12 September 2024 , 6:23:43 প্রিন্ট সংস্করণ
পায়েলা দেখতে অনেকটা লাল আঙুরের মতো। তবে এর খোসা আঙুর থেকে মোটা। এক ধরনের মিষ্টি ফল পায়েলা। এই ফলটির ভেতর যত উপাদান রয়েছে তার মধ্যে ৬০ ভাগই আয়রন। পাকলে এর রং লালচে বেগুনী হয়ে যায়। ফলের অভ্যন্তরভাগে শাঁসের রং গোলাপী সাদা বা হালকা বাদামি। পায়েলার ইংরেজি নাম কফি প্লান্ট। আমাদের দেশে উৎপাদিত পায়েলার তিনটি জাত হলো- জ্যাংগমাস, ক্যাটাফ্রক্টা ও দেশি। পায়লা দিয়ে ভালো জুস তৈরি করা যায়।
পায়লা দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন, লুকলুকি, পেলাগোটা, প্যালা, ঝিটকি, পলাগোটা, টরফই, পানিয়ালা, পানি আমলা, পাইন্না, পাইন্যাগুলা, বেহুই ইত্যাদি। এই ফলটির গাছ নিচুভূমি এবং পাহাড়ি এলাকার বৃষ্টিবহুল অঞ্চলের ‘উইলো’ পরিবারভুক্ত। দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়াতে ব্যাপকভাবে চাষ হয় পায়েলার। আমাদের দেশে এর তেমনভাবে কোনো চাষ হয় না।
বনে জঙ্গলে পায়েলার গাছ জন্মে থাকে। এর গাছ কাঁটাযুক্ত। এই গাছে মার্চ-এপ্রিল মাসে ফুল আসে। ফল পাকে আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে। পায়েলা ফল পাকলে লালচে বেগুনী রঙের হয়। পাকা ফলের ভেতরটা বাদামি বা কালচে গোলাপী রঙের। খোসাসহ পুরো ফল খাওয়া যায়।
ফলটির পূর্ণ স্বাদ পেতে খাওয়ার আগে এটি আলতো করে চেপে চেপে তুলতুলে করে খেতে হয়। আমাদের শরীরের জন্য এই ফলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পায়েলায় রয়েছে শতকরা ৬০ ভাগ আয়রন। সালফার, ফসফেট ছাড়াও ১০ ভাগ রয়েছে ভিটামিন সি। অন্যান্য উপাদানও রয়েছে সমানভাবে।
এবার জেনে নেওয়া যাক পায়েলা ফলের গুণগুলো:
ওষুধি ফল হিসেবে পায়েলার কদর রয়েছে। এ ফল খেলে হজমশক্তি ও লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
হৃদরোগীদের জন্য এটি উপকারী, ভেষজ ওষুধের কাজ করে।
এই ফলের ভিটামিন সি খাবারে রুচি বাড়ায় এবং মুখের ক্ষত সারাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
পায়েলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট। যা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এসিডিটির সমস্যা থাকলে পায়েলা খেলে দ্রুত উপকার পাওয়া যাবে।
এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। শরীরে শক্তি যোগাতে পায়েলার গুরুত্ব অপরিসীম।
নিয়মিত এই ফল খেলে শরীরের বিষক্রিয়া পদার্থ বের করে দেয়।
এই গাছের পাতা ও ফল ডায়রিয়া রোগের প্রতিরোধক। শুকনো পাতা ব্রংকাইটিস রোগের জন্য বিশেষ উপকারী।
পায়েলা গাছের শিকড় দাঁতের ব্যাথা নিরাময়ে কাজ করে।
গর্ভবতী মহিলারা এই ফল খেলে আয়রনের ঘাটতি সহজেই মেটাতে পারবেন।