কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. শওকত হোসেন ভুঁইয়া বলেছে, এই বছর জেলায় ৫৩৪ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের চাষ হয়েছে। এই পিঁয়াজ চাষে ভাল ফলন পাবে কৃষকরা যা মাঠে এসে দেখা যাচ্ছে। আশা করি এই পিঁয়াজ চাষ করে কৃষকরা অনেক লাভবান হবে। আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও উপকরণ, কৃষককে সহায়তা করে থাকি। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষে কৃষকদের ভাগ্যবদল হচ্ছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমদানি নির্ভরশীলতা কমছে। সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের রাজাপুর মাঠে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের মাঠ পরিদর্শন কালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) টিপু সুলতান সপন, কুমারখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাইসুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এই সময় তারা গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের আবাদ দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। কৃষি অফিস বলছেন, কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় দেশে পেঁয়াজ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এ ফসল চাষে চাষীদের আগ্রহী করে তোলা এবং পেঁয়াজের চাহিদা মিটিয়ে তা বাইরে সরবরাহ করাই এর মূল লক্ষ্য। উপজেলায় এবার ১৭৪ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের জন্য ১১ শ’ কৃষককে উচ্চফলনশীল জাতের প্রয়োজনীয় পরিমাণ বীজ, সার ও অন্যান্য উপকরণ এবং পরিচর্যা বাবদ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাগণ প্রতিনিয়ত প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ মণ পিঁয়াজের আবাদ হচ্ছে। প্রতি কেজি পিঁয়াজ ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই কারণেই গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে অর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। পান্টি ইউনিয়নের রাজাপুর মাঠের কৃষক মহাসিন বলেন, অসময়ে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে লাভবান হওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয় এবং বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ২০ মণ পিঁয়াজ আবাদ হয়ে থাকে। খরচ – খরচা বাদ দিয়ে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করা সম্ভব। দিনে- দিনে আমাদের অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের আবাদ বাড়ছে। কুমারখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাইসুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ১১ শ’ কৃষককে প্রণোদনার মাধ্যমে ১৭৪ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের আবাদ হচ্ছে । প্রতি হেক্টরে জমিতে ২০ থেকে ২৫ টন পিঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। পেঁয়াজ ফসলটি হলো মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে অন্যতম। তরকারিতে এটি একটি উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়। স্থানীয় চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে কিছু পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। তাই আমদানিনির্ভরতা এড়াতে এবং পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মসলা চাষ সম্পূর্ণ এটি একটি সরকারি উদ্যোগ।