9 September 2024 , 2:41:03 প্রিন্ট সংস্করণ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম রাকিবুল আহসান, সাবেক মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদারসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ নেতাকর্মীর নামে হত্যা ও লুটতরাজ মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশীষ রায়ের আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে কলাপাড়া থানাকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার শাহাব উদ্দিন ও আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কাইউম এ আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ১৪ বছর আগে ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরও ২০-২৫ জন অজ্ঞাত আসামির কথা বলা হয়েছে। মামলার বিবরণে বলা হয়, হাসিনাবিরোধী আন্দোলন বন্ধ করার জন্য আসামিরা ২৪ অক্টোবর ২০১০ সালে পরিকল্পিতভাবে বাদীর ভাই পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদল নেতা ভিকটিম জিয়াউর রহমানকে হত্যার জন্য বেধড়ক কুপিয়ে জখম করে।
তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহবুবের বাসায় হত্যার পরিকল্পনা শেষে মাহবুব ও তার দলের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল আসামিদের কিলিং মিশনের জন্য অর্থায়ন করে। এতে আসামিরা ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাদীর বসতবাড়িতে ত্রাস সৃষ্টি করে বসতঘর থেকে ভিকটিম জিয়াকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক অপহরণ করে পাখিমারা বাজারে নিয়ে আসে। প্রভাবশালী ১-৪ নম্বর আসামির নির্দেশে আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিম জিয়ার হাত, পা, বুক, পিঠে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ও শরীরের হাড়গোড় ভেঙ্গে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে রাখে।
এরপর আসামিরা বাদীর বাড়ি থেকে ১৭টি গরু, মূল্য অনুমান ১০ লাখ এবং ১৬টি ছাগল, মূল্য অনুমান ১ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান। তবে অমানবিক নির্যাতনে দীর্ঘদিন চিকিৎসা গ্রহণ শেষে ভিকটিম বাড়িতে এসে মৃত্যুবরণ করে। এ ঘটনায় কলাপাড়া থানা পুলিশকে ভিকটিমের লাশ ময়নাতদন্ত করার জন্য অনুরোধ জানালে ১ নং আসামি মাহবুবের প্রভাবে পুলিশ এসে ভিকটিমের লাশ দ্রুত দাফনের জন্য চাপ প্রয়োগ করে।
থানা ও কোর্ট বাদীর মামলা নেয়নি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে নিরপেক্ষ সরকার থাকায় বাদী তার ভাইয়ের হত্যা ও লুটতরাজের বিচার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। কলাপাড়া থানার ওসি আলী আহম্মেদ বলেন, আদালতের আদেশ হাতে পেয়ে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।