সারা দেশ

ব্রাহ্মণপাড়ায় নারীরা ফসল উৎপাদনে পিছিয়ে নেই

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার নারীরা গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি ধান, শীতকালীন সবজি ও রবিশস্য উৎপাদনের কাজে পুরুষের পাশাপাশি সমান অবদান রেখে চলেছে। বিশেষ করে বাড়ির পাশের পতিত জমি ও আঙিনায় শাকসবজি, ফলফলাদির আবাদ করে সংসারে বাড়তি রোজগারের পথ করে নিচ্ছেন তারা। এতে পরিবারের খরচ মেটানোর পাশাপাশি পরিবারের অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হচ্ছে। ফলে পরিবারে মিলছে সচ্ছলতার ছোঁয়া।

উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মাঠে দেখা কথা হয় কিষানি রোজিনা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার স্বামীর যৌথশ্রমে ২১ শতক জমিতে লালশাকের বিজ ফেলেছি। এতে আমার পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। লাল শাকের চারা বেড়ে উঠছে। এখন আগাছা পরিষ্কার করছি। এসব শাক বিক্রির উপযোগী হলে পারিবারিক চাহিদা মিটানোর পর অতিরিক্ত লালশাক বিক্রি করে লাভবান হব বলে আশা করছি।

চন্ডিপুর এলাকার কিষানি আমেনা বেগম বলেন, ‘ছোট থেকে আমাদের মা-চাচিদের দেখেছি বাড়ির আঙিনায়, ঘরের সামনে বিভিন্ন সবজির বীজ, আদা ও হলুদ লাগাতেন। সেগুলোতে আমরা ভাইবোনরা পরিচর্যা করতাম। আমরা ছোটবেলা থেকেই কৃষির সঙ্গে জড়িত। এখন নিজের সংসার হয়েছে, এখানে এসেও পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য টুকটাক বিভিন্ন সবজির চাষ করে আসছি। নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাড়তি সবজি বিক্রি করে আমার পরিবারের এক প্রকার বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহবুবুল হাসান বলেন, ‘ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রায় ৭২-৭৫ হাজার কৃষক পরিবার আছে। এসব পরিবারের নারীরাও কোনো না কোনোভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া এখানকার অনেক নারী নিজেরাই কৃষিতে সব মৌসুমে সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে চাষবাস করেছেন। আমরা তাদের বিভিন্ন সময়ে প্রণোদনার বিভিন্ন বীজ, সার ও বরাদ্দের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি। অনেক কিষানি তাদের বাড়ির আঙিনায় ও জমিতে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে পরিবারে আর্থিক চাহিদা পূরণ করছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক সুবিধাদি ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে কিষানিদের অগ্রাধিকার দেওয়াসহ আরও বেশকিছু পদক্ষেপ নিলে উন্নয়নের পথ সুগম হবে। নারীর ভাগ্যোন্নয়ন হলে নারীরা এ দেশের কৃষি উন্নয়নসহ অন্য সব উন্নয়নকে আরও বেগবান করতে পারবেন।