আন্তর্জাতিক

ভিয়েতনামে মৃত্যু বেড়ে ৬৫ সেতু বিধ্বস্ত

টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে ভিয়েতনামে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে ভূমিধস, বন্যা ও অন্যান্য ঘটনায় এ পর্যন্ত অন্তত ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে একটি নদীর সেতু ধসে পড়ে বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই ভূমিধস ও হড়কা বানে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭৫০ জন। নিহতদের মধ্যে এক বছর বয়সী একটি শিশু ও এক নবজাতক আছে।

ঝড়ো বাতাসের তোড়ে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে (স্থানীয় সময়) উত্তরাঞ্চলীয় ফু থো প্রদেশের লোহিত নদীর ফং চাউ সেতু ধসে পড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। গাড়ির ক্যামেরা দিয়ে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে সেতুর ভেঙে পড়ার মুহূর্তটি ধরা পড়েছে। তাতে বেশ কয়েকটি গাড়িকে নদীতে পড়ে ডুবে যেতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের সন্ধানে তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, বিভিন্ন ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। টাইফুন ইয়াগি ৩০ বছরের মধ্যে ভিয়েতনামে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়। চলতি বছরে এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়ও এটি। ইয়াগির কারণে দেশটির উত্তরাঞ্চল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে রয়েছেন।

ইয়াগি এখন দুর্বল হয়ে একটি ক্রান্তীয় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে এটি আরও দুর্যোগ ঘটাতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে। ভিয়েতনামের উপপ্রধানমন্ত্রী হাউ ডুক ফোক জানান, ফং চাউ সেতু বিধ্বস্ত হওয়ার সময় ১০টি গাড়ি ও দুটি স্কুটার নদীতে পড়ে যায়। একটি চলন্ত ট্রাক ধসে পড়া সেতুটির সঙ্গে নদীতে পড়ে যাচ্ছে এমন একটি মুহূর্ত ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।

ট্রাক চালক তার গাড়ি থামানোরও সময় পাননি। ঘটনার পর অন্তত তিনজনকে নদী থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার পাওয়া নিয়েন মিন হাই জানান, তিনি মোটরসাইকেলে করে সেতুটি পার হওয়ার সময় সেটি ধসে পড়ে। হাসপাতাল থেকে তিনি বলেন, পড়ে গিয়ে ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম আমি। আমি কোনো রকমে বেঁচে গেছি। আমি সাঁতার জানি না, মারা যাবো বলে ধরে নিয়েছিলাম।

৩০ বছর পুরনো ৩৭৫ মিটার (১২৩০ ফুট) সেতুটির এটি অংশ এখনও অক্ষত আছে। সরকার দেশটির সামরিক বাহিনীকে বাকি অংশে দ্রুত একটি পল্টুন সেতু তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে। ইয়াগি শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরে ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূল দিয়ে স্থলে উঠে আসে। তারপর থেকে প্রবল ঝড়ের কারণে দেশটির উত্তরাঞ্চলের শিল্প ও আবাসিক এলাকাগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইয়াগির প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি হতে থাকায় প্রাণঘাতী ভূমিধস ও বন্যা হচ্ছে। রয়টার্স জানিয়েছে, ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমা ছাপিয়ে গিয়ে বহু গ্রাম ও আবাসিক এলাকা ডুবিয়ে দিয়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের কারণে রাজধানী হ্যানয়সহ উত্তরাঞ্চলের ১২টি প্রদেশে স্কুল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।