জাতীয়

ডিএসই পরিচালক আল মাহমুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ

পদে থেকে বেআইনি এবং অনৈতিকভাবে শেয়ার লেনদেনের অভিযোগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রভাবশালী স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এ নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। নিদর্শনা অনুসারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার তদন্ত করে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) ব্যবস্থা নিতে হবে।

আর তদন্ত চলাকালীন সময়ে ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দায়িত্ব পালনে বিরত থাকবেন।প্রসঙ্গত, বিধি লঙ্ঘন করে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের শেয়ার লেনদেন নিয়ে গত ৬ জুন রিপোর্ট প্রকাশ করে। ব্যক্তিগতভাবে বেশিমাত্রায় লাভবান হওয়ার জন্য কারসাজিতে সহায়তা করেছেন। তিনি বিভিন্ন কারসাজিসহ বিভিন্ন কোম্পানির ১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছেন।

দীর্ঘ অনুসন্ধানে বিশদ তথ্যপ্রমাণসহ এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্টের এই অধ্যাপককে ডিএসইর পর্ষদে নিয়োগ দেয় বিএসইসি।অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব ফরিদা ইয়াসমিনের স্বাক্ষরিত মঙ্গলবারের চিঠিতে উল্লেখ করা হয় গত ৬ জুন যুগান্তরে প্রকাশিত ‘ডিএসইর পরিচালকই শেয়ার কারসাজিতে, রক্ষকই যখন ভক্ষক’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে।

তার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে এ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হলো।আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ডিএসইর পরিচালকই শেয়ার কারসাজিতে, রক্ষকই যখন ভক্ষক’ শিরোনামের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিধি লঙ্ঘন করে কারসাজির মাধ্যমে ৩টি বিও অ্যাকাউন্টে ১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছেন।আর এ কাজের মাধ্যমে তিনি তিনটি অপরাধ করেছেন মর্মে বলা হয়েছে।

প্রথমত, তিনি স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদে থেকে বেআইনি ও অনৈতিকভাবে শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, কারসাজির কারণে যেসব কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এর অধিকাংশের শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন এবং তৃতীয়ত, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তায় পর্ষদ ভেঙে যেসব কোম্পানি দখল করা হয়েছে, এর সবকটি থেকেই তিনি আগাম তথ্য জেনে শেয়ার লেনদেন করে লাভবান হয়েছেন।

প্রতিবেদনে পত্রিকাটি আরও উল্লেখ করে, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ডিএসইর পরিচালক পদে থাকার কারণে কোম্পানির গোপন সংবাদের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট তৈরি করেছেন এবং এর ফলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।চিঠিতে অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ২১ ধারামতে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এই স্বতন্ত্র পরিচালক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বোর্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) রেজুলেশন ২০২৩ এর ধারা ৮ (২) (এ), ৮(২)(বি), ৮(২)(ডি), ৮(৩)(১)-সহ বিএসইসি এবং ডিএসই এ কর্তৃক অনুসৃত অন্যান্য আইন, বিধি, প্রবিধি অথবা নির্দেশনা পরিপন্থি কোন কার্য করছেন কি না তা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

তদন্তের স্বার্থে তদন্ত চলাকালীন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অভিযুক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে স্বীয় কার্য থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা প্রদান করা।বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তদন্ত প্রতিবেদন মোতাবেক বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে অবহিত করবে।

আরও খবর

Sponsered content

%d bloggers like this: