লাইফ স্টাইল

পুরুষের শুক্রাণু কমছে যেসব কারণে

বিভিন্ন রাসায়নিকের কারণে বিশ্বব্যাপী পুরুষের শরীরে শুক্রাণুর সংখ্যা বা স্পার্ম রেট আশঙ্কাজনক হারে কমছে। বিগত ৫০ বছর ধরে পরিচালিত অন্তত ২৫টি গবেষণার সম্মিলিত ফলাফল বলছে, কীটনাশকের কারণে পুরুষের শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যাচ্ছে।ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্সে জর্জ মেসন ইউনিভার্সিটির কলেজ অফ পাবলিক হেলথের ডিন ও লেখক মেলিসা পেরির গবেষণার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের এমন তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণার ফলাফলের বিষয়ে গবেষক দলের প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের বোস্টনের নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বিভাগের গবেষক লরেন এলিস বলেন, কীটনাশক আমাদের পরিবেশের প্রায় সর্বত্রই ব্যবহৃত হয় এবং এ কারণে সেগুলো মানুষের শুক্রাণুর পরিমাণ ও প্রজনন স্বাস্থ্যকে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা বোঝা জরুরি।

কীটনাশক জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক বিষয়।এলিস ও তার সহযোগীরা এশিয়া, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং ইউরোপের অন্তত ১ হাজার ৭৭৪ জন পুরুষের ওপর গবেষণা চালান। তাদের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর বিভিন্ন ফসফেটের বিভিন্ন জৈব সার এবং মিথাইল কার্বামেটের বিভিন্ন যৌগ কী প্রভাব ফেলে তা জানার চেষ্টা করেন।

ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত এসব কীটনাশক বিভিন্ন এনজাইম সৃষ্টিতে বাধা দেয় এবং অ্যাসিটাইলকোলিনের মতো বিভিন্ন নিউরোট্রান্সমিটার বা স্নায়বিক বার্তাবাহকের (বিভিন্ন হরমোন) ধ্বংসের কারণ। এই অ্যাসিটাইলকোলিন মানুষের পেশি ও মস্তিষ্কের গঠন ও পরিচালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।মেলিসা পেরি আরও বলেন, বড় বা ছোট আকারের গবেষণা কোনো বিষয়ই না।

বাস্তবতা হলো- কীটনাশকের সঙ্গে পুরুষের শুক্রাণু কমে যাওয়ার বিষয়টি ক্রমেই বাড়ছে। তবে, এই গবেষণা থেকে জানা যায়নি যে, কীটনাশকের কারণে শুক্রাণুর গুণগত মানে কোনো পরিবর্তন আসছে কি না।এর আগে ২০১৭ সালে একাধিক চিকিৎসক হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সারা বিশ্বে পুরুষদের শরীরে যে হারে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তাতে পৃথিবী থেকে মানবজাতি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

তথ্য সংগ্রহের এই গবেষণা দলের প্রধান ড. হ্যাগাই লেভিন জানান, ভবিষ্যতে কী ঘটবে তা নিয়ে তিনি ‘খুবই উদ্বিগ্ন’। সেই তুলনামূলক গবেষণাটি করা হয় ১৯৭৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। এই সময়কালে করা ১৮৫টি গবেষণার তথ্যের ভিত্তিতে এই গবেষণা কাজটি করে ড. লেভিনের দল।

%d bloggers like this: