লাইফ স্টাইল

বৃষ্টিতে কেমন জুতা নির্বাচন করা উচিত জেনেনিন

যখন-তখন বৃষ্টি হচ্ছে বিনা নোটিশে। যাদের নিয়মিত বাইরে বের হতে হয়, তাদের জন্য এটি মস্ত বড় এক বিড়ম্বনার মৌসুম। বর্ষাকাল মানেই দিনের যেকোনো সময় ঝুপঝাপ বৃষ্টি আর রাস্তায় জমাট বাঁধা কাদা-পানি। তবে যতই বৃষ্টি হোক না কেন, নগরবাসীদের কর্মস্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে বা যেকোনো প্রয়োজনে বের হওয়া থেকে নিস্তার নেই। বর্ষায় পরিধেয় সবকিছুর মধ্যে যে জিনিসটি সবচেয়ে চিন্তায় ফেলে তা হলো জুতা। এমন সময় জুতা হওয়া চাই আরামদায়ক। বৃষ্টি-কাদায় ভিজে যাতে নষ্ট না হয়,সেদিকেও খেয়াল রাখা জরুরি ।

বৃষ্টিবান্ধব বাহারি ডিজাইনের টেকসই জুতা এখন পাওয়া যায় বাজারে।অনেকসময় বৃষ্টির কবলে পড়ে নষ্ট হয়ে যায় শখের জুতা জোড়া। আবার চলার পথে কাদায় ভরা পিচ্ছিল রাস্তায় একটু মনোযোগ হারালেই ঘটতে পারে বড় রকমের বিপদ। তাই এ ঋতুতে জুতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়।

১. বর্ষায় জুতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু বুঝেশুনে জুতা বাছাই করতে হবে। যেহেতু বৃষ্টির পানিতে জুতা ভিজে যেতে পারে, তাই প্লাস্টিক বা রাবার উপাদান দ্বারা তৈরি জুতাই এ ঋতুতে বেশি উপযোগী। প্লাস্টিক বা রাবারের জুতা পড়ে যেমন স্বচ্ছন্দে হাঁটা যায়, তেমন বর্ষায় জুতায় কাদামাটি লেগে গেলেও তা পরিষ্কার করা সহজ হয়। এ ধরনের জুতা ধোয়ার পর দ্রুত শুকিয়ে যায়।

২. চামড়ার জুতা সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলতে হবে বর্ষাকালে। কারণ এতে জুতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পায়েও নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। বর্ষাকালের জন্য উপযুক্ত জুতা হলো পানিরোধী জুতা। বাজারে কিছু এমন ওয়াটারপ্রুফ জুতা পাওয়া যায় যেগুলো বিশেষভাবে বর্ষায় ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এ ধরনের জুতাগুলো পানিতে ভেজে চুপচুপে হয় না এবং সহজেই মুছে ফেলা যায়।

৩. জুতা কেনার সময়ই তা ভালোভাবে পরখ করে নিতে হবে। অনেকসময় জুতা থেকে পায়ে ফোসকা বা অন্যান্য সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া পায়ে পানি ঢুকলে তা যেন সহজে বের হয়ে যেতে পারে এবং বাতাস চলাচলে সহায়ক-এমন জুতা বর্ষাকালের জন্য ভালো। তবে সামনে খোলা ডিজাইন এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে জুতার ভেতরে কাদামাটি বা পানি ঢুকে যেতে পারে যা থেকে পরে ভাইরাস, ফাঙ্গাস ও চুলকানির মত সমস্যা হতে পারে।

৪. পোশাকের সাথে মিল রেখে এ মৌসুমে স্নিকার্সও পড়া যেতে পারে। পিচ্ছিল রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে অনেকসময় ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা থাকে সেক্ষেত্রে স্নিকার্স পায়ে থাকলে পিছলে যাওয়ার ভয় থাকে না এবং বৃষ্টির কাদাপানি থেকে পা সুরক্ষিত থাকে।তবে এমন স্নিকার্স বেছে নিতে হবে যা ভিজে গেলে দ্রুত শুকায়।

৫. বর্ষায় রাস্তায় জমা পানি ও কাদা পেরিয়ে হাঁটার জন্য জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও আদর্শ হলো ফ্ল্যাট জুতা। তবে ফ্ল্যাট হলেও জুতার সোলটি যেন বেশি পাতলা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা বেশি পাতলা সোলের জুতা যেমন স্লিপার্স, জুতা, চটি বা ব্যালেরিনা পাম্পস পড়লে রাস্তাঘাটে পিছলে পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। অল্প উচ্চতার ব্লক হিলস ধরনের জুতা এদিনে বেশ উপযোগী হতে পারে।

৬. বর্ষাকালে পলি-ফাইবার দিয়ে তৈরি জুতাও এড়িয়ে চলা উচিত। কেননা, সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত না করলে পলি-ফাইবার ত্বকে অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে।

৭. বর্ষাকালে কোনোমতেই উঁচু হিল জুতা পড়া ঠিক নয়। এতে পিচ্ছিল রাস্তায় পা পিছলে আলুর দম হওয়ার ভয় থাকে। অনেকসময় পানি জমে থাকে বলে রাস্তার কোথায় ভাঙা বা গর্ত আছে তা স্পষ্ট বোঝা যায় না। তখন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই বর্ষায় হিলস পরিহার করাই উত্তম।

৮. তবে যে জুতাই বাছাই করা হোক না কেন তা যেন হয় আরামদায়ক। বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় অনেকেই পা ঢাকা জুতা পড়তে পছন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে পেছনে বেল্ট দেওয়া জুতা পড়া যেতে পারে। এই ধরনের জুতা পা থেকে খুলে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে না এবং ছিড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।