোনো বিকল্প নেই।