26 November 2025 , 9:45:48 প্রিন্ট সংস্করণ
কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ চলমান মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য শেষ হয়েছে। আদালত আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য দিন ঠিক করেছে; সেদিনই প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেলের সামনে রাষ্ট্রপক্ষ মামলার পটভূমি, কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনা, হামলার ধরন এবং আসামিদের ভূমিকা সম্পর্কে সারসংক্ষেপ তুলে ধরে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করে। প্রসিকিউশন অভিযোগ করেছে, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী সময়ের অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে কুষ্টিয়া শহরে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা, অনেককে আহত করা ও এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টির মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
মামলায় আসামি চারজন—মাহবুবউল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, জেলা সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী এবং কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, উসকানিমূলক বক্তব্য, পরিকল্পনা প্রণয়ন, হামলার নির্দেশনা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এই হত্যাকান্ড ও অন্যান্য অপরাধ সংঘটনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছেন তারা।
ট্রাইব্যুনাল-২ চলতি বছরের ২ নভেম্বর এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে এবং চার আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচারের আদেশ দেয়। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় পলাতক আসামি হিসেবে অনুপস্থিতিতেই বিচার চলছে। রাজনৈতিক ও ট্রাইব্যুনাল-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের দাবি, মাহবুবউল আলম হানিফ ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছেন, আতাউর রহমান আতা স্বপরিবারে মালয়েশিয়ায় পলাতক, আর সদর উদ্দিন খান ও আজগর আলী রাজধানী ঢাকায় আত্মগোপনে আছেন।
আদালত নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, প্রসিকিউশন পক্ষ এ মামলায় নিহতদের স্বজন, প্রত্যক্ষদর্শী, তদন্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসকসহ ৩০-৪০ জনের মতো সাক্ষী উপস্থাপন করার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছে। এদিকে জুলাইয়ের সহিংসতাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এও আরেকটি মামলায় রামপুরায় কর্নিশে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা আমির হোসেনকে গুলি করে হত্যা এবং আরও দুজনকে হত্যার অভিযোগে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে, যেখানে ইতোমধ্যে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মকর্তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।





